সোমবার, ৩০ মে, ২০১৬ ০০:০০ টা

ফের ইউরোপ সেরা রিয়াল

রাশেদুর রহমান

ফের ইউরোপ সেরা রিয়াল

উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জেতার পর রিয়াল মাদ্রিদের ফুটবলাররা বাসে চড়ে বিজয় উৎসবে মেতে ওঠেন। এটি তাদের ১১তম শিরোপা —এএফপি

জিনেদিন জিদান এবার মাথা উঁচু করে বলতে পারেন, আমি পেরেছি। সমালোচনার অভাব ছিল না তাকে নিয়ে। কিন্তু রিয়াল মাদ্রিদ তাদের কিংবদন্তি ফুটবলারের ওপর আস্থা রেখেছিল। সেই আস্থারই প্রতিদান দিলেন তিনি। শনিবার গভীর রাতে মিলানের সান সিরোতে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালে টানটান উত্তেজনাপূর্ণ ম্যাচ জিতে নিল তার দল। ১-১ গোলে ড্র ছিল অতিরিক্ত সময়েও। তারপরও টাইব্রেকারে অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদকে ৫-৩ গোলে হারিয়ে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ১১তম শিরোপা ঘরে তুলল লস ব্ল্যাঙ্কোসরা।

অ্যাটলেটিকোর বড় আশা ছিল, প্রথমবারের মতো উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের রুপালি ট্রফিতে চুমু দেওয়ার। দিয়েগো সিমিওনে দলটাকে সেভাবেই প্রস্তুত করেছিলেন। কিন্তু তা আর হলো কই! রিয়াল মাদ্রিদের দস্যিপনার কাছে মাথা নত করতে হলো অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদকে। ম্যাচের ১৫ মিনিটেই গোল করে রিয়াল মাদ্রিদকে এগিয়ে দিয়েছিলেন সার্জিও রামোস। এগিয়ে থাকার পরও বার বারই ভুল করেছে রিয়াল মাদ্রিদ। প্রতিপক্ষের উপর হামলে পড়েছে তারা। এর বদলে পেয়েছে হলুদ কার্ড। তবে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের মতো ফাইনাল ঠিক যেমনটা হওয়া উচিত তাই হয়েছে। ফেরেরার ৭৯ মিনিটের গোলই ম্যাচে ছড়িয়েছিল চরম উত্তেজনা। অ্যাটলেটিকো সমতায় ফেরার পর রিয়াল মাদ্রিদ পাগলপ্রায় হয়ে আক্রমণ করেছিল। কিন্তু অ্যাটলেটিকোর দুর্ভেদ্য প্রাচীর আর ভাঙতে পারেনি। টাইব্রেকারে হুয়ানফ্র্যানের গোল মিসই রিয়াল মাদ্রিদের জয়ের দরোজা খুলে দেয়। রিয়ালের পক্ষে টাইব্রেকারে রোনালদো ছাড়াও গোল করেছেন ভাজকুয়েজ, মার্সেলো, বেলে এবং রামোস।

চ্যাম্পিয়ন রিয়াল মাদ্রিদ। দলের নাম ভিন্ন হলেও মাদ্রিদে উৎসব হতোই। গতকাল চ্যাম্পিয়ন হিসেবে রিয়াল মাদ্রিদ শহরে আগমনের পরই ভক্তরা ঘিরে ধরে তাদের। হাজার হাজার ভক্ত নেমে আসে রাস্তায়। বিজয়ী বীরদের অভ্যর্থনা দিতে ছুটে আসেন ব্যবসায়ী-রাজনীতিবিদ-শিক্ষাবিদ থেকে শুরু করে সব শ্রেণির নাগরিক। কেবল আসেনি অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের ভক্তরা। ঘরের এক কোণে বসে তখন তারা অশ্রুপাতে ব্যস্ত। এই শহরে আরও একবার একই দৃশ্য দেখেছে ফুটবল দুনিয়া। সেই দৃশ্যেরই যেন পুনঃমঞ্চায়ন হলো গতকাল। দুই বছর আগেও চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালে অ্যাটলৃেটিকো মাদ্রিদকে হারিয়ে শিরোপা উৎসব করেছিল রিয়াল মাদ্রিদ। রিয়াল মাদ্রিদ গত এক দশকে বার্সেলোনার আধিপত্যবাদের কাছে হার মেনেছে বার বার। তবে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগে নিজেদের শান-শওকত তারা ধরে রেখেছিল বরাবরের মতোই। এই তো দুবছর আগেই ‘লা ডেসিমা’ জিতেছে তারা। এবার বার্সেলোনার আধিপত্য অনেকটাই খর্ব করার মতো মসলা পেয়েছে রিয়াল মাদ্রিদ। কোচ জিনেদিন জিদান প্রায় পুরোপুরিই বদলে দিয়েছেন দলটাকে। একের পর এক জয় করে চলেছেন তিনি দুর্লঙ্ঘ সব বাধার প্রাচীর। সমালোচকরা বলছেন, এটা নাকি জিদানের কেবল শুরু। যার শুরু হয়, চ্যাম্পিয়ন্স লিগ বিজয় দিয়ে তার শেষটা যেন কত সুমধুর হয়! রিয়াল মাদ্রিদ এবারের চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিতে ছাড়িয়ে গেল বার্সেলোনাকে। উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ শুরুর পর এই নিয়ে পঞ্চমবারের মতো শিরোপা জিতল রিয়াল মাদ্রিদ। তারা পাঁচবার ফাইনাল খেলে পাঁচবারই জিতেছে। অন্যদিকে পাঁচবার ফাইনাল খেলে চারবার জিতেছে বার্সেলোনা। এরচেয়ে বেশি ফাইনাল খেলেছে এসি মিলান। উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ যুগে তারা ছয়বার ফাইনাল খেলে জিতেছে তিনবার।

এক দশকের চ্যাম্পিয়ন

সাল   চ্যাম্পিয়ন           রানার্সআপ

২০১৬ রিয়াল মাদ্রিদ        অ্যাটলেটিকো

২০১৫ বার্সেলোনা          জুভেন্টাস

২০১৪ রিয়াল মাদ্রিদ        অ্যাটলেটিকো

২০১৩ বায়ার্ন মিউনিখ       বুরুসিয়া ডর্টমুন্ড

২০১২ চেলসি               বায়ার্ন মিউনিখ

২০১১ বার্সেলোনা          ম্যানইউ

২০১০ ইন্টার মিলান        বায়ার্ন মিউনিখ

২০০৯ বার্সেলোনা          ম্যানইউ

২০০৮ ম্যানইউ             চেলসি

২০০৭ এসি মিলান         লিভারপুল

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর