মঙ্গলবার, ২৯ ডিসেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

সমন্বয়ের অভাব ছিল দলে

সমন্বয়ের অভাব ছিল দলে

তপু বর্মণের হেড জালে। পরে রনি আরও দুই গোল করলে দুর্বল ভুটানের বিপক্ষে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে বাংলাদেশ —গোলডটকম

সাখাওয়াত হোসেন রনি। ২২ বছরের এক তরুণ। খেলছেন শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবে। ১৯ বছরের জুয়েল রানা খেলছেন মোহামেডানে। শেখ জামাল আর শেখ রাসেলেও আছেন হেমন্ত, সোহেল রানা আর তপু বর্মণের মতো বেশ কয়েকজন তরুণ ফুটবলার। ২২ বছরের কম বয়সের আটজন ফুটবলার সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ খেলতে জাতীয় দলের জার্সি গায়ে জড়িয়ে এসেছিলেন ভারতের কেরালায়। ক্লাব ফুটবলে তাদের খ্যাতি আকাশচুম্বী। লাখ লাখ টাকা একেকজনের মূল্য। মৌসুম শেষ হলেই নতুন টাকার মৌ মৌ ঘ্রাণে একেকজনের আঙিনা সুরভিত হয়ে ওঠে। তারপর মিডিয়ার কল্যাণে ওদের জনপ্রিয়তা ছড়িয়ে পড়ে গ্রাম-গঞ্জে। পোস্টার-ফেস্টুন আর টি-শার্টের বুকে-পিঠে শোভা পেতে থাকে ওদের ছবি। একেকজন নিজেদের মনে করতে থাকে কালের মহানায়ক। আর এ অহংবোধই এক সময় আকাশ থেকে তাদের নিক্ষেপ করে মাটিতে।

সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে টানা দুই ম্যাচ হেরে গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নিশ্চিত হওয়ার পর গতকাল ভুটানের বিপক্ষে ৩-০ গোলের জয়টা যেন ‘কাটা ঘায়ে নুনের ছিটা’ হয়েই থাকল। কিন্তু বাংলাদেশের এমন করুণ অবস্থা হলো কী করে! গত সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের দলের চেয়ে এবারেরটা নাকি অনেক ভালো। এই দাবি দলের ভিতর থেকে যেমন ছিল তেমনি বাইরের সমর্থন বক্তব্যও কম ছিল না। কিন্তু মাঠে কী প্রমাণ হলো! গতবার অন্তত শেষ ম্যাচ পর্যন্ত আশা ছিল নকআউট খেলার। এবার তো প্রথম দুই ম্যাচেই শেষ হলো সব আশা। অবশ্য প্রাপ্তির খাতায় যোগ হয়েছে একটা জয়। দীর্ঘদিন পর সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে কোনো ম্যাচ জিতল বাংলাদেশ। গতবার তো নেপালের কাছেও ২-০ গোলে হেরেছিলেন মামুনুলরা।

প্রথম দুই ম্যাচ হেরে বিদায়ের পর মামুনুল তার ব্যক্তিত্বগুণ বজায় রাখতে ছেড়ে দিলেন অধিনায়কের আর্মব্যান্ড। এর কারণ কী শুধুই পরাজয়ের গ্লানি! নাকি অন্য কিছু! দলের মধ্যে কী তবে কোনো বিদ্রোহী গ্রুপও ছিল! জামাল ভূইয়া যেমন কিছুটা রয়ে-সয়ে বললেন, ‘তরুণদের মধ্যে শ্রদ্ধাবোধ নেই। টাকা পেলেই যারা নিজেদের বড় তারকা মনে করে তাদের দিয়ে কী করে ফুটবল হবে!’ জামাল ভূইয়া কারও নাম নিতে চাইলেন না। তবে তার এ বক্তব্য এক ভয়ঙ্কর বিপদ সম্পর্কে আমাদের চোখ খুলে দিল। দলের মধ্যে সমন্বয়ের কতটা অভাব তা গতকাল ভুটান ম্যাচের মধ্যেই কিছুটা দেখা গেছে। ম্যাচের ৬৪ মিনিটে দলের ফুটবলাররা নিজেদের মধ্যেই বাকবিতণ্ডা শুরু করেছিলেন! দলের মধ্যে ভাঙন যে কোনো দিক থেকেই ভয়ঙ্কর পরিণাম ডেকে আনতে পারে। সেক্ষেত্রে দলকে ঐক্যবদ্ধ করার দিকেই প্রথম নজর দেওয়া প্রয়োজন। কোচ মারুফও তো বললেন, ‘এই দলটাকে নতুন করে ঢেলে সাজাতে হবে।’ তবে সেই সঙ্গে জানালেন, বর্তমান দলটার রিপ্লেসমেন্টও নেই, যাদের নিয়ে নতুন করে দল সাজানো সম্ভব। তবে কি বাংলাদেশের ফুটবল এক অন্ধকার যুগেই প্রবেশ করতে যাচ্ছে!

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর