সোমবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

যত আগ্রহ সাফ ঘিরেই

ক্রীড়া প্রতিবেদক

যত আগ্রহ সাফ ঘিরেই

কেরালার উদ্দেশে ঢাকা ছাড়ার আগে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে জাতীয় দলের ফুটবলাররা —বাংলাদেশ প্রতিদিন

সামনে এশিয়া কাপ ও টি-২০ বিশ্বকাপ। দুটোই ক্রিকেটে বড় আসর। কিন্তু এ মূহূর্তে ক্রীড়ামোদীদের আগ্রহ সুজুকি সাফ ফুটবলকে ঘিরেই। দক্ষিণ এশিয়ার ফুটবলে সবচেয়ে বড় ও আকর্ষণীয় আসর। ২৩ ডিসেম্বর ভারতের কেরালায় সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের পর্দা উঠবে। ৩  জানুয়ারি শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচ। ফুটবলে জনপ্রিয়তা থাকলেও শক্তির দিক দিয়ে এই অঞ্চল বেশ পিছিয়ে। ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে আটটি দেশই তলানিতে পড়ে আছে। এশিয়াতেও কারও পাত্তা মিলছে না। তাই সাফ চ্যাম্পিয়নই যেন সার্ক অঞ্চলের বিশ্বকাপে পরিণত হয়েছে। যারা চ্যাম্পিয়ন হয় তারাই দক্ষিণ এশিয়ার সেরা দলের স্বীকৃতি পেয়ে যায়। টুর্নামেন্ট এখনো মাঠে গড়ায়নি। কিন্তু কে হবে চ্যাম্পিয়ন। এনিয়ে ক্রীড়ামোদীদের মধ্যে হিসাব-নিকাশ অনেক আগে থেকেই শুরু হয়ে গেছে। দেশবাসীর প্রত্যাশা এবারের সাফ ট্রফি বাংলাদেশের ঘরে আসুক। ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে যে অবস্থানে থাকুক না কেন প্রতিবারই আসরে ফেবারিট হয়েই বাংলাদেশ মাঠে নামে। অথচ বাস্তবে সেই রূপ দেখা যাচ্ছে না। সাফে একবারই চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাংলাদেশ। ২০০৩ সালে ঢাকায় অনুষ্ঠিত আসরে মালদ্বীপকে ফাইনালে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল লাল-সবুজের দল।

এরপর এক যুগ কেটে গেছে। টুর্নামেন্টে ফাইনালে উঠলেও শিরোপা জেতা আর সম্ভব হয়নি। প্রতিবেশী ভারতের সাফে সর্বোচ্চ শিরোপা জেতার কৃতিত্ব রয়েছে। পরে খেলতে এসে আফগানিস্তানও দুবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। অন্যদিকে বাংলাদেশ ব্যর্থতার বৃত্ত থেকে বের হয়ে আসতে পারছে না। সামান্য সাফ জয়ই যেন স্বপ্নে পরিণত হয়েছে। গত দুই আসরে চরম ভরাডুবি ঘটে। গ্রুপ পর্ব খেলেই মামুনুল-এমিলিদের দেশে ফিরে আসতে হয়। ক্রিকেটে সাফল্যের শেষ নেই। ইংল্যান্ডকে পেছনে ফেলে বিশ্বকাপে প্রথমবারের মতো কোয়ার্টার ফাইনালে খেলা ছাড়াও পাকিস্তান, ভারত, দক্ষিণ আফ্রিকার মতো শক্তিশালী দলের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ জয় করে বাংলাদেশ। বিশ্বে এখন বাংলাদেশের  ক্রিকেট মজবুত অবস্থানে।  সে তুলনায় ফুটবল অনেক পিছিয়ে। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ঘুরে দাঁড়ানো সম্ভব হচ্ছে না। ব্যর্থতাই যেন সঙ্গী।

যাক এবার সাফে ঘুরে দাঁড়ানোর প্রতিজ্ঞা করেছেন ফুটবলাররা। মামুনুলরা এখন কেরালায়। ঢাকা ছাড়ার আগে কোচ মারুফুল হক ও অধিনায়ক মামুনুল ইসলাম দৃঢ়ভাবে বলে গেছেন লক্ষ্য তাদের একটাই সাফ জয়। সত্যি বলতে কি, স্বপ্ন বললেও বাংলাদেশ কিন্তু এত দুর্বল নয়। সাফ জেতার সামর্থ্য ঠিকই রয়েছে। কেন যে এক যুগ শিরোপা বঞ্চিত রয়েছে সেটাই রহস্য। যাক এবার পুরোপুরি প্রস্তুত হয়েই মামুনুলরা সাফে গেছেন। অস্ট্রেলিয়া ও জর্ডানের মতো শক্তিশালী দলের বিপক্ষে লড়াই করার অভিজ্ঞতা রয়েছে। ফলাফল সুখকর ছিল না। কিন্তু ভুলত্রুটি শোধরানোর সুযোগ পেয়েছে। মামুনুল নিজেই বলেছেন, এসব সাফে কাজে লাগাতে পারব। অনেকদিন পর সাফে দেশের কোচ দায়িত্ব পেয়েছেন। মারুফুল হককে দেশের সেরা কোচই বলা যায়। উপমহাদেশে উয়েফা কোর্সেস লাইসেন্স শুধু তারই রয়েছে। সবচেয়ে বড় কথা এমন কোচকে পেয়ে খেলোয়াড়রা সন্তুষ্ট। প্রতিটি খেলোয়াড়ের পারফরম্যান্স কেমন তা জানা আছে মারুফের।

ঢাকা ছাড়ার আগে মারুফ বিমান বন্দরে বলে গেছেন সাফল্যের ব্যাপারে আমি আশাবাদী। প্রশিক্ষণে ছেলেরা পরিশ্রম করেছে। সবার ভিতরে জেদ কাজ  করছে।  ব্যর্থতার গণ্ডি থেকে বের হওয়াই সবার মূল লক্ষ্য। মারুফ বলেন, যেভাবে প্রশিক্ষণ করানো হয়েছে তার ৬০ ভাগও যদি মাঠে তুলে ধরতে পারে তাহলে সাফ জেতা কষ্টকর হবে না। তবে গ্রুপের প্রথম ম্যাচকেই আমি বড় বাঁধা বলব। আফগানিস্তানকে হারাতে পারলেই আত্মবিশ্বাসটা বেড়ে যাবে। বলতে পারেন প্রথম ম্যাচটিই বাংলাদেশের ফাইনালের মতোই।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর