সোমবার, ৭ ডিসেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

হঠাৎ নেতৃত্ব হারালেন মুশফিক

ক্রীড়া প্রতিবেদক

হঠাৎ নেতৃত্ব হারালেন মুশফিক

 

টস করতে নেমে অবাক বরিশাল বুলসের অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। বিস্মিত হন শহীদ আফ্রিদিকে মাঠে দেখে। কিছুই বুঝতে পারলেন না বরিশালের অধিনায়ক। সকালেও জানতেন প্রতিপক্ষ সিলেট সুপার স্টারসের অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম। মানসিক প্রস্তুতিও ছিল সতীর্থের সঙ্গে টস করার। অথচ টস করতে গিয়ে দেখলেন মুশফিক নন, প্রতিপক্ষের অধিনায়ক আফ্রিদি। শুধু মাহমুদুল্লাহই নন, মাঠে খেলা দেখতে আসা ১৫ হাজার দর্শকও বিস্মিত সিলেটের এমন সিদ্ধান্তে। এমন কেন হলো? সিলেটের কোচ সারওয়ার ইমরানের বক্তব্য, স্বেচ্ছায় সরে দাঁড়িয়েছেন মুশফিক। মিরপুরের বাতাসে কিন্তু অন্য গুঞ্জন। পারিশ্রমিক না পাওয়ার কথা বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলকে বলে দেওয়ার শাস্তি পেয়েছেন মুশফিক। খেসারত গুনেন অধিনায়কত্ব হারিয়ে। ক্ষিপ্ত ফ্র্যাঞ্চাইজি তাদের ক্ষোভ ঝাড়েন মুশফিকের কাছ থেকে নেতৃত্ব কেড়ে নিয়ে।

মুশফিকের কাছ থেকে নেতৃত্ব কেড়ে নেওয়ার ঘটনাই এই প্রথম নয়। ঘরোয়া ক্রিকেটে সকালে মাঠে এসে শুনেন তার অধিনায়কত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে। কষ্ট পেয়েছিলেন বলে কাউকে কিছু না বলে জবাব দিয়েছিলেন সেঞ্চুরি করে। কালও যখন নেতৃত্ব কেড়ে নেওয়া হয়, প্রতিবাদ করেননি। ব্যাটিংয়ে নামতে পারেননি বলে জবাব দিতে পারেননি। মুশফিক যে চরিত্রের ক্রিকেটার, নিশ্চিত ব্যাট হাতে তার জবাব দিবেন। তার নেতৃত্ব কেড়ে নেওয়ার বিষয়টি ভীষণ নাড়া দিয়েছে ক্রিকেটাঙ্গনে। নেপথ্যের কারণও খুঁজছেন সবাই। এটা নিশ্চিত, পারফরম্যান্সের জন্য তার অধিনায়কত্ব কেড়ে নেওয়া হয়নি। ৭ ম্যাচে ১১৭.৮৮ স্ট্রাইক রেটে ১৪৫ রানই তার প্রমাণ। 

প্লেয়ার্স বাই চয়েজের পর মুশফিককে পেয়ে সন্তুষ্টির কথা জানিয়েছিলেন সিলেট সুপার স্টারসের মালিকপক্ষ। বলেছিলেন, ‘যদি লটারি নাও হতো, তারপরও আমরা মুশফিককে নিতাম।’ অথচ সেই ফ্র্যাঞ্চাইজিই তাকে সরিয়ে দিল। যদিও ফ্র্যাঞ্চাইজি মালিক আজিমুল ইসলাম স্বীকার করেননি মুশফিককে অধিনায়কের অপসারণের বিষয়টি। এটা সত্যি, সে চাপ সামাল দিতে পারছিলেন না। মুশফিক যেখানে নিয়মিত টেস্ট ক্রিকেট খেলেন, ওয়ানডে ক্রিকেট খেলেন, সেখানে বিপিএলের মতো একটি টুর্নামেন্টের চাপ নিতে পারছেন না, এটা সত্যি হাস্যকর যুক্তি! ক্রিকেট বিশ্লেষকদের বক্তব্য কিন্তু অন্যরকম। তিন কিস্তিতে ক্রিকেটারদের পারিশ্রমিক পরিশোধের কথা ফ্র্যাঞ্চাইজিদের। প্রথম কিস্তিতে ৫০ শতাংশ এবং পরের দুই কিস্তিতে ২৫ শতাংশ করে ৫০ শতাংশ।   অথচ সিলেটের ক্রিকেটাররা পারিশ্রমিকের মাত্র ২৫ শতাংশ পেয়েছিলেন। মুশফিককে যে চেক দেওয়া হয়েছিল, সেটা বাউন্স করেছিল। যদিও পরে অর্থ পরিশোধ করা হয়েছে মুশফিককে এবং কালকের ম্যাচের আগে ক্রিকেটারদেরও অর্থ দেওয়া হয়েছে চুক্তির শর্ত অনুযায়ী। কিন্তু চেক বাউন্স হওয়ার কথা জানিয়ে দিয়েছিলেন মুশফিক। তাতেই ক্ষিপ্ত হন ফ্র্যাঞ্চাইজি। শুধু তাই নয়, ক্রিকেটাররা গত ৬ দিনের দৈনিক ভাতাও পাননি। আবার চট্টগ্রাম ধাপে হোটেলের বিল পরিশোধ না করায় সিলেটের গাড়ি আটকে রাখার মতো ঘটনাও ঘটেছিল। সিলেটের ফ্র্যাঞ্চাইজিদের বিপক্ষে শুধু মুশফিককে সরিয়ে দেওয়ার অভিযোগই নয়, প্রথম পর্বে চিটাগাং কিংসের বিপক্ষে ম্যাচে জাতীয় দলের ড্যাসিং ওপেনার তামিম ইকবালকে অশালীন ভাষায় গালি দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে। মুশফিককে সরিয়ে দেওয়ায় তোলপাড় ক্রিকেট পাড়া। কিন্তু সরিয়ে দেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেননি কোচ সারওয়ার ইমরান। মিডিয়ার মুখোমুখিতে বলেছেন, মুশফিক স্বেচ্ছায় নেতৃত্ব ছেড়েছেন।

 

সর্বশেষ খবর