এ মাস বিজয়ের মাস। গৌরবদীপ্ত অতীতকে ধারণ করে সামনে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করার মাস। বাঙালির স্বাধীন জীবনে ডিসেম্বরের গুরুত্ব কতটা কেবল একজন গর্বিত বাঙালিই অনুধাবন করতে পারে। ডিসেম্বরের লাল-সবুজের আনন্দ মিছিলে যোগ হলো আরও একটা বিজয়ের উৎসব। নেপালের বিপক্ষে আন্তর্জাতিক প্রীতিম্যাচে মামুনুলদের (১-০) জয় ঝিমিয়ে পড়া ফুটবলে এনে দিল নতুন প্রাণ, নতুন প্রেরণা। সাফ ফুটবলকে সামনে রেখে এমন একটা জয়ের খুব প্রয়োজন ছিল! বহুদিন পর ফুটবলপ্রাণ ভক্তরা বাংলাদেশের বিজয় উদযাপন করল। বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামের হাজার কয়েক দর্শকের সঙ্গে যোগ দিয়েছিল পুরো দেশ।
বল পায়ে রাখার আপ্রাণ চেষ্টা। মাঝে মধ্যে দুর্দান্ত আক্রমণ। প্রতিপক্ষের ডিফেন্স লাইন ভেঙে বল নিয়ে ভিতরে প্রবেশ। কখনো হেমন্ত কখনো রনি। গতকাল বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে নেপালের বিপক্ষে প্রীতিম্যাচে সাফ ফুটবলের মহড়ায় মামুনুলরা নিজেদের স্বরূপ প্রকাশ করতে ছিলেন মরিয়া। দলগত পারফরম্যান্সের পাশাপাশি ছিল ব্যক্তিগত নৈপুণ্য প্রদর্শনের প্রাণান্তকর চেষ্টা। কারণ সাইড লাইনে দাঁড়িয়ে পর্যবেক্ষক হিসেবে কোচ মারুফুল হক শিষ্যদের মার্কিং করছিলেন। সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের জন্য চূড়ান্ত দল ঘোষণা করতে হবে তাকে শিগগিরই।
নেপাল এমন এক দল নিয়ে বাংলাদেশের বিপক্ষে মাঠে নেমেছিল যাদের ছয়জনেরই আন্তর্জাতিক ফুটবলে অভিষেক হলো। তিনজন খেলেছেন মাত্র একটা করে ম্যাচ। এমন অনভিজ্ঞ এক দলের আক্রমণের মুখেও বাংলাদেশের মিডফিল্ডকে অসহায় দেখা গেল। মরিয়া নেপালের এলোমেলো আক্রমণগুলো শেষ পর্যন্ত ব্যর্থ হলেও তারা বুঝিয়ে দিয়েছে মিডফিল্ড আর ডিফেন্সের ফাঁকফোঁকর গলে যে কেউই বাংলাদেশের ডেরায় হামলা চালাতে পারে অনায়াসে। রোহিত চাঁদের ৬১ ও ৮৪ মিনিটের দুর্দান্ত দুটি শট বাংলাদেশকে পরাজয়ের পথও দেখাতে পারতো! তাছাড়া প্রথমার্ধের উজ্জীবিত দলটাই দ্বিতীয়ার্ধে কেমন যেন গুটিয়ে নিল নিজেদের! দীর্ঘদিন পর এমন এক জয়ের পরও সাফের আগে এসব ভুলচুককে খাটো করে দেখা যায় না। অবশ্য কোচ মারুফুল হকও তো বলে গেলেন, শিষ্যদের পারফরম্যান্সে মোটেও সন্তুষ্ট নন তিনি। সাফের আগে কি এসব ভুলচুক দূর করতে পারবেন মামুনুলরা!