শনিবার, ১৯ ডিসেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

পরিশ্রমে পৌঁছেছিলেন শীর্ষে

খায়রুল ইসলাম, গাজীপুর

পরিশ্রমে পৌঁছেছিলেন শীর্ষে

জাতীয় দলের অধিনায়ক হিসেবে দেশে বিদেশে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ফুটবল খেলে যিনি চমকপ্রদ নৈপুণ্য প্রদর্শন করে দর্শক প্রশংসা কুড়িয়েছেন, তিনি গাজীপুরের কৃতী সন্তান মো. আজমত আলী। জাতীয় পর্যায়ে ফুটবল দলে নিজেকে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য তাকে কঠোর পরিশ্রম করতে হয়েছে। অনেক মেধা-শ্রম আর অনুশীলনে আত্মনিয়োগ করতে হয়েছে নিজেকে। ছোটবেলার স্বপ্ন আকাঙ্ক্ষাকে বাস্তবে রূপ দিতে অনেক কাঠখড় পোহাতে হয়েছে। আর তার এ সাধনার মূল্যও তিনি পেয়েছেন। আজমতের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রাথমিক বিদ্যালয় ও হাইস্কুলে পড়াশুনাকালে তিনি অ্যাথলেট হিসেবে পরিচিত ছিলেন। গাজীপুর শহরের রাণী বিলাসমণি বালক উচ্চ বিদ্যালয় থেকে হাই জাম্পে অংশ নিয়ে চ্যাম্পিয়ন হন। পরে তিনি ফুটবল খেলোয়াড় হয়ে ওঠেন। ১৯৭৩ সালে স্কুলে ও এলাকাভিত্তিক বিভিন্ন ফুটবল খেলায় অংশ নিতে শুরু করেন। ১৯৭৬ সালে মুসলিম ইন্সটিটিউটের পক্ষে স্ট্রপার হিসেবে ঢাকা স্টেডিয়ামে খেলা শুরু করেন। প্রথম খেলায় প্রতিপক্ষ দল ছিল শাজাহানপুর ক্রীড়া চক্র। ১৯৭৭ সালে ঢাকা মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের খেলোয়াড় হিসেবে তিনি নাম স্বাক্ষর করেন। ওই বছরই ডিফেন্সের খেলোয়াড় হিসেবে ১১নং জার্সি পরে খেলায় অংশ নেন। ওই খেলায় প্রতিপক্ষ ছিল ব্রাদার্স ইউনিয়ন দল। ওই খেলায় মোহামেডান ১-০ গোলে জয়ী হয়। মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ গোলটি করেছিলেন। ১৯৭৭, ১৯৭৮ সালে তিনি মোহামেডানের পক্ষে খেলেন। ১৯৭৮ ও ১৯৭৯ সালে ব্রাদার্স ইউনিয়নের পক্ষে খেলেন। ১৯৮০ সালে বিজিএমসি’র হয়ে খেলায় অংশ নেন। ১৯৮১ ও ১৯৮২ সালে ব্রাদার্স ইউনিয়নে খেলেন। ১৯৮১ সালে আগা খান গোল্ড কাপের ফাইনাল খেলায় ব্রাদার্স ইউনিয়ন ও ব্যাংকক ব্যাংক ক্লাব যৌথভাবে চ্যাম্পিয়ন হয়। ১৯৮৩, ১৯৮৪ সালে আবার মোহামেডানে খেলেন। ১৯৮৫ সালে আবার দলবদল করে ব্রাদার্স ইউনিয়নে নাম লেখান। ১৯৮৫, ১৯৮৬, ১৯৮৭, ১৯৮৮ সাল পর্যন্ত বাদার্স ইউনিয়নের পক্ষে খেলেন। ১৯৮৫ সালে জাতীয় দলের অর্থাত্ সবুজ দলের অধিনায়ক মনোনীত হন। ১৯৮৬ সালে জাতীয় দলের খেলোয়াড়রা পাকিস্তান সফর করেন। ১৯৮৭ সালে পাকিস্তানের লাহোরে অনুষ্ঠিত খেলায়ও তিনি অংশ নেন। তিনি ১৯৮৫, ১৯৮৬ ও ১৯৮৭ সালে জাতীয় দলের অধিনায়ক ছিলেন। ১৯৮১ সাল থেকে ১৯৮৮ সাল পর্যন্ত তিনি জাতীয় দলে খেলেন। ১৯৮৯ ও ১৯৯১ সালে ফরাশগঞ্জ স্পোর্টিং ক্লাবের হয়ে অংশ নেন। ১৯৯২ সালে আবার ব্রাদার্স ইউনিয়নে যোগ দেন এবং সেখান থেকেই অবসর নেন। ১৯৯৩-৯৪ সালে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর ফুটবল কোচ ছিলেন। এছাড়া ধানমন্ডি ক্লাব ও পিডব্লিউডিকেও কোচিং করান। পরে তিনি গাজীপুর জেলা ক্রীড়া সংস্থার সঙ্গে জড়িত হন। ১৯৯৩ সালে গাজীপুর জেলা ক্রীড়া সংস্থার সহ-সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। বর্তমানে তিনি জেলা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি। গাজীপুর সিটি করপোরেশনের হাড়িনাল গ্রামের জয়নাল আবেদীন ও মাতা রয়মন নেসার ছেলে আজমত। ১৯৭৪ সালে রাণী বিলাসমণি সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মানবিক বিভাগে এসএসসি পাস করেন। ১৯৮৫ সালে কাজী জাহানারা আক্তারকে বিয়ে করেন। বড় ছেলে আজিজুল হক জরিপ লন্ডনে থেকে এমবিএ করছেন। ছোট ছেলে এহসানুল হক অর্নব এ বছর এইচএসসি পাস করেছে।

সর্বশেষ খবর