শুক্রবার, ১১ ডিসেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

উজ্জ্বল গেইল, ব্যর্থ আফ্রিদি

ক্রীড়া প্রতিবেদক

উজ্জ্বল গেইল, ব্যর্থ আফ্রিদি

গেইল

সেরা চারে খেলতে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সকে হারাতেই হতো সিলেট সুপার স্টারসকে। রান রেটে ঢাকা ডাইনামাইটসকে পেছনে ফেলতে শুধু জিতলেই হতো না, সিলেটকে কাল ১৫১ রান টপকাতে হতো মাত্র ১০.১ ওভারে। কিন্তু সেই পরিকল্পনায় হাঁটেনি সিলেট। দলের প্রয়োজনে ওপেন না করে ছয় নম্বরেই ব্যাট করেন ‘বুম বুম’ শহিদ আফ্রিদি। এতেই পরিষ্কার অপরিকল্পিত ক্রিকেটের কথা। পরিকল্পনাহীনতার সঙ্গে ক্রিকেটারদেরও কোনো আগ্রহ দেখা যায়নি কাল জয় পেতে। অথচ আফ্রিদি, রবি বোপারাদের মতো বিদেশি ‘বিশেষজ্ঞ’ ক্রিকেটার ছিলেন দলে। কিন্তু বিদেশিরা জ্বলে উঠতে না পারায় এখন দলটির ঠাঁই দর্শকের কাতারে। সিলেট পুরোপুরি নির্ভর বিদেশিদের উপর। বিদেশি ক্রিকেটারদের উপর অতিরিক্ত নির্ভরশীলতায় একই পরিণতি হয়েছে তামিম ইকবালের চিটাগাং ভাইকিংসেরও। বিদেশি ক্রিকেটার থাকা সত্ত্বে ও দেশীয়দের প্রাধান্য দিয়ে সেরা চারে জায়গা নিয়েছে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স, রংপুর রাইডার্স, বরিশাল বুলস ও ঢাকা। প্রায় অর্ধশত বিদেশি ক্রিকেটার খেলেছেন এবার বিপিএলে। কিন্তু তারার মতো জ্বলজ্বল করেছেন সাঙ্গাকারা, ক্রিস গেইল, এভিন লুইস, তিলকরতেœ দিলশান, মোহাম্মদ আমির, কেভিন কুপারদের মতো হাতে গোনা কয়েকজন। ব্যর্থ আফ্রিদি, উমর আকমল, সাঈদ আজমল, থিসারা পেরেরা, সোহেল তানভীর, মোহাম্মদ হাফিজরা। আফ্রিদিদের ব্যাট ও বলে জ্বলে না উঠার কারণ যে পারিশ্রমিক, কাল মিডিয়ার মুখোমুখিতে তারই ইঙ্গিত দিয়েছেন পাকিস্তানের টি-২০ অধিনায়ক।

ক্যারিবীয় ‘ক্রিকেট দানব’ গেইল খেলছেন বরিশালের পক্ষে। গ্রুপ পর্বের প্রথম ৬ ম্যাচ খেলেননি। শেষ পর্বে খেলতে নেমে প্রথম দুই ম্যাচে মাথা নিচু করেই মাঠ ছেড়েছেন। কিন্তু দলের প্রয়োজনে চিটাগাং ভাইকিংসের বিপক্ষে ৯২ রানের টর্নেডো ইনিংস খেলেন মাত্র ৪৭ বলে। যাতে ছিল ৯টি বিশাল ছক্কা। ম্যাচ প্রতি ৩৫ হাজার ডলার পারিশ্রমিকের গেইল আসরের সবচেয়ে তারকা গেইল। দলের পারফরম্যান্স ভালো মাঝারি, কিন্তু জ্বলজ্বলে সাঙ্গাকারা। ঢাকার পক্ষে ৯ ম্যাচে রান ৩৩৯, যা আসরের সর্বোচ্চ। সেরা চারে জায়গা নিতে পারেনি চিটাগাং। অথচ তিলকরতেœ দিলশান ঠিকই উজ্জ্বল। ১০ ম্যাচে ১৩৩.৩৩ স্ট্রাইক রেটে রান করেন ২৬০। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের পক্ষে পাকিস্তানের আহমেদ শেহজাদ ৫ ম্যাচে করেন ১৭৪ রান। আসরের একমাত্র সেঞ্চুরিয়ান এভিন লুইস খেলছে বরিশালের পক্ষে। ১০১ রানের অপরাজিত ইনিংসটি খেলেন ঢাকার বিপক্ষে। তবে সবাইকে চমকে দিয়েছেন কুমিল্লার পাকিস্তানি স্পিনিং অলরাউন্ডার আশার জাইদি। ৯ ম্যাচে ১৫৯ রানের পাশপাশি উইকেট নিয়েছেন ১২টি। অবশ্য সিলেটের ইংলিশ অলরাউন্ডার বোপারাও ছিলেন উজ্জ্বল। ৯ ম্যাচে ১৩২ রানের পাশাপাশি উইকেট নিয়েছেন বোপারা ১০টি। আসরের অন্যতম তারকা আফ্রিদি সিলেটের পক্ষে ৫ ম্যাচে উইকেট নেন ৩টি এবং রান করেন মাত্র ৮৭।

স্পট ফিক্সিংয়ে জড়িত থাকায় পাঁচ বছর সব ধরনের ক্রিকেটে নিষিদ্ধ ছিলেন মোহাম্মদ আমির। নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে পাকিস্তানের ঘরোয়া ক্রিকেটে দুর্দান্ত খেলেছেন। বিপিএলে এবার চিটাগাংয়ের পক্ষে ১৫ উইকেট নিয়ে ফের পাকিস্তান জাতীয় দলের ফেরার রাস্তাটা উজ্জ্বল করে নিয়েছেন। ক্যারিবীয় মিডিয়াম পেসার নিখুঁত লাইন-লেন্থ বজায় রেখে ওভার প্রতি রান দিয়েছেন ৫.১৩। ৬ ম্যাচে উইকেট ১৩টি। সবচেয়ে মিতব্যয়ী বোলার আশার জাইদি। ওভার প্রতি রান দিয়েছেন মাত্র ৪.৮৩! টি-২০ ক্রিকেটে যা রীতিমতো বিস্ময়।

গতকাল শেষ হয়েছে বিপিএলের তৃতীয় গ্রুপ পর্বের খেলা। চূড়ান্ত হয়েছে সেরা চার। আগামীকাল ফাইনালে উঠার লড়াইয়ে মেতে উঠবে দলগুলো। কিন্তু তার আগে বিপিএলে ভালো-মন্দেও মিশেলের পারফরম্যান্সই করলেন গেইল, সাঙ্গাকারা, আফ্রিদিরা।

সর্বশেষ খবর