শিরোনাম
বুধবার, ১৬ ডিসেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

বিপিএলে নতুন চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা

আসিফ ইকবাল

বিপিএলে নতুন চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা

চ্যাম্পিয়নের ট্রফি হাতে উল্লসিত কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসের অধিনায়ক মাশরাফি — বাংলাদেশ প্রতিদিন

শেষ বলটা ভুলে যেতে চাইছেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। পারবেন কি? বোধহয় না। এমন একটি ক্ষণ চাইলেই ভোলা যায় না। দুঃখজাগানিয়া গ্র্যান্ড ফাইনালের শেষ বলটি আজীবন তাড়িয়ে বেড়াবে বরিশাল বুলস ও দলনায়ক মাহমুদুল্লাহকে। ওই শেষ বলেই যে স্বপ্নভঙ্গ কীর্তনখোলা নদীর পাড়ের বরিশালের! গ্র্যান্ড ফাইনালের শেষ বলটি যেমন মাহমুদুল্লাহদের কান্নাভেজার, বিপরীতে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসের স্বপ্ন পূরণের। মাশরাফি বিন মর্তুজাকে অমরত্ব দেওয়ারও। বাংলাদেশের ক্রিকেট ও বিপিএলের ইতিহাসে প্রথম অধিনায়ক হিসেবে হ্যাটট্রিক শিরোপা জিতে অমরত্বের খাতায় নাম লেখেন মাশরাফি। তার কীর্তির দিনে ইতিহাসের সোনালি পাতায় নাম লিখল কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসও। বিপিএলে প্রথমবার খেলতে নেমেই বাজিমাত কুমিল্লার। মাশরাফির নেতৃত্ব, অলক কাপালি ও ইমরুল কায়েসের দোর্দণ্ড ব্যাটিংয়ে কুমিল্লা চ্যাম্পিয়ন। ব্রাভো মাশরাফি! ব্রাভো কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস! ‘উইন অর উইন’ স্লোগানে উজ্জীবিত কুমিল্লা গতকাল টানটান উত্তেজনার ফাইনালে বরিশালকে হারাল ৩ উইকেটে। বিজয় দিবসের আগের রাতে দারুণ এক বিজয় দেখল কুমিল্লাবাসী। টার্গেট ১৫৭। কুয়াশাভেজা উইকেট ও রাতের কুয়াশায় পাহাড় ডিঙানো সমার্থক। সে কঠিন কাজটি কাল আরও কঠিন করে কুমিল্লাকে অবিশ্বাস্য ও স্বাপ্নিক এক জয় উপহার দেন ইমরুল কায়েস ও অলক কাপালি। ৩৭ বলে ৫৩ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলে কুমিল্লাকে জয়ের রাস্তায় তুলে দেন ইমরুল। ২৮ বলে ৩৯ রানের টর্নেডো ইনিংস খেলে ম্যাচের যতি টানেন ম্যাচসেরা কাপালি। শুরুতে ম্যাচটিকে বড্ড ম্যাড়ম্যাড়ে মনে হচ্ছিল। কিন্তু সময় যত গড়িয়েছে, বুড়িগঙ্গার জলের মতো বহমান সে াত হয়ে উত্তেজনার পারদ ছড়িয়েছে ম্যাচটি। বিশেষ করে টার্গেট তাড়া করতে নেমে শেষ দুই ওভারে যখন ২৩ রান দরকার, তখন পাল্লাটা হেলেছিল বরিশালের দিকে। কেভিন কুপারের পরপর দুই বলে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে কুমিল্লাকে ম্যাচে ফেরান কাপালি। এরপর শেষ ওভারে দরকার ১৩ রান। পুরো স্টেডিয়াম তখন উত্তেজনায় দাঁড়িয়ে পড়েছে। সাজঘর ছেড়ে ক্রিকেটাররা চলে আসেন বাইরে। বল হাতে মোহাম্মদ সামি এবং ব্যাট হাতে প্রতিপক্ষ শুভাগত হোম। ২ রান নিতে গিয়ে রান আউট শুভাগত। ৫ বলে দরকার ১২ রান। কুলাসেকারা নেমেই ১ রান। ৪ বলে ১১ রান। তৃতীয় ও চতুর্থ বলে দুই বাউন্ডারিতে ম্যাচসেরা কাপালি তুলে নেন ৮ রান। শেষ ২ বলে ৩ রান দরকার কুমিল্লার। পঞ্চম বলে ২ রান নিয়ে টাই। এরপর শেষ বলে ১ রান নিয়ে উদ্বাহু নৃত্যে মেতে ওঠেন কাপালি। কাপালি ও কুলাসেকারা প্রান্ত বদল করার আগেই মাঠে প্রজাপতির ডানায় ঢুকে পড়েন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসের ক্রিকেটার, কোচ ও কর্মকর্তা। গ্রুপ পর্বের ম্যাচ দুটির ফল একতরফা। কুমিল্লা জিতেছিল ৮ ও ৭ উইকেটে। অতীতকে স্মরণে রেখে কাল গ্র্যান্ড ফাইনালে পরিকল্পিত ব্যাটিং করেন মাহমুদুল্লাহরা। যদিও শুরুটা ছিল টস হারে। কুয়াশাভেজা উইকেট পেসার সহায়ক ভাবনায় ফিল্ডিং নেন মাশরাফি। কিন্তু অধিনায়কের সিদ্ধান্তকে ধারণ করতে পারেননি নুয়ান কুলাসেকারা, আবু হায়দার রনিরা। শাহরিয়ার নাফিস, মাহমুদুল্লাহর সময়োপযোগী ব্যাটিংয়ে বরিশালের সংগ্রহ ২০ ওভার শেষে ৪ উইকেটে ১৫৬। ইনিংসের শেষ ওভারে আউট হওয়ার আগে ৩৬ বলে ৪৮ রান করেন মাহমুদুল্লাহ। অভিজ্ঞ শাহরিয়ার বিধ্বংসী মেজাজে ৪৪ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন মাত্র ৩১ বলে।

বরিশাল ইনিংস: ১৫৬/৪, ২০ ওভার (মাহমুদুল্লাহ ৪৮, শাহরিয়ার নাফিস ৪৪, প্রসন্ন ৩৩, স্টিভেন্স ১/১৯, জাইদী ১/২৬, মাশরাফি ১/২৮)

কুমিল্লা ইনিংস : ১৫৭/৭, ২০ ওভার (ইমরুল ৫৩, কাপালি ৩৯, শেহজাদ ৩০, মাহমুদুল্লাহ ২/২৩

ফল : কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস ৩ উইকেটে জয়ী

সর্বশেষ খবর