বৃহস্পতিবার, ১২ মে, ২০১৬ ০০:০০ টা

বছরজুড়েই ফুটবল

ক্রীড়া প্রতিবেদক

বছরজুড়েই ফুটবল

গেল মৌসুমে ফুটবলাররা ব্যস্ত সময় কাটিয়েছেন। ঘরোয়া ও আন্তর্জাতিক শিডিউল মিলিয়ে ফুটবলাররা পুরো বছরই মাঠে ছিলেন। এবারও তার ব্যতিক্রম ঘটবে বলে মনে হয় না। মৌসুমে প্রথম ট্রফি স্বাধীনতা কাপ শেষ হয়েছে। ১৫ মে শুরু হচ্ছে ফেডারেশন কাপ। জুনে পেশাদার লিগ। দুই পর্বের লিগ শেষ হতে সেপ্টেম্বর পার হয়ে যাবে। এর মধ্যে আবার এশিয়ান কাপের প্লে অফ ম্যাচ খেলবে। যদি বাছাইপর্বে উঠতে পারে জাতীয় দলের ব্যস্ততা বেড়ে যাবে। চট্টগ্রাম আবাহনী ঘোষণা দিয়েছে শেখ কামাল আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় আসরটা হবে আরও জাঁকজমকপূর্ণ। গতবার নভেম্বরে আসর গড়িয়ে ছিল। এবারও তা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। জানুয়ারিতে হবে বঙ্গবন্ু্ল গোল্ড কাপ। এছাড়া বাফুফের আগেই ঘোষণা দিয়েছে এক সময় জনপ্রিয় আসর শেরেবাংলা কাপ ২০১৬ থেকেই শুরু হবে। যদিও আসরের চূড়ান্ত শিডিউল ঘোষণা করেনি। সত্যি যদি এই বছরে শেরেবাংলা কাপ হয়। জেলাগুলোর ব্যস্ততা যেমন বেড়ে যাবে। তেমনি নতুন নতুন ফুটবলারের দেখা মিলবে।

আট বছরে তেমনভাবে উদ্যোগ না নিলেও তৃতীয়বার বাফুফে সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পর কাজী সালাউদ্দিন ঘোষণা দিয়েছেন, চার বছরে তিনি প্রতিটি জেলায় লিগ করবেন। প্রতিটি জেলা নয়, ১৫/২০ জেলার নিয়মিতভাবে যদি লিগ হতে পারে তাহলে ফুটবলে নতুনত্ব আসবে। বাংলাদেশের অধিকাংশ তারকা ফুটবলারের আবির্ভাব ঘটে বিভিন্ন জেলার লিগ থেকে। পরে ঢাকায় খেলে তারকাখ্যাতি পেয়েছে। বাদল রায়, সালাম মুর্শেদী, শেখ মো. আসলাম, রণজিত, রুমিদের মতো ফুটবলাররা এভাবেই তারকাখ্যাতি পেয়েছিলেন। শেরেবাংলা কাপ পুনরায় শুরু ও ঢাকার বাইরে জেলাগুলোতে লিগ শুরু হলে উপকৃত হবে ফুটবল। ফুটবলার সংকটে ক্রীড়ামোদীরা এতটা শঙ্কিত যে সামনে জাতীয় দল গড়া যাবে কিনা এ নিয়ে সংশয় রয়েছে। অনেকে বলেন, যদি বিদেশিরা না খেলতো তাহলে পেশাদার লিগে ক্লাবগুলোর সেরা একাদশ গড়া কঠিন হয়ে যেত। গত আট বছরে মানের কোনো পরিবর্তন না ঘটলেও এটা স্বীকার করতে হবে ফুটবলটা মাঠে রয়েছে। গতবার জাতীয় দল বেশ কটি ম্যাচ খেলেছে। ফলাফল সুখকর না হলেও খেলোয়াড়দের সাহস ও অভিজ্ঞতা দুটোই বেড়েছে। এবারে হয়তোবা বেশি ম্যাচ খেলার সুযোগ পাবে না। কিন্তু বাফুফের চিন্তাভাবনা রয়েছে দেশে ও বিদেশে প্রীতিম্যাচ খেলা।

ক্রিকেট এখন অনেক দূর এগিয়ে গেছে। শক্তিশালী দলকে হারানো এখন স্বাভাবিক ঘটনা। কিন্তু লক্ষ্য করলে দেখা যাবে ঘরোয়া আসরে তেমন আকর্ষণ নেই। সেই দিক দিয়ে ফুটবল বরং এগিয়ে। ক্রিকেট প্রিমিয়ার লিগে ক্রিকেটারদের পারিশ্রমিক বেঁধে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ফুটবলারদের পারিশ্রমিক দিন দিন বেড়েই চলেছে। মান সংকটাপন্ন হলেও সর্বোচ্চ পারিশ্রমিক ঠেকেছে ৬০ লাখ টাকায়। ঘরোয়া আসরে লাথি মারলেই লাখ লাখ টাকার পারিশ্রমিক জুটে। মাঠেও লড়াই হচ্ছে হাড্ডাহাড্ডি। শুধু বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে দর্শক মিলছে না। এক সময় বড় দলের ম্যাচ মানেই দুপুর থেকেই গ্যালারি ভরে যাওয়া। এখন তা স্মৃতিই বলা যায়। বাফুফের নব-নির্বাচিত কমিটি বিষয়টি এবার মাথায় রেখেছে। ঢাকা আর চট্টগ্রাম ছাড়া উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে ময়মনসিংহ, সিলেট ও রাজশাহীতে পেশাদার লিগ আয়োজনে। অনেকে বলছেন, উদ্যোগ নিলে কি হবে বড় বড় দলগুলোতো খেলতে চাইবে না। এবার শক্ত হতে হবে ফেডারেশনকে। কারও অজুহাত শোনা যাবে না। লিগের আকর্ষণ বাড়াতে নতুন ভেন্যু জরুরি হয়ে পড়েছে। ঢাকার বাইরে খেলা হলে গ্যালারি যে ভরে যায় তাতো সবাই দেখছে। ভেন্যু বাড়লে ফুটবলই উপকৃত হবে।

 বছর জুড়ে খেলা সেই সঙ্গে ঢাকার বাইরে হলে ফুটবল জেগে উঠবে এনিয়ে কারও সংশয় নেই। প্রশ্ন হচ্ছে বাফুফে উদ্যোগ বাস্তবায়ন করতে পারবে কিনা?

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর