শুক্রবার, ১৮ ডিসেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

তবু খুশি নন মারুফ

ক্রীড়া প্রতিবেদক

তবু খুশি নন মারুফ

জাতীয় দলের কোচ মারুফ

টানা এগার ম্যাচের ব্যর্থতার পর একটা জয়। বুকচাপা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বাংলাদেশের ফুটবল এখন মুক্ত বাতাস নিতে পারছে! গতকাল বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে নেপালের বিপক্ষে ১-০ গোলের জয় সাফ চ্যাম্পিয়নশিপেও ভালো কিছুর পূর্বাভাস দিচ্ছে। কিন্তু কোচ মারুফুল হক কতোটা আশাবাদী এই দল নিয়ে? পারফরম্যান্সেই বা কতোটা সন্তুষ্ট! কোচ ম্যাচের পর সংবাদ সম্মেলনে এলেন মুখে বিজয়ীর হাসির পরিবর্তে বিরক্ত মন নিয়ে। ‘দেখুন, এ দলটাকে আমি যেভাবে তৈরি করেছি, এর ত্রিশ ভাগও তারা আমাকে দিতে পারেনি।’ ১৮ দিনের অনুশীলন ক্যাম্পটা কী অসাধারণ ছিল তা বলে গেলেন ম্যাচের একমাত্র গোলদাতা সাখাওয়াত হোসেন রনিও। ‘আমি ২০১১ সাল থেকে জাতীয় দলে খেলছি। সত্যি বলছি, এর আগে এমন অসাধারণ অনুশীলন ক্যাম্প কখনো পাইনি।’ রনির বক্তব্য থেকেও জানা গেল প্রতিটা ফুটবলার সম্পর্কেই কোচ মারুফ কতোটা স্পষ্ট ধারণা রাখেন। কাকে কোথায় খেলাতে হবে, দলের পুনর্গঠন কেমন করে হওয়া উচিত, সবকিছুর ছকই কষে নিয়েছেন কোচ। কিন্তু তারপরও মাঠে কেন তার প্রতিফলন নেই! ‘আমাদের লিগগুলোতে ক্লাব সাধারণত একটা গোল দিতে পারলেই নিজেদের গুটিয়ে নেয়। এই গোল নিয়েই জয়ের জন্য চেষ্টা করে। ডিফেন্সিভ খেলার মানসিকতাটা খুব গভীর ছেপে আছে আমাদের। এই মানসিকতাটা দূর করাই হবে আমাদের প্রথম কাজ।’ গতকাল নেপালের বিপক্ষেও একই চিত্র দেখা গেছে। দ্বিতীয়ার্ধের অতি ডিফেন্সিভ ফুটবল দেখে এটা কোচেরই পরিকল্পনা বলে মনে হয়েছিল, তবে কোচ স্পষ্ট করলেন, ‘আমাদের বুঝতে হবে, আমরা একটা গোল করতে পারলে আরও একটা করতে পারব। এই বিশ্বাস আমাদের ভিতরে থাকতে হবে।’ ডিফেন্সিভ খেলার কথা ছিল না মোটেও।

ট্যাকনিক্যালি মারুফুল হক অনেক কিছুই শেখাচ্ছেন শিষ্যদের। যেমন মামুনুলকে বলেছেন, তুমি এবার মাথার উপর দিয়ে লম্বা পাস দেওয়ার পরিবর্তে গ্রাউন্ড শট খেল। প্রতিপক্ষ এতে বিভ্রান্ত হবে। মামুনুল অবশ্য তার কাজ করে গেছেন ম্যাচে। দুয়েকটা ভুল করলেও অধিনায়কের প্রতি সন্তুষ্ট কোচ। কিন্তু মিডফিল্ড নিয়ে তিনি হতাশ। বিশেষ করে জামাল ভূইয়ার স্থান পূরণ করা সম্ভব হয়নি। এ কারণেই অহেতুক ব্যাকপাস হয়েছে বেশি। অথচ কথা ছিল ফ্রন্ট পাস হবে মিডফিল্ড থেকে। পরিকল্পনা ছিল ক্রাউড থেকে বল ওপেনে নিয়ে আসার। কিন্তু পুরো ম্যাচে দুয়েকটা ঘটনা এমন চোখে পড়েছে। নেপালের জটলা থেকে বাংলাদেশের বেশিরভাগ শটই ছিল লক্ষ্যহীন। বল পায়ে ধরে রাখাই কেবল নয়, ওটাকে কাজে লাগানোর দক্ষতাও অর্জন করতে হবে। মারুফের ট্যাকটিকসে অভ্যস্ত হতে সময় নিচ্ছেন মামুনুলরা। তবে কোচ মনে করেন, পরিকল্পনার ষাট শতাংশ মাঠে বাস্তবায়িত হলেই সাফে অসাধারণ কিছু করে দেখাবে বাংলাদেশ। এটাই এখন কোচের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দেখা দিচ্ছে। সংক্ষিপ্ত যে সময়টা হাতে আছে এর মধ্যে ‘অ্যাকটিভ রিকভারি’ পদ্ধতিতে কাজ করবেন কোচ। তিনি মূলত ফুটবলারদের ডিফেন্সিভ মানসিকতা থেকে বের করে আনার পাশাপাশি নতুন লাইন-আপের সঙ্গে দলকে খাপ খাওয়ানোর চেষ্টা করছেন। সাফ ফুটবলের ঘণ্টা বাজতে আর মাত্র দিন কয়েক। ২৩ ডিসেম্বর থেকেই শুরু হচ্ছে দক্ষিণ এশিয়ার সেরা ফুটবল আসর।

২৪ ডিসেম্বর বাংলাদেশ গ্রুপ পর্বে নিজেদের প্রথম ম্যাচে আফগানিস্তানের মুখোমুখি হবে। সাফের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন আফগানদের মুখোমুখি হওয়ার আগে শিষ্যদের প্রস্তুত করে তুলতে পারবেন কী মারুফ!

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর