শনিবার, ৭ মে, ২০১৬ ০০:০০ টা

টানটান উত্তেজনার ফাইনাল আজ

ক্রীড়া প্রতিবেদক

টানটান উত্তেজনার ফাইনাল আজ

স্বাধীনতা কাপের ফাইনালে নামার আগে গতকাল অনুশীলনরত চট্টগ্রাম আবাহনীর বিদেশি ফুটবলাররা —বাংলাদেশ প্রতিদিন

তিন বছরের মধ্যে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ দ্বিতীয়বারের মধ্যে দেখবে ডার্বি লড়াই। ২৮ মে ফুটবলপ্রেমীরা দেখবেন ‘মাদ্রিদ ডার্বি’। দেখবেন রিয়াল মাদ্রিদ-অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ ডার্বি। দুই স্প্যানিশ ক্লাবের মতো ফুটবল বিশ্বের অপরাপর দেশেও রয়েছে ম্যানচেস্টার ডার্বি, মিলান ডার্বি। সেই অর্থে বাংলাদশের ফুটবলে নেই কোনো ডার্বি লড়াই। অবশ্য বাংলাদেশের ফুটবলেও ইঙ্গিত মিলছে ডার্বি লড়াইয়ের। এই প্রথম ঘরোয়া ফুটবল উপভোগ করতে যাচ্ছে ‘আবাহনী ডার্বি’। মৌসুমের প্রথম ফুটবল টুর্নামেন্ট স্বাধীনতা কাপের ফাইনালে মুখোমুখি হচ্ছে ঢাকা আবাহনী ও চট্টগ্রাম আবাহনী। আজ বিকাল সাড়ে ৫টায় বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে মৌসুমের প্রথম শিরোপা লড়াইয়ে মুখোমুখি হচ্ছে দুই আবাহনী।

ঢাকা আবাহনীর ভাণ্ডারে রয়েছে বহু শিরোপা। কিন্তু চট্টগ্রাম আবাহনী নামছে ঘরোয়া ফুটবলে প্রথম শিরোপা জয়ের টার্গেটে। যদিও গত বছর শেখ কামাল আমন্ত্রণমূলক আন্তর্জাতিক ক্লাব ফুটবলের শিরোপা জিতেছিল বন্দরনগরীর দলটি।

গ্রুপ পর্বে সেমিফাইনালে জায়গা নিতে ঘাম ঝড়াতে হয়েছিল ঢাকা আবাহনীকে। সেমিফাইনালে ওঠার পর চেহারা পাল্টে যায় ধানমন্ডি পাড়ার দলটির। টুর্নামেন্টের অন্যতম ফেবারিট শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবকে ৬-০ গোলে বিধ্বস্ত করে। দ্বিতীয়ার্ধে লি ইউ টাক, সানডে চিজোবার গতিশীল ফুটবলের কাছে অসহায় আত্মসমর্পণ করে গত আসরের চ্যাম্পিয়ন শেখ জামাল। সানডে হ্যাটট্রিকসহ ৪ গোল করেন একাই। লি টাক করেন দুটি। বিপরীতে চট্টগ্রাম আবাহনী টাইব্রেকারে শেখ রাসেলকে হারিয়ে জায়গা নেয় ফাইনালে। দুই দলের ম্যাচটি নির্ধারিত সময় ১-১ গোলে ড্র ছিল। এরপর ৪-২ গোলে জিতে নেয় চট্টগ্রাম আবাহনী। আজ বন্দরনগরীর দলটিকে খেলতে হবে মামুনুলসহ দলের পাঁচ তারকা ছাড়াই।

দুই আবাহনী এখন পর্যন্ত তিনবার পরস্পরের মুখোমুখি হয়েছে। তাতে ঢাকা আবাহনী হাসেনি। ২০১৪ সালে নিটল টাটা বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে দুই লড়াইয়ের ফল ছিল ড্র। প্রথম ম্যাচের ফল ছিল গোলশূন্য। পরেরটির ফল ১-১। দুই দলের সর্বশেষ লড়াই শেখ কামাল আমন্ত্রণমূলক ক্লাব ফুটবল টুর্নামেন্টে। গত ২২ অক্টোবরের ম্যাচে চট্টগ্রাম আবাহনী ১-০ গোলে হারিয়েছিল ঢাকা আবাহনীকে। টুর্নামেন্টের শিরোপাও জিতেছিল চট্টগ্রাম আবাহনী। স্বাধীনতা কাপে অংশগ্রহণকারী ১২ দলের প্রত্যেকেই পাচ্ছে ১ লাখ টাকা করে। চ্যাম্পিয়ন প্রাইজমানি ৫ লাখ এবং রানার্স আপ প্রাইজমানি ৩ লাখ টাকা।

পরিসংখ্যানে দল এগিয়ে। কিন্তু সেটা নিয়ে ভাবতে নারাজ চট্টগ্রাম আবাহনীর কোচ জোসেফ পাভলিক। শিরোপা জিতবেন কি না, সেটা নিয়ে না ভেবে ফাইনালে ওঠাকেই বড় করে দেখছেন পাভলিক, ‘দল ফাইনালে ওঠায় আমি ভীষণ খুশি। প্রতিপক্ষ ঢাকা আবাহনী বেশ শক্তিশালী দল। কারা চ্যাম্পিয়ন হবে, সেটা বলা যাবে না। তবে আমরা জিতলে আমার চেয়ে বেশি খুশি কেউ হবে না। আমরা ফাইনালের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত। আমাদের পাঁচ ফুটবলার থাকলে শক্তি বাড়তো কোনো সন্দেহ নেই।’ প্রতিপক্ষ ঢাকা আবাহনী ২০১১ সালের পর প্রথমবার ঘরোয়া ফুটবলের ফাইনালে উঠেছে। এ জন্য দলটি পুরোপুরি নির্ভর করছে তিন বিদেশি সানডে-কামারা-লি টাকের ওপর। দলীয় কোচ অমলেশ সেন তাই বলেছেন, ‘গত দুই ম্যাচে যে রকম খেলেছি আমরা, সেটা ধরে রাখতে পারলে আমরাই চ্যাম্পিয়ন হব। লি টাক খুব ভালোমানের খেলোয়াড়। গোল করছেন, করাচ্ছেন। সানডে চিজোবা দুর্দান্ত খেলছেন। আমাদের বিদেশিরা দারুণ খেলছেন। তাদের ওপর সাফল্য নির্ভর করছে। সঙ্গে এটাও ঠিক, আমাদের স্থানীয়রাও ভালো খেলছেন।’ ঢাকা আবাহনীর অধিনায়ক আরিফুল মনে করেন ম্যাচটি উপভোগ্য হবে, ‘দুই আবাহনীরই সমান সুযোগ রয়েছে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার। অনেকদিন ধরে আমরা শিরোপা জিততে পারছি না। এবার সুযোগ এসেছে, কাজে লাগাতে চাই।’ 

চ্যাম্পিয়ন কে হবে, জানতে আজ রাত পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। তবে আশার কথা হচ্ছে, দুই আবাহনীর ফাইনাল দিয়ে অপরাপর দেশগুলোর মতো বাংলাদেশের ফুটবলেও শুরু হয়ে গেল ডার্বি লড়াই। স্বাধীনতা কাপের এটাই প্রথম বড় প্রাপ্তি।

সর্বশেষ খবর