বুধবার, ২৭ এপ্রিল, ২০১৬ ০০:০০ টা

শেখ জামালের বিজয়ের হাসি

শেখ জামাল ৩ : ২ ট্যাম্পাইন

ক্রীড়া প্রতিবেদক

শেখ জামালের বিজয়ের হাসি

গোলের পর শেখ জামালের ফুটবলারদের সেলিব্রেশন

ধানমন্ডি ক্লাবের কাছে হারটা একসময় ছিল স্বাভাবিক ঘটনা। কিন্তু শেখ জামাল নামকরণের পর চেহারাই পাল্টে যায়। ফুটবলে তাদের হার মানে বড় কোনো অঘটন। অথচ সময়টা এখন খারাপই যাচ্ছে এই ক্লাবের। কিরগিজস্তান চ্যাম্পিয়নদের টপকিয়ে এএফসি কাপে দ্বিতীয় রাউন্ডে উঠেছিল। শেখ জামালের লক্ষ্য ছিল চ্যাম্পিয়ন হয়ে চূড়ান্ত পর্বে যাওয়া।

একসময় এশিয়ান ক্লাব কাপ ফুটবলে মোহামেডান চূড়ান্ত পর্বে খেলেছে। শক্তিশালী দলের বিরুদ্ধে জয়ের রেকর্ডও আছে। এখন বাংলাদেশের কাছে তা স্বপ্নই বলা যায়। সেই স্বপ্ন পূরণের কথা বলেছিলেন শেখ জামাল সভাপতি মনজুর কাদের। কিন্তু বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন দল হিসেবে শেখ জামাল দ্বিতীয় রাউন্ডে দাঁড়াতেই পারছে না। অ্যাওয়ে আর হোম— টানা চার ম্যাচে হার। চূড়ান্ত রাউন্ডে যাওয়ার সব সম্ভাবনা এখানেই শেষ হয়ে যায়। আসলে হারবেই না কেন, প্রাথমিক বা বাছাই পর্বে শেখ জামাল ছিল তারকায় ভরপুর। সমন্বয় ও আত্মবিশ্বাস ছিল তুঙ্গে।

দ্বিতীয় রাউন্ডে তারকা না থাকায় সব এলোমেলো। ভরসা বলতে বিদেশিরাই। কিন্তু ১১ জনের খেলায় চার বিদেশি দিয়ে কত আর পারা যায়? পরাজয়ের বৃত্ত থেকে তাই বের হতেও পারছিল না। শেষ পর্যন্ত হতাশার মাঝে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছে হলুদ জার্সিধারীরা। গতকাল বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে ফিরতি পর্বের লড়াইয়ে ৩-২ গোলে জয়লাভ করে সিঙ্গাপুর চ্যাম্পিয়ন ট্যাম্পাইন রোডার্সকে হারিয়ে।

এ দলের কাছেই অ্যাওয়ে ম্যাচে ০-৪ গোলে হেরেছিল বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়নরা। ম্যাচের আগের দিন ট্যাম্পাইনের কোচ বলেছিলেন, ‘শেখ জামালকে আমরা কোনোভাবেই হালকা করে দেখছি না। ঘরের মাঠে তারা জেতার সামর্থ্য রাখে।’ শেষ পর্যন্ত তার কথাই ঠিক হয়েছে। এএফসি কাপে যে শেখ জামাল জিততে ভুলে গিয়েছিল। তারাই কাল ম্যাচ শেষে বিজয়ের হাসি হেসেছে। সত্যিই দিনটি ছিল শেখ জামালের। প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগে গুরুত্বপূর্ণ জয় আর ফুটবলে হারায় ট্যাম্পাইনকে।

ম্যাচে গোল করার প্রথম সুযোগটা পেয়েছিল ট্যাম্পাইন। জর্ডান ওয়েবের বাড়ানো বলে বিলির মাথা হয়ে হেড করেন নওয়াজ, কিন্তু দৃঢ়তার সঙ্গে রুখে দেন গোলরক্ষক হিমেল।

এরপর গোছানো ফুটবল খেলতে থাকেন মানিকের শিষ্যরা। অতিথি খেলোয়াড় জুয়েল রানার গতিময় খেলা ছিল চোখে পড়ার মতো। ২০ মিনিটেই এগিয়ে যায় শেখ জামাল। জুয়েলের ক্রসে ওয়েডসন হেড নিলে ক্রসবারে লেগে ফেরত এলেও লান্ডিং গোল করেন। ৪৪ মিনিটে সমতা ফেরান মুস্তাফিজ। ৫৫ মিনিটে গেনাল্টি থেকে ওয়েডসন গোল করলে পুনরায় এগিয়ে যায়। ৭০ মিনিটে সমতাও ফিরে আসে। সুলাইমান দূরপাল্লার শটে গোল করেন। ৮২ মিনিটে লান্ডিং গোল করলে তা আর ফেরানো সম্ভব হয়নি। ম্যাচ জিতেই মাঠ ছাড়ে শেখ জামাল।

বর্তমান দেশের ফুটবলের যে অবস্থা সিঙ্গাপুর চ্যাম্পিয়ন দলের বিরুদ্ধে শেখ জামালের জয়কে গৌরবময় বলতে হয়।

আন্তর্জাতিক ফুটবলে হার যেন নিত্যসঙ্গী হয়ে পড়েছিল। সেখানে নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও শেখ জামাল জয় পেয়েছে এটা হতাশার মধ্যে কিছুটা স্বস্তি বলা যায়। এএফসি কাপে শেখ জামালের শিরোপার স্বপ্ন শেষ হয়ে গেলেও গতকালের জয় দলকে নতুনভাবে উজ্জীবিত করবে। অনুপ্রেরণা জোগাবে অন্য ফুটবলারদেরও।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর