মঙ্গলবার, ৩১ মে, ২০১৬ ০০:০০ টা

মাশরাফির আগুনে বোলিং

ক্রীড়া প্রতিবেদক

মাশরাফির আগুনে বোলিং

বয়স যেন বাড়ছে না। কমছে। মাশরাফি বিন মর্তুজা, বয়স ৩৩ বছর। বাংলাদেশের ওয়ানডে ও টি-২০ ক্রিকেটের অধিনায়ক। তার হাত ধরেই পুনর্জন্ম নিয়েছে বাংলাদেশের ক্রিকেট। তার সুচারু নেতৃত্বেই বাংলাদেশ ক্রিকেটের গ্রাফ ওপরে উঠছে এবং পরাক্রমশালী দল হয়ে উঠছে ধীরে ধীরে। মাশরাফি এখন খেলছেন এবং খেলাচ্ছেন পুরো দলকে। জাতীয় দলের খেলা নেই। তাই ওয়ালটন প্রিমিয়ার ক্রিকেটে খেলছেন কলাবাগান ক্রিকেট ক্রীড়া চক্রের পক্ষে। বল হাতে এখনো আগুন ঝরাচ্ছেন। গতকাল বল হাতে নারায়ণগঞ্জ ফতুল্লা খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়ামের উইকেটে আগুন ঝরিয়েছেন এবং দলকে উপহার দিয়েছেন চতুর্থ জয়। নড়াইল এক্সপ্রেসের বিধ্বংসী বোলিংয়ে ম্যাচে কলাবাগান ডাক ওয়ার্থ লুইস (ডিএল) পদ্ধতিতে ১০ রানে হারিয়েছে লিজেন্ড অব রূপগঞ্জকে। এ হারের এককভাবে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে উঠতে ব্যর্থ হলো রূপগঞ্জ। প্রিমিয়ার ক্রিকেটের বাকি দুই ম্যাচের একটিতে ভিক্টোরিয়া ২৮ রানে শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবকে ও স্পিনারদের আধিপত্যের ম্যাচে গাজী ক্রিকেটার্স ৪৩ রানে হারায় ব্রাদার্স ইউনিয়নকে।

ফতুল্লাকে এখন পয়মন্ত ভেন্যু বলতেই পারেন মাশরাফি। দিন কয়েক আগে এখানে ব্যাট হাতে ঝড় তুলেছিলেন। শেখ জামালের বিপক্ষে ৫১ বলে সেঞ্চুরি করেছিলেন। তার টর্নেডো সেঞ্চুরিতে জিতেছিল কলাবাগান। গতকাল বল হাতে জাদু দেখালেন। তার বোলিংয়ে রূপগঞ্জের ইনিংস থেমে যায় ৪৯ ওভারে ১৯১ রানে। সর্বোচ্চ ৪৮ রান করেন সাজেদুল হক। ৪০ রানের ইনিংস খেলেন আসিফ আহমেদ রাতুল। ধারাবাহিকভাবে ব্যর্থ সৌম্য সরকার কাল সাজঘরে ফেরেন মাত্র ৭ রানে। পাঁচ নম্বরে বোলিংয়ে আসা মাশরাফি একে একে সাজঘরে ফেরত পাঠান মোহাম্মদ মিথুন, মোশরারফ রুবেল, সাজ্জাদুল হক, আলাউদ্দিন বাবু, নাহিদুল ইসলাম, মেহেদি হাসান রানাকে। ম্যাচসেরা মাশরাফির বোলিং স্পেল ১০-০-৪২-৬। চলতি প্রিমিয়ার ক্রিকেটে এই প্রথম কোনো পেসার ৬ উইকেট পেলেন। লিগে ৬ উইকেট পেয়েছেন আরও দুই বোলার। দুজনই স্পিনার। ৩৪ রানে ৬ উইকেট পেয়েছিলেন আবাহনী লেগ স্পিনার জুবায়ের হোসেন লিখন এবং ৩৫ রানে ৬টি নিয়েছিলেন ভিক্টোরিয়ার শ্রীলঙ্কান বাঁ হাতি স্পিনার চতুরঙ্গা ডি সিলভা। ৯ ম্যাচে মাশরাফির উইকেটসংখ্যা ২০টি। লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে এটা মাশরাফির দ্বিতীয় ৬ উইকেট। আগেরটি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে। ২০০৬ সালে কেনিয়ার বিপক্ষে নাইরোবিতে ২৬ রানে নিয়েছিলেন ৬ উইকেট। আরও একবার ৫ উইকেট রয়েছে তার। ২০০৭ সালে জাতীয় ক্রিকেটের ওয়ানডেতে খুলনার পক্ষে চট্টগ্রামের বিপক্ষে ৫ উইকেট নিয়েছিলেন ৩১ রানের খরচে। ১৯২ রানের টার্গেটে খেলতে নেমে কলাবাগানের সংগ্রহ যখন ৩৫.৪ ওভারে ৪ উইকেটে ১২৭, তখন বৃষ্টিতে খেলা বন্ধ হয়ে যায়। বৃষ্টি আইনের মারপ্যাঁচে কলাবাগান জিতে যায় ১০ রানে। কেননা ওই সময় রূপগঞ্জের স্কোর ছিল ১১৭।

মিরপুর স্টেডিয়ামে ভিক্টোরিয়া ২৮ রানে জয় তুলে ফিরে এসেছে শিরোপা লড়াইয়ে। প্রথমে ব্যাট করে মুমিনুল হকের হাফ সেঞ্চুরিতে ৪৯.৪ ওভারে ২৪৭ রান করে। মুমিনুল সর্বোচ্চ ৫০ রান করেন ৫১ বলে ৬ চারে। অলরাউন্ডার মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ৩ উইকেট নেন। ২৪৮ রানের টার্গেটে খেলতে নেমে শেখ জামাল ৪৮.৩ ওভারে ২১৯ রানে গুটিয়ে যায়। জামালকে গুটিয়ে দেন পেসার কামরুল ইসলাম রাব্বি ৩৮ রানে ৪ উইকেট নিয়ে। জামালের পক্ষে সর্বোচ্চ ৫৯ রান করেন সোহাগ গাজী। এ জয়ে ৯ ম্যাচে ১১ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট তালিকার তৃতীয় স্থানে জায়গা নিয়েছে মতিঝিলপাড়ার দল ভিক্টোরিয়া। বিকেএসপিতে স্পিন আধিপত্যের ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করে গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সের সংগ্রহ ছিল ৩৫.২ ওভারে ১৬৭ রান। সর্বোচ্চ ৪৭ রান করেন ওপেনার এনামুল হক বিজয়। অকেশনাল স্পিনার তুষার ইমরান ২৭ রানে নেন ৪ উইকেট। ১৬৮ রানের টার্গেটে খেলতে নেমে ব্রাদার্সের ইনিংস গুটিয়ে যায় মাত্র ১২৪ রানে। গোপীবাগের দলটিকে গুটিয়ে দেন স্পিনার মেহেদি হাসান ১০ ওভারের স্পেলে ১৬ রানের খরচে ৪ উইকেট নিয়ে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর