বুধবার, ১৬ ডিসেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

ইতিহাসের পাতায় মাশরাফি

মেজবাহ্-উল-হক

বুড়ো হয়ে গেছে...। তাই কাপালির প্রতি আগ্রহ দেখায়নি কোনো ফ্র্যাঞ্চাইজি। নিলামে অবিক্রীত! কিন্তু মাশরাফি কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসের নেতৃত্ব পেয়েই ফ্র্যাঞ্চাইজি মালিকের সঙ্গে কথা বলে কাপালিকে দলে নিলেন। সেই ‘বুড়ো’ কাপালি কিনা কুমিল্লাকে এনে দিলেন প্রথম শিরোপা! ভিক্টোরিয়ানস চ্যাম্পিয়ন, আর কাপালি হয়ে গেলেন ‘ম্যান অব দ্য ফাইনাল’। আবু হায়দার রনিকে কে চিনত! কিন্তু মাশরাফি ঠিকই ১৯ বছরের ‘পিচ্চি’ ছেলেটার ভিতরের আগুন আঁচ করতে পেরেছিলেন। আর পুরো টুর্নামেন্টে নিজে দায়িত্ব নিয়ে রনির ভিতরের টিমটিম করে জ্বলতে থাকা আগুনকে ‘আগ্নেয়গিরি’র রূপ দিতে সহযোগিতা করলেন। ২১ উইকেট নিয়ে বিপিএলে বাংলাদেশি বোলারদের মধ্যে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি আবু হায়দার। ভিক্টোরিয়ানসের শিরোপা জয়ে কার্যকর ভূমিকা রাখার জন্য হয়েছেন এ আসরের ‘মোস্ট ভ্যালুয়েবল প্লেয়ার’। ধীরগতির ইমরুলকে নিয়ে কে আশাবাদী ছিল! শুরুর দিকে ভালো করতে না পারায় তো অনেকে নাক সিটকিয়েছেন! কিন্তু আস্থা হারাননি মাশরাফি। তিনি জানতেন, সময়মতো ঠিকই ইমরুলের ব্যাট হাসবে! তাই বার বার সুযোগ দিয়েছেন। আর সে ইমরুলই কিনা ফাইনালে হাফ সেঞ্চুরি করে বাজিমাত করে দিলেন। শেষ চার ইনিংসে ইমরুলের রান ৩৮, ২৭, ৬৭ ও ৫৩। কী অসাধারণ ধারাবাহিক পারফরম্যান্স। বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানদের মধ্যে সর্বোচ্চ রানও ইমরুলের (৩১২)।

‘ব্যাকবেঞ্চার’ তিন ক্রিকেটারকে সামনে এনে রীতিমতো যোদ্ধা বানিয়ে মাশরাফি কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসকে আলোড়িত করলেন। নিজেও আলোকিত হলেন। মাশরাফি যেন সত্যিই এক মহানায়ক। বিপিএলের প্রথম দুই আসরে ঢাকা গ্লাডিয়েটর্সের নেতৃত্ব দিয়ে শিরোপা জিতেছেন। এবার চ্যাম্পিয়ন হলেন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসের হয়ে। বিপিএলে তিনে তিন, ইতিহাসের পাতায়— ম্যাশ। মাশরাফি যেন এক পরশপাথর! যা হাতে নেন তাই খাঁটি সোনা হয়ে যায়! আসর শুরুর পর কে ভেবেছিল শিরোপা জিতবে কুমিল্লা? দল দেখে বরং শেষের অবস্থানটিই ভিক্টোরিয়ানসের জন্য মনে মনে নির্ধারণ করে রেখেছিলেন ক্রিকেটামোদীরা। সে দলটিই কিনা মাশরাফি নামের এক ‘ভিক্টোরিয়ানস’কে পেয়ে বদলে গেল। নামের সার্থকতা রক্ষা করে কুমিল্লা হয়ে গেল সত্যিকারের ‘ভিক্টোরিয়ানস’!

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর