শুক্রবার, ২০ নভেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

সাফ ঘিরেই যত প্রস্তুতি

ক্রীড়া প্রতিবেদক

সাফ ঘিরেই যত প্রস্তুতি

বিপিএলে রংপুর রাইডার্সের কোচ শেন জার্গেনসন -ফাইল ফটো

মাঠেই ব্যস্ত রয়েছেন ফুটবলাররা। জানুয়ারি থেকে শুরু তারপর থেকে দম ফেলানোর সুযোগ পাচ্ছে না। ঘরোয়া ও আন্তর্জাতিক আসরে একের পর এক ম্যাচ খেলেই চলেছে। সত্যি বলতে কি বাংলাদেশের ফুটবলারদের কখনো এমন সময় যায়নি। আন্তর্জাতিক শিডিউলের কারণে স্বাধীনতা ও সুপার কাপ মাঠে নামানো যায়নি। অনেক দিন পর এবার সরাসরি বিশ্বকাপ বাছাই পর্ব খেলেছে। ৭ ম্যাচে ১ পয়েন্ট নিয়ে মামুনুলদের অবস্থান একেবারে নিচে। মার্চে আম্মানে জর্ডানের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে বাছাই পর্বের মিশন শেষ হবে। মঙ্গলবার অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে হোম ম্যাচ খেলে জাতীয় দল চীনে গেছে। ক্লাবভিত্তিক টুর্নামেন্ট হলেও জাতীয় দল পাঠানো হয়েছে। কারণ একটাই সাফ চ্যাম্পিয়নে নামার আগে মামুনুলরা নিজেদের ঝালাই করে নিতে পারবে।

বিশ্বকাপ বাছাই পর্ব বা চীনের টুর্নামেন্ট কোনোটি বাংলাদেশের কাছে তেমন গুরুত্ব নেই। গুরুত্ব একটাই সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ। আগামী মাসে ভারতের কেরালায় এ আসরের পর্দা উঠবে। সাফ ফুটবল সাফ অঞ্চলের বিশ্বকাপ বলেই খ্যাত। অথচ এখানেও বাংলাদেশ তেমনভাবে জ্বলে উঠতে পারছে না। ২০০৩ সালে ঢাকায় অনুষ্ঠিত আসরে চ্যাম্পিয়ন হয়। ব্যস্ এরপর শিরোপা ছুঁতে পারেনি। বাংলাদেশের জন্য মাত্র একবার শিরোপা জেতাটা বড় লজ্জাই বলা যায়। গত তিন আসরে অবস্থাতো আরও নাজুক। গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নিতে হয়েছে। আফগানিস্তান যেখানে ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করেছে সেখানে বাংলাদেশ পিছিয়ে যাচ্ছে।

আগে ফলাফল যায় হোক। কেরালায় এবার মামুনুলরা ঘুরে দাঁড়াতে চান। দায়িত্ব নেওয়ার পর কোচ ফ্যাবিও লোপেজও বলেছেন, আমার মূল লক্ষ্য সাফ চ্যাম্পিয়ন। টার্গেট আমার একটাই শিরোপা। অধিনায়ক মামুনুল ইসলাম বলেন, অতীত অতীতই। এবার আমরা দেশবাসীর মুখে হাসি ফোঁটাতে চাই। সাফে শিরোপা জেতাটা অসম্ভবের কিছু নয়। কিন্তু যোগ্যতা থাকার পরও সাফে চ্যাম্পিয়ন হওয়াটা যেন স্বপ্নে পরিণত হয়েছে। আগে অজুহাত দেখানো যেত পর‌্যাপ্ত প্রশিক্ষণের অভাবে ফলাফল ভালো হয়নি। এবার কিন্তু ভরাডুবির পরিচয় দিলে খেলোয়াড়দের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে। জানুয়ারি থেকে আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলছে। বিশ্বকাপ বাছাই পর্বে কিরগিজস্তান ও তাজিকিস্তান, জর্ডান ছাড়াও চারবার বিশ্বকাপ খেলা এশিয়ান চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা অর্জন করেছে। লোপেজই তাজিকিস্তানের বিপক্ষে অ্যাওয়ে ম্যাচে ৫-০ গোলে হারার পর বলেছিলেন, এই হারে কোনো যায় আসে না, খেলোয়াড়দের ভুলত্র“টি ধরা পড়ছে। যা সাফ চ্যাম্পিয়নে কাজে লাগানো যাবে।

ফুটবল ফেডারেশন ইচ্ছা করলেই ঢাকায় অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ম্যাচের পর খেলোয়াড়দের বিশ্রামে দিতে পারত। কিন্তু সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের কথা চিন্তা করে তা করেনি। কারণ চীনে টুর্নামেন্ট খেলাতে ভুলত্র“টিগুলো আরও খুঁজে বের করা যাবে। অতীতে যা হয়নি, মামুনুলরা এবার সেই সুযোগটি পাচ্ছেন। পুরো প্রস্তুতি নিয়েই কেরালায় যেতে পারবেন ফুটবলররা। কিন্তু যতই প্রস্তুতি হোক দেশবাসীর আশা পূরণ হবে কি? কেননা গ্রুপ পর্বেই লড়তে হবে ফেবারিট আফগানিস্তান, মালদ্বীপ ও ভুটানের বিপক্ষে। লোপেজ বলেছেন, লক্ষ্য যখন শিরোপা তখন গ্রুপ পর্ব নিয়ে ভাবার কিছু নেই। প্রতিটি ম্যাচ জিততে চাই। বাস্তবতা হচ্ছে সাফের কয়েকটি আসরে আফগানরা দুর্দান্ত খেলছেন। মালদ্বীপও জ্বলে ওঠার ক্ষমতা রাখে। আর ভুটানকেও তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করার উপায় নেই। কিছুদিন আগে ঢাকায় সাফ জুনিয়র ফুটবলে ভুটানের কাছে বাংলাদেশ প্রায় হেরেই বসেছিল। শেষ মুহূর্তে গোল শোধে মান রক্ষা হয়। সুতরাং গ্রুপ পর্ব থেকেই সতর্ক হয়ে খেলতে হবে। মামুনুলদের মনে রাখতে হবে এবার ব্যর্থতার পরিচয় দেওয়া মানে তিরস্কারে ভেসে যাওয়া। হয়তো ফুটবল ঘিরে যতটুকু আগ্রহ আছে তাও হারিয়ে ফেলবে দেশবাসী। সুতরাং এবারের সাফ মামুনুলদের জন্য অগ্নিপরীক্ষা বলা যায়।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর