বৃহস্পতিবার, ২৮ জানুয়ারি, ২০১৬ ০০:০০ টা

বড় জয়ে যাত্রা বাংলাদেশের

ক্রীড়া প্রতিবেদক

বড় জয়ে যাত্রা বাংলাদেশের

বর্তমান চ্যাম্পিয়ন দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারানোর পর প্রজাপতির ডানায় যেন ভেসে বেড়াচ্ছেন বাংলাদেশের যুবারা —বাংলাদেশ প্রতিদিন

যখনই সংবাদ পেয়েছিল আয়োজক হওয়ার, তখন থেকেই বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হওয়ার পরিকল্পনা আঁকতে থাকে বাংলাদেশ। এক যুগ আগে আয়োজক হয়েছিল যুব বিশ্বকাপের। সেবার বিশ্বসেরা হতে পারেনি। কিন্তু চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল প্লেটপর্বে। এবার স্বপ্ন আরও উপরে। স্বপ্ন বিশ্বসেরা হওয়ার। সেই স্বপ্নের সূচনাটা দারুণ হয়েছে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দলের। অনূর্ধ্ব-১৯ যুব বিশ্বকাপের উদ্বোধনী দিনে বাংলাদেশ ৪৩ রানে হারিয়েছে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন দক্ষিণ আফ্রিকাকে। এই জয়ে গ্রুপ শীর্ষ হয়ে কাপ পর্বে খেলার পথে এক ধাপ দিয়েই ফেলেছেন মেহেদি হাসান মিরাজরা। যুব দলের পরের দুই ম্যাচ ৩১ জানুয়ারি ও ২ ফেব্রুয়ারি। প্রতিপক্ষ অপেক্ষাকৃত দুর্বল নামিবিয়া ও স্কটল্যান্ড। ম্যাচ দুটির ভেন্যু কক্সবাজার শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম। জয়ের আত্মবিশ্বাস নিয়ে মিরাজ বাহিনী আজই কক্সবাজার উড়ে যাবে চট্টগ্রাম থেকে। 

দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে মিরাজদের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স গগণচুম্বী। দেশে ও দেশের বাইরে ১৪ ম্যাচের ১১টিতেই হেসেছেন মিরাজরা। কাল খেললেন ১৫ নম্বর ম্যাচ। যুব বিশ্বকাপের সূচনা ম্যাচ হলেও জয়ের বিষয়ে আত্মবিশ্বাসী ছিল স্বাগতিকরা। অতীত পারফরম্যান্সই ছিল সঙ্গী। সেই আত্মবিশ্বাস নিয়ে কাল খেলতে নামে। প্রথমে ব্যাট করতে নামলেও সূচনাটাও ভালো হয়নি স্বাগতিক দলের। দশম ওভারের তৃতীয় বলে সাজঘরে ফিরেন ওপেনার সাইফ হাসান। এরপর দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে পিনাক ঘোষ ও জয়রাজ শেক যোগ করেন ৪৪ রান। পিনাক সাজঘরে ফিরেন ব্যক্তিগত ৪৩ রানে। পিনাকের বিদায়ের পর ক্রিজে আসেন ম্যাচ সেরা নাজমুল হোসেন শান্ত। জয়রাজকে নিয়ে দলকে একটি শক্ত ভিত দিতে চেষ্টা করেন। দুজনে তৃতীয় উইকেট জুটিতে ২৯ রান। জয়রাজের বিদায়ের পর দলের দায়িত্ব নাজমুল পুরোটা তুলে নেন নিজ কাঁধে। অধিনায়ক মিরাজকে নিয়ে ৫৯ রান যোগ করেন নাজমুল। এই জুটির উপর ভর করেই বাংলাদেশের যুবাদের সংগ্রহ ৭ উইকেটে ২৪০। মিরাজ ২৩ রানে ফিরলেও দলকে শেষ পর্যন্ত টেনে নিয়ে যান নাজমুল। ম্যাচ সেরা নাজমুল সবার শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে সাজঘরে ফেরার আগে খেলেন ৭৩ রানের ইনিংস। ৮২ বলের ইনিংসটি খেলের সন্তুষ্ট নাজমুল, ‘সেঞ্চুরি করতে না পারায় কোনো আফসোস নেই। দল জিতেছে এটাই আমার প্রাপ্তি। সেঞ্চুরি করলাম অথচ দল হারলো, তাতে কোনো লাভ নেই। আমি এমন ক্রিকেট খেলতে চাই না। আমার লক্ষ্য সব সময় দলের জয়। আমি জয়ের কথা ভেবেই খেলতে নামি।’

জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের উইকেটে বল একটু ধীরলয়ে আসছিল। এমন উইকেটে নিজেদের মানিয়ে নিয়ে ২৪১ রানের টার্গেট ছুড়ে প্রোটিয়াস যুবাদের চেপে ধরেন মিরাজ, সাইফুদ্দীন, শাওন, সাঈদরা। নতুন বলে বোলিং করে অফ স্পিনার মিরাজ। মেডেন নিয়ে দুর্দান্ত শুরু করেন যুবা অধিনায়ক। তার দেখাদেখি অপরাপর স্পিনাররাও দারুণ বোলিং করেন। শুধুমাত্র সঞ্জিত ছিলেন উইকেট শূন্য। মিরাজ দুই স্পেলে বোলিং করে ৩৭ রানে ৩ উইকেট। ৩ উইকেট নেন আরেক অফ স্পিনার মোহাম্মদ সাইফুদ্দীন। ২টি করে উইকেট নেন সাঈদ সরকার ও বাঁ হাতি স্পিনার সালেহ আহমেদ শাওন। স্পিনারদের সাঁড়াশি আক্রমণে দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংস শেষ হয় ৪৮.৪ ওভারে ১৯৭ রানে। দল হারলেও ওপেনার লিয়াম স্মিথ ১০০ রানের ইনিংস খেলেন। স্বাগতিক স্পিনারদের আক্রমণে দক্ষিণ আফ্রিকার মাত্র ৪জন ব্যাটসম্যান দুই অংকের ইনিংস খেলেন। বাকি সাত ব্যাটসম্যানের মোট রান ৩৪।  

সংক্ষিপ্ত স্কোর

বাংলাদেশ, অনূর্ধ্ব-১৯ : ২৪০/৭, ৫০ ওভার ( সাইফ হাসান ৬, পিনাক ঘোষ ৪৩, জয়রাজ শেক ৪৬, নাজমুল হোসেন শান্ত ৭৩, মেহেদি হাসান মিরাজ ২৩, জাকির হাসান ১৯, সাঈদ সরকার ৪, মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন ১৭*, সঞ্জিত সাহা ২*। মুল্ডার ৩/৪২, সিপামলা ১/৪৭, হোয়াইটহেড ১/৪৪, জর্জি ১/৩৪)।

দক্ষিণ আফ্রিকা, অনূর্ধ্ব-১৯ : ১৯৭/১০, ৪৮.৪ ওভার ( স্মিথ ১০০, গ্যালিয়েম ২২, সায়ানভালা ১৭, হোয়াইটহেড ১৩, অতি.১১। মেহেদি হাসান মিরাজ ৩/৩৭, মোহাম্মদ সাইফুদ্দীন ৩/৩০,  সাঈদ সরকার ২/৩৯, সালেহ আহমেদ শাওন ২/৩৭)।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর