রবিবার, ১৩ ডিসেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

ভাগ্যই যে ম্যাচের ত্রাতা

মেজবাহ্-উল-হক

ভাগ্যই যে ম্যাচের ত্রাতা

ম্যাচ শেষে প্রথমে সংবাদ সম্মেলনে আসেন রংপুর রাইডার্সের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। তারপর কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। দেশের সেরা দুই ক্রিকেট তারকার মুখচ্ছবিই বলে দিচ্ছিল ম্যাচের ফল!

সাকিবের দিকে তাকানোই যাচ্ছিল না। রাইডার্সের জার্সির নীলাভ আভাটা যেন তার মুখে বেদনায় ছবি ফুটিয়ে তুলেছিল। ভদ্রতা বজায় রাখতে গিয়ে বার বার হাসার চেষ্টা করলেন। কিন্তু বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারের শুকনো হাসি তার ভিতরের চাপা কষ্টকেই উপস্থাপন করল।

মাশরাফি ছিলেন প্রাণবন্ত, হাস্যোজ্জ্বল। ভিক্টোরিয়ানস অধিনায়কের  চোখে-মুখে মুক্তির আনন্দ। সবার আগে কুমিল্লাকে ফাইনালে তুলতে  পেরে অভিভূত ম্যাশ, ‘অনেক অনেকটা রিলিফ লাগছে। সত্যি ফাইনালে ওঠার আনন্দই আলাদা।’ কাল কুমিল্লাকে ফাইনালে তুলে  যেন ইতিহাসের অংশ হয়ে গেলেন নড়াইল এক্সপ্রেস। বিপিএলের তিন আসরেই ফাইনালে খেলেছে মাশরাফির দল। আগের দুই আসরে ঢাকা গ্লাডিয়েটর্সের অধিনায়ক ছিলেন, দুই আসরে তার দল ফাইনালে তো উঠেছিলই- শিরোপাও জিতেছে। এবার ম্যাশের সামনে টানা তিন আসরে শিরোপা জয়ের হাতছানি।

কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসের ১৬৩ রানের জবাবে রংপুর রাইডার্সের ইনিংস গুটিয়ে যায় মাত্র ৯১-এ। হারের কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে সাকিব বলেন, ‘আমাদের ব্যাটিং বোলিং কোনোটাই ভালো হয়নি। উইকেট ততটা সহজ ছিল না ব্যাটিং করার জন্য। কিন্তু ওদের উইকেটও পড়ছিল না,  যা বোলারদের হতাশ করছিল। আর যখন ১৬০ রান করে তখন আমাদের খেলোয়াড়রা আÍবিশ্বাস হারিয়ে ফেলেছিল। এই উইকেটে ওই রান চেজ করা কঠিন ছিল।’ গতকাল ছিল সাকিব আল হাসানের বিবাহবার্ষিকী। ম্যাজিক ডে ‘১২-১২-১২’তে উম্মে আহমেদ শিশিরের সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধেন। কিন্তু বিবাহবার্ষিকীর আনন্দটাই যে পণ্ড হয়ে গেল। ব্যাটে-বলে সম্পূর্ণ ফ্লপ ছিলেন সাকিব। বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার ৪ ওভার বোলিং করে দিয়েছেন ৪৩ রান। আর ব্যাট হাতে প্রথম বলেই আউট। এক সঙ্গে ব্যাটে-বলে ব্যর্থ হয়েছেন সাকিব এমন ঘটনা খুব কমই ঘটেছে।

সাকিবের ব্যর্থতার দিনে তার দলও হেরে লজ্জাজনকভাবে। তবে কুমিল্লার বিরুদ্ধে ৭২ রানের হার পরও ফাইনাল খেলার স্বপ্ন দেখছেন তিনি। সাকিব বলেন, ‘এখনো ফাইনালে যাওয়ার সুযোগ আছে। পরের ম্যাচে জিতলেই হবে। তাছাড়া টি-২০তে এমন ঘটনা ঘটেই। আগের দিন খুব খারাপ করার পর পরের দিনই হয়তো অনেক ভালো হবে।’

দুই দলের অধিনায়কই একটা বিষয়ে একমত, কালকের ম্যাচে ভূমিকা ছিল ভাগ্যের। মাশরাফি বলেন, ‘ভাগ্য আমাদের সহায় ছিল। তাই জিতেছি। উইকেট বেশ কঠিন ছিল।  এই উইকেটে আমার মনে হয় ১৩০ বা ১৩৫-ও ভালো স্কোর হতে পারে। ১৬০ হয়ে  গেছে, তখন মনে হয়েছে আমরা ভালো জায়গায় বোলিং করলে ওদের জন্য কঠিন হয়ে যাবে। টসের আগে উইকেটে নখ ডেবে যাচ্ছিল। এতো সফট উইকেটে টস জিতে ব্যাটিং করা কঠিন। ইমরুল যেভাবে ব্যাটিং করেছে, তা ওকে আÍবিশ্বাস দিবে। লিটনও আজ ভালো খেলেছে।’

সাকিব বলেন, ‘আমার কাছে সবচেয়ে বেশি যেই জিনিসটা মনে হচ্ছে তা হলো ভাগ্য ওদের সহায় ছিল। যেভাবে ইচ্ছা ব্যাট চালিয়েছে। যেটা ব্যাটে লাগে নাই সেটা মিস করে গেছে। যেটা ব্যাটে লাগছে সেটা গ্যাপে পড়ছে অথবা বাউন্ডারি হয়ে গেছে। আমরা ওদেরকে সময়মতো আউট করতে পারিনি। দিনটা আমাদের ছিল না।’

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর