মঙ্গলবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

মার্শাল আর্টের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন সিফু ঢাকায়

ক্রীড়া প্রতিবেদক

মার্শাল আর্টের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন সিফু ঢাকায়

বাংলাদেশ প্রতিদিন কার্যালয়ে এসে মিক্সড মার্শাল আর্টের অনেক অজানা তথ্য তুলে ধরলেন সিফু কনচো —বাংলাদেশ প্রতিদিন

বিশ্বের প্রায় ১৫০ মিলিয়ন দর্শক প্রতিনিয়ত উপভোগ করেন কিক বক্সিং, কুংফু, কারাতে, মার্শাল আর্ট। এসব জনপ্রিয় খেলার সংমিশ্রণ কে-ই ফাইটিং বা মিক্সড মার্শাল আর্টস। বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় মিক্সড মার্শাল আর্টের প্রচারণা চালাতে সাতবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন সিফু রবার্ট এম ম্যাকিন্স (সিফু কনচো) দুদিনের সফরে এখন ঢাকায়। তার আগমনেই বাংলাদেশে আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করছে জনপ্রিয় এই কে-ই ফাইটিং। বিখ্যাত মার্শাল আর্ট প্রতিষ্ঠান ওয়ার্ল্ড কুমিট অর্গানাইজেশনের সভাপতি সিফু কানচো গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিন কার্যালয়ে এসে সৌজন্য সাক্ষাত্ করেন সম্পাদক নঈম নিজামের সঙ্গে। সম্পাদকের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতের পর তিনি কে-ই ফাইটিং নিয়ে তার স্বপ্নের কথা তুলে ধরেন।

জন্ম তার নিউজিল্যান্ডের অকল্যান্ডে। এখন বসবাস থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে। বাস করছেন গত ২০ বছর ধরে। সেখানে সিফু ইনস্ট্রাকটর হিসেবে কাজ করেছেন থাই রয়্যাল মিলিটারি পুলিশ ও পাতায়া পুলিশের সঙ্গে। এছাড়া নিয়মিত কাজ করেন জাপানে। দ্বীপরাষ্ট্রটিতে এখন জনপ্রিয় খেলাগুলোর একটি কে-ই ফাইটিং। কাজ করেছেন ইরানে এবং দক্ষিণ আফ্রিকায়ও। তার নির্দেশনায় কে-ই ফাইটিংয়ের বিশ্বকাপের গত আসরে দক্ষিণ আফ্রিকা তৃতীয় বিস্মিত করেছে সবাইকে। তার কোচিংয়ে ইরান কে-ই ফাইটিংয়ে এখন বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী দেশ। এবার তিনি এসেছেন বাংলাদেশে। দুদিনের সফর আহামরি কিছু না হলেও এখনই কে-ই ফাইটিংয়ের বীজ বপন করতে চাচ্ছেন। এজন্য তাকে সহায়তা করছে এশিয়া ইউনাইটেড এন্টারমেইনমেন্ট লিমিটেড। গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিন অফিসে মিক্সড মার্শাল আর্ট সম্পর্কে অনেক অজানা তথ্য জানান। জানান নিজের ক্যারিয়ার ও স্বপ্নের কথা। বাংলাদেশে মিক্সড মার্শাল আর্ট বিস্তার নিয়ে বলেন, ‘যদি বাংলাদেশের যুব সমাজ খেলাটিকে গ্রহণ করে, তাহলে আমরা উন্নতমানের কোচ পাঠিয়ে এমন অবস্থায় নিয়ে যাব, যাতে ২০১৭-১৮ সালের মধ্যে বিশ্বকাপ খেলতে পারে। বাংলাদেশের লোক সংখ্যা ১৬৫ মিলিয়ন। এখানকার মানুষজনের খেলাটিকে ঘিরে আগ্রহ রয়েছে। এটাকে কাজে লাগাতে চাই। মার্শাল আর্ট এমন একটি খেলা, যা মানুষের মধ্যে মেলবন্ধনের সৃষ্টি করে। আমরা বাংলাদেশকে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় কে-ই ফাইটিংয়ের  রোল মডেল হিসেবে উপস্থাপন করতে চাই।’

বাংলাদেশে কারাতে ফেডারেশন, কুংফু ফেডারেশন, তায়েকোয়ানডো ফেডারেশন রয়েছে। ফেডারেশনগুলো নিয়মিত খেলাধূলার আয়োজনও করছে। এবার সেখানে যুক্ত হতে যাচ্ছে মিক্সড মার্শাল আর্ট। খেলাটির উন্নয়নে আর্থিক সহযোগিতা দিতেও প্রস্তুত ওয়ার্ল্ড কুমিট অর্গানাইজেশন, বলেন সংগঠনটির সভাপতি সিফু, ‘অর্থ কোনো বিষয় নয়। বাংলাদেশে যদি খেলাটির প্রসার ঘটে, তাহলে অবশ্যই আমরা আর্থিক সহযোগিতা করবো। খেলাটির প্রচারে আমরা প্রতি বছর ১৫ থেকে ২০ মিলিয়ন ডলার আর্থিক সহযোগিতা করি।’ ওয়ার্ল্ড কুমিট ফেডারেশনকে সহযোগিতা দিবে এশিয়া ইউনাইটেড এন্টারটেইনমেন্ট। ওয়ার্ল্ড কুমিট অর্গানাইজেশন দেশের সামাজিক উন্নয়নের দিকে নজর রাখার দিকেও সচেষ্ট থাকার কথা জানান সিফু কানচো, ‘বাংলাদেশের সব বয়সের লোকের মধ্যে সুস্বাস্থ্য, শৃঙ্খলা, আত্মবিশ্বাস ও আত্মরক্ষামূলক সচেতনতা বৃদ্ধিসহ মাদকবিরোধী প্রচারণা চালানোও এই প্রতিষ্ঠানটির অন্যতম লক্ষ্য।’ সিফু কানচো মার্শাল আর্টে সাতবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন। প্রশিক্ষক হিসেবেই এতটাই উঁচুমানের যে, তার হাত ধরে ২৭ জন বিশ্বচ্যাম্পিয়ন বেরিয়েছে ওয়ার্ল্ড বক্সিংয়ে। এখন দেখার বিষয় তার হাত ধরে বাংলাদেশ কতটা পথ এগিয়ে যায়।

সর্বশেষ খবর