মঙ্গলবার, ৮ ডিসেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

বাজছে যুব বিশ্বকাপের দামামা

মেজবাহ্-উল-হক

বাজছে যুব বিশ্বকাপের দামামা

বুড়ো হয়ে গেছি। আমি চাই এবারের যুব বিশ্বকাপের ট্রফিটা তোমরাই জিত— তাসকিন ও মুস্তাফিজের সামনে দাঁড়িয়ে একথাই কী বলছেন সাঙ্গাকারা —বাংলাদেশ প্রতিদিন

ফটোসেশনের সময় লঙ্কান লিজেন্ড কুমার সাঙ্গাকারাকে মাঝে দাঁড়াতে বলা হয়। দুই পাশে থাকবেন বাংলাদেশের দুই পেসার কাটার মাস্টার মুস্তাফিজুর রহমান ও গতি তারকা তাসকিন আহমেদ। ট্রফি থাকবে সাঙ্গার হাতে। কিন্তু লঙ্কান কিংবদন্তি রাজি হননি। ট্রেডমার্ক হাসি দিয়ে বললেন, ‘আমি তো এখন বুড়ো! আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়েছি। ওরা দুজনই তরুণ, ওদের হাতেই থাক ট্রফি।’

মঞ্চে ট্রফি হাতে মুস্তাফিজ, তাসকিন ও সাঙ্গাকারা মিলে সেলফিও তুললেন। তিন তারকা ক্রিকেটারের উপস্থিতিতে গতকাল রাজধানীর এক অভিজাত হোটেলে ঘোষণা করা হলো অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ ক্রিকেটের সূচি। সূচি ঘোষণার অনুষ্ঠানে ছিলেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন ও আইসিসির জেনারেল ম্যানেজার জেফ অ্যালারডাইস।

যুব বিশ্বকাপ সম্পর্কে সাঙ্গাকারা বলেন, ‘ক্রিকেটের ভবিষ্যত্ তারকাদের প্লাটফরম এটি। এখান থেকে খুঁজে পাওয়া যাবে আগামীর কিংবদন্তি।’ বর্তমান ১০ টেস্ট খেলুড়ে দলের অধিনায়কের মধ্যে ৯ জনই উঠে এসেছেন অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ থেকে। মুস্তাফিজুর রহমান, তাসকিন আহমেদও এসেছেন এখান থেকেই। ২০০৪ সালের পর বাংলাদেশ দ্বিতীয়বারের মতো আয়োজক হতে চলেছে যুব বিশ্বকাপের। বাংলাদেশের তরুণ ক্রিকেটারদের জন্য এটা সেরা সুযোগ বলে মনে করেন তাসকিন। তিনি বলেন, ‘এই বিশ্বকাপ আয়োজনের মধ্য দিয়ে তরুণদের মধ্যে সাড়া পড়ে যাবে। এটা বাংলাদেশের জন্য বিশেষ কিছু।’

মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘আগের আসরেই আমি এই বিশ্বকাপে খেলেছি। এখনো আমার বেশ কয়েকজন সতীর্থ আছে বাংলাদেশ দলে। মেহেদী-মিরাজরা ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারে।’

জাতীয় দলের টেস্ট অধিনায়ক মুশফিকুর রহিমের কাছে যুব বিশ্বকাপ সিনিয়র লেভেলে ড্রেস রিহার্সেলের মতো। তিনি নিজেও ২০০৬ সালের বিশ্বকাপে অংশ নিয়েছেন। মুশফিক বলেন, ‘যুব বিশ্বকাপকে বলা হয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলোয়াড়দের মূল ভিত্তি। আপনি এখান থেকে ভবিষ্যতের একটি চিত্র দেখতে পারবেন। আমি ২০০৬ সালে শ্রীলঙ্কায় এই আসরে অংশ নিয়েছিলাম। এরপর যখন ২০০৭ সালে বিশ্বকাপে খেলি তখনই বুঝতে পারি যুব বিশ্বকাপের গুরুত্বটা।’

আইসিসির জেনারেল ম্যানেজার জেফ অ্যালারডাইস বলেন, ‘আইসিসির অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপ এমন এক আসর যা প্রতিভাবান ক্রিকেটারদের শুরু থেকেই বিশ্বমানের ক্রিকেট খেলার জন্য প্রস্তুত করে। অসংখ্য ক্রিকেটার এই আসরের মধ্য দিয়ে উঠে এসে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রতিভার ছাপ রেখেছেন।’

আয়োজক হিসেবে বাংলাদেশের মূল্যায়ন করতে গিয়ে অ্যালারডাইস বলেন, ‘বাংলাদেশ এর আগেও বেশ কিছু আন্তর্জাতিক ক্রিকেট টুর্নামেন্ট সফলভাবে আয়োজন করেছে। এখানকার মানুষের ক্রিকেট ভক্তির কথা কারও অজানা নয়।’ 

ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট ও কক্সবাজার এই চার শহরের আট ভেন্যুতে খেলা হবে। আগামী বছরের ২৭ জানুয়ারি চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ মুখোমুখি হবে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন দক্ষিণ আফ্রিকার। টুর্নামেন্টের ফাইনাল ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে ১৪ ফেব্রুয়ারি মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে। ১৯ দিনের এই টুর্নামেন্টে মোট ম্যাচ হবে ৪৮টি। এবারই প্রথমবারের মতো টুর্নামেন্টের ২০টি ম্যাচ সরাসরি টেলিভিশনে দেখানোর ব্যবস্থা করেছে আইসিসি।

 মোট ১৬টি দল চার গ্রুপে লড়াই করবে। ১০টি টেস্ট খেলুড়ে দেশের সঙ্গে আইসিসির অ্যাসোসিয়েট ও অ্যাফিলিয়েট সদস্য ছয় দেশ। দক্ষিণ আফ্রিকা ছাড়া বাংলাদেশের গ্রুপে বাকি দুই দল হচ্ছে স্কটল্যান্ড ও নামিবিয়া। প্রতিটি গ্রুপ থেকে শীর্ষ দুই দল সুপার লিগে অংশ নেবে আর নিচের দুই দল অংশ নেবে প্লেট চ্যাম্পিয়নশিপে। বিসিবি সভাপতি বলেন, অস্ট্রেলিয়া যুব বিশ্বকাপেও বাংলাদেশে আসতে আইসিসির কাছে আপত্তি জানাতে পারে। হয়তো তাদের দেখাদেখি আরও দু-তিনটি দেশও আপত্তি তুলবে। কিন্তু বাংলাদেশ আসর সুষ্ঠু আয়োজনের সব ধরনের নিরাপত্তা দেবে। তাই আশা করি যুব বিশ্বকাপে কেউ খেলতে আপত্তি তুলবে না।

গ্রুপ পর্বে বাংলাদেশের প্রথম ম্যাচ চট্টগ্রামের অনুষ্ঠিত হওয়ার পর দ্বিতীয় ও তৃতীয় ম্যাচটি হবে কক্সবাজারে। ৩১ জানুয়ারি যুব টাইগার স্কটল্যান্ডের মুখোমুখি হবে। ২ ফেব্রুয়ারি খেলবে নামিবিয়ার বিরুদ্ধে।

সর্বশেষ খবর