মঙ্গলবার, ১৭ নভেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়া আলোচিত ম্যাচ আজ

রাশেদুর রহমান

বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়া আলোচিত ম্যাচ আজ

কঠোর নিরাপত্তায় গতকাল রাতে অস্ট্রেলিয়া ফুটবল দলকে বিমানবন্দর থেকে হোটেলে নিয়ে যাওয়া হয় রোহেত রাজীব

প্যারিস বলতে যেমন আইফেল টাওয়ার। তেমনি ক্রীড়াপাগল বাঙালির কাছে অস্ট্রেলিয়া মানেই ক্রিকেট, স্যার ডোনাল্ড ব্রাডম্যান, স্টিভ ওয়াহ, শেন ওয়ার্নসহ হাজারও নাম। অস্ট্রেলিয়া ফুটবল খেলে, বিশ্বকাপ ফুটবলের নিয়মিত সদস্য, কিংবা বর্তমান এশিয়ান চ্যাম্পিয়ন-এ নিয়ে খুব মাথাব্যথা ছিল না বাঙালির। কিন্তু দৃশ্যপট পাল্টে যাওয়ায় এখন বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনে সবচেয়ে আলোচিত ও আলোড়িত নাম অস্ট্রেলিয়া। নিরাপত্তার অজুহাতে ক্রিকেট খেলতে আসেনি অস্ট্রেলিয়া। একই অজুহাতে অস্ট্রেলিয়ান ফুটবল দল আসতে রাজি হচ্ছিল না বিশ্বকাপ ফুটবল ২০১৮ সালের বাছাইপর্ব খেলতে। সকারুদের (অস্ট্রেলিয়ান ফুটবল দলের ‘নিক নেম’) কাইকুঁইয়ে ম্যাচটি বাতিল হওয়ার পথে যখন হাঁটছিল, তখনই অভিভাবক হিসেবে পাশে দাঁড়ায় ফিফা। ফিফার ঐকান্তিক ইচ্ছা এবং বাংলাদেশ সরকারের সর্বোচ্চ নিরাপত্তার আশ্বাসে শেষ পর্যন্ত দেশের ফুটবল ইতিহাসে সবচেয়ে আলোচিত ম্যাচটি আজ বিকাল সাড়ে পাঁচটায় গড়াচ্ছে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে। গ্র“পের যে চালচিত্র, তাতে আজকের ম্যাচটি স্বাগতিকদের জন্য আনুষ্ঠানিকতার। আবার লজ্জা এড়ানোরও। বিপরীত চিত্র সকারুদের। বিশ্বকাপ ফুটবলে জায়গা নিতে এশিয়া অঞ্চলের শীর্ষ ১২ দলে সরাসরি সুযোগ পেতে জিততে হবে টিম কাহিলদের। এমন সমীকরণের ম্যাচে দুই দলের স্বপ্ন দুই রকম। তারপরও স্বাগতিকরা সুবিধা নিয়ে আজ জয়ের স্বপ্ন দেখছে বংলাদেশ। ১৬ কোটি ক্রীড়াপ্রেমিক বাঙঙ্গলিীকে স্বপ্ন দেখতে বলেছেন কোচ ফ্যাবিও লোপেজ। ‘অস্পৃশ্য’ জয়ের স্বপ্ন বুকে নিয়ে আজ ফুটবল লড়াইয়ে নামবেন মামনুলরা।    

নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম। কাহিলদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দিতে কাল দিনভর চিরুনি অভিযান চালিয়েছে নিরাপত্তা বাহিনী। নিরাপত্তার ফাঁকফোক গলে কোনো কিছুর ঢোকার জোঁ নেই স্টেডিয়ামে। এমন নিরাপত্তা বাংলাদেশের ফুটবল ইতিহাসে আর কখনো কোনো দলকে দেওয়া হয়নি। তারপরও অস্ট্রেলিয়া ঢাকায় এসেছে সিঙ্গাপুরে অনুশীলন করে। নিরাপত্তার মধ্যদিয়েই আজ গ্যালারিপূর্ণ দর্শক নিয়ে বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়া ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে বলে আশা করছেন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক আবু নাইম সোহাগ।

 

 

দিন কয়েক আগেই তাজিকিস্তান থেকে ৫-০ গোলেরর পরাজয় নিয়ে ঘরে ফিরেছে মামুনুলরা। তবে ভিন দেশের এ পরাজয়টাকে তেমন একটা গুরুত্ব দিচ্ছেন না কোচ ফ্যাবিও লোপেজ। তার মতে, ব্রাজিলের মতো দল জার্মানির কাছে সাত গোল হজম করতে পারলে আমাদের ফলাফলটাও স্বাভাবিকই। তিনি বরং, অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ম্যাচটা জিততেই শিষ্যদের মাঠে পাঠবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন। অবশ্য বাংলাদেশ দলের সহঅধিনায়ক জামাল বললেন, ড্র হলেও সন্তুষ্ট থাকবে বাংলাদেশ। জয়-পরাজয় নিয়ে বাংলাদেশের চেয়ে কিছুটা বেশিই মাথাব্যথা অস্ট্রেলিয়ার। বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের বি গ্রুপে পাঁচ ম্যাচ করে খেলে জর্ডান ১৩ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আর ১২ পয়েন্ট নিয়ে অস্ট্রেলিয়া দুই নম্বরে। তৃতীয় রাউন্ডে যেতে হলে অস্ট্রেলিয়াকে শীর্ষে যেতে হবে অথবা সেরা চার রানার্সআপ দলের মধ্যে থাকতে হবে। সেক্ষেত্রে অস্ট্রেলিয়া গোল ব্যবধানের দিকেও দৃষ্টি রাখবে। আজ বাংলাদেশকে অস্ট্রেলিয়ার এই উচ্চাকাক্সক্ষার প্রতিও লক্ষ্য রাখতে হবে। পার্থে এই অস্ট্রেলিয়ার কাছেই তো ৫-০ গোল হজম করতে হয়েছিল মামুনুলদের!

ফুটবল নিয়ে ভক্তদের মধ্যে উত্তেজনার কমতি নেই। ২৫ হাজার আসনধারী স্টেডিয়ামের অধিকাংশ টিকিটই নাকি বিক্রি হয়ে গেছে। এর অর্থ, আজ মাঠে নামতে পারে দর্শকদের ঢল। বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়া ম্যাচ নিয়ে বাড়তি উত্তেজনার কারণেরও তো শেষ নেই। একদিকে দেশের মাঠে এত বড় প্রতিপক্ষের সঙ্গে বাংলাদেশ কখনো খেলেনি। অস্ট্রেলিয়া এমন এক দল যারা ২০০৬ বিশ্বকাপে ইতালির মতো বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের আত্মাও কাঁপিয়ে দিয়েছিল। রাতে ঢাকা পৌঁছানোর কিছুক্ষণ পরই অস্ট্রেলিয়া ফুটবল দলের কোচ ইনজি পোস্টেক ও অধিনায়ক মাইল ইয়েদিনাক সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেন। তারা বলেন, ঢাকায় আসতে পেরে আমরা খুশি। বাংলাদেশ ঘরের মাঠে খেলবে তাই প্রতিপক্ষকে কোনোভাবে আমরা হালকা চোখে দেখছি না।

সর্বশেষ খবর