রবিবার, ২০ ডিসেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

মামুনুলদের লক্ষ্য শিরোপা

ক্রীড়া প্রতিবেদক

মামুনুলদের লক্ষ্য শিরোপা

লক্ষ্য আমাদের একটাই শিরোপা— ঢাকা ছাড়ার আগে সংবাদ সম্মেলনে এ কথাই বললেন কোচ মারুফ। পাশে অধিনায়ক মামুনুল ও ম্যানেজার আমিরুল ইসলাম বাবু —বাংলাদেশ প্রতিদিন

অপেক্ষার অবসান ঘটতে যাচ্ছে। ২৩ ডিসেম্বর কেরালায় সুজুকি সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের পর্দা উঠছে। পরের দিনই অর্থাৎ ২৪ ডিসেম্বর বাংলাদেশের মিশন শুরু। গ্রুপ ম্যাচে প্রতিপক্ষ হিসেবে মাঠে নামবে ফেবারিট আফগানিস্তান। শক্তিশালী মালদ্বীপ ও ভুটানও রয়েছে একই গ্রুপে। দল হিসেবে ভুটান ততটা শক্তিশালী নয়। সেমিফাইনালে উঠতে হলে আফগানিস্তান বা মালদ্বীপের বিপক্ষে জয় পেতেই হবে। ২৬ ডিসেম্বর মালদ্বীপ ও ২৮ ডিসেম্বর ভুটানের বিপক্ষে লড়াই। বাংলাদেশ দল আজ সকালেই কেরালার উদ্দেশে রওনা দেবে। সাফ ইতিহাসে বাংলাদেশ একবারই চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। ২০০৩ সালে ঢাকায় অনুষ্ঠিত আসরে মালদ্বীপকে হারিয়ে সেবার চ্যাম্পিয়ন হয়। নেতৃত্বে ছিলেন রজনীকান্ত বর্মণ। এরপর এক যুগ কেটে গেছে। শিরোপা জেতাটা যেন এখন স্বপ্নে পরিণত হয়েছে। গত দুই আসরে চরম ব্যর্থতা। গ্রুপপর্ব খেলেই মামুনুল, এমিলিদের দেশে ফিরে আসতে হয়েছে।

গ্রুপে আফগানিস্তান ও মালদ্বীপের মতো শক্তিশালী দল থাকায় সেমিফাইনালে ওঠা নিয়ে সংশয় রয়েছে। ক্রিকেটে বাংলাদেশ অনেক দূর এগিয়ে গেছে। জিম্বাবুয়ের মতো শুধু দুর্বল প্রতিপক্ষই নয়, পাকিস্তান, ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার মতো শক্তিশালী দলের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ জিতেছে বাংলাদেশ। সে তুলনায় ফুটবল অনেক পিছিয়ে। ব্যর্থতার গণ্ডি থেকে বের হয়ে আসতে পারছে না। হতাশা যেন নিত্যসঙ্গী। সাফে ব্যর্থতার পুনরাবৃত্তি ঘটবে কিনা ভয়টা এখানেই? সত্যি বলতে কি এবার যদি জাতি হতাশ হয় ফুটবলকে ঘিরে যতটা আগ্রহ আছে তাও ম্লান হয়ে যাবে।

প্রশ্ন একটাই ফুটবলাররা এবার কি করবেন? প্রতিবারই দেশ ছাড়ার আগে আশার বাণী শুনিয়ে যান। ঢাকা ছাড়ার আগে গতকাল বাফুফে ভবনে সংবাদ সম্মেলনে তার ব্যতিক্রম ঘটেনি। কোচ মারুফুল হক, ম্যানেজার আমিরুল ইসলাম বাবু ও অধিনায়ক মামুনুল ইসলাম তিনজনই বলেছেন লক্ষ্য আমাদের একটাই শিরোপা। বাস্তবে তার প্রতিফলন ঘটবে কি? সত্যি বলতে কি আগে যাই হোক না কেন, বাংলাদেশ এবার পুরোপুরি প্রস্তুত হয়েই সাফে নামবে। জানুয়ারি থেকে লোকাল বা আন্তর্জাতিক ম্যাচে টানা ব্যস্ত ছিলেন ফুটবলাররা। তাছাড়া বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে এশিয়ান চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া, জর্ডান, কিরগিজস্তান ও তাজিকিস্তানের বিপক্ষে দেশে ও দেশের বাইরে খেলেছে। ফলাফল সুখকর ছিল না কিন্তু এতেতো অভিজ্ঞতা ও ভুলত্রুটি শোধরানোর সুযোগ পেয়েছে। মামুনুল নিজেই বলেছেন, বাফুফে কোনো ঘাটতি রাখেনি। অনেকদিন পর ভালো প্রস্তুতি নিয়েই সাফে মাঠে নামতে পারব। তাছাড়া পরাজয়ের বৃত্তে আটকিয়ে থাকলেও প্রীতিম্যাচে নেপালকে হারানোয় বাংলাদেশ জয়ের তৃপ্তি নিয়েই কেরালায় উড়ে যাবে। গ্রুপে কঠিন প্রতিপক্ষ হলেও লক্ষ্য শিরোপা। তাই প্রতিটি ম্যাচে জয়ের জন্যই বাংলাদেশ মাঠে নামবে। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ব্যবস্থাপনা কমিটির চেয়ারম্যান বাফুফে সহ-সভাপতি কাজী নাবিল আহমেদ এমপি বলেন, যে ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে তাতে আমি সাফল্যের ব্যাপারে আশাবাদী।

অনেক দিন পর সাফে এবার প্রশিক্ষকের দায়িত্ব পেয়েছেন দেশি কোচ। মারুফুল হক মারুফ— যাকে দেশের সেরা কোচই বলা যায়। চূড়ান্ত দলে যে ২০ জন ঠাঁই পেয়েছেন তাদের সবারই পারফরম্যান্স সম্পর্কে তার জানা আছে। খেলোয়াড়রাও গুরুকে ভালোমতো চেনে। মারুফ কাল দৃঢ়ভাবে বলেছেন, লক্ষ্য তার শিরোপা। সেই সামর্থ্য অবশ্যই ছেলেদের রয়েছে। যে পরিকল্পনা নিয়ে অনুশীলন করানো হয়েছে তার ৬০ ভাগও যদি মাঠে তুলে ধরতে পারে তাহলে শিরোপা জিততে খুব একটা কষ্ট হবে না বলে মারুফ মনে করেন। দেশি কোচের অধীনে বাংলাদেশ কখনো ট্রফি জিততে পারেনি। এবার মারুফ তা পারবেন কিনা সেটাই দেখার বিষয়। অধিনায়ক মামুনুল বলেন, ‘দেশবাসীকে আমরা ট্রফি উপহার দিতে চাই। সেভাবে প্রস্তুত হয়েই কেরালায় যাচ্ছি। সবাইকে উজাড় করে খেলতে হবে। তাহলেই শিরোপা জেতা সম্ভব। আমিরুল ইসলাম বাবু দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন। তিনি বলেন, প্রস্তুতি আমাদের ভালো হয়েছে। আশা করি এবার আমরা দেশবাসীর মুখে হাসি ফুটাব।

সর্বশেষ খবর