দুনিয়া কাঁপানো অলিম্পিক গেমসের পর্দা উঠল। ব্রাজিলবাসীর স্বপ্ন পূরণ হলো এতে। ফুটবলের দেশে এই প্রথম অলিম্পিকের আয়োজন। পদক জিততে ক্রীড়াবিদরা মরিয়া হয়ে লড়বেন। একটা পদক একটা দেশের অনেক সুনাম বাড়িয়ে দেয়। এসএ গেমস, এশিয়া গেমস ও কমনওয়েলথ গেমসে বাংলাদেশের সোনা জেতার কৃতিত্ব রয়েছে। কিন্তু অলিম্পিক মানেই পদকশূন্য। ১৯৭২ ও ’৮০ সালে প্রতিনিধি পাঠালেও অলিম্পিকে বাংলাদেশের ক্রীড়াবিদরা মূলত অংশ নিচ্ছেন ’৮৪ সাল থেকে। এখন পর্যন্ত পদক দূরের কথা, হিটেও টিকতে পারেন না। শুধু যাওয়া-আসার মধ্যে সীমাবদ্ধ রয়েছে।
বিশ্বকাপ ফুটবলের চূড়ান্ত পর্বে সুযোগ পাওয়া যেমন স্বপ্নের ব্যাপার, তেমন অলিম্পিকে পদক জেতাটা স্বপ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। এবারও বাংলাদেশের ক্রীড়াবিদরা লড়বেন। গলফার সিদ্দিকুরকে ঘিরে কিছুটা আশার সঞ্চার হলেও পদকশূন্য বাংলাদেশ ফিরে আসবে, এটা নিশ্চিত বলা যায়। কিন্তু এভাবে আর কত দিন? বাংলাদেশ অলিম্পিক সংস্থার কর্মকর্তারা বলেন, ‘পদক জেতাটা চাট্টিখানি কথা নয়। বড় বড় ক্রীড়াবিদের সঙ্গে খেলে অভিজ্ঞতা বাড়াচ্ছে এটাই বড় প্রাপ্তি।’ একই গান আর কত?
খেলাধুলার উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী সহযোগিতা করছেন। বলেছেন, সাফল্যের জন্য যা যা দরকার তিনি সবই দিতে প্রস্তুত। এর পরও কর্মকর্তারা অলিম্পিকের জন্য পর্যাপ্ত ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করেন না কেন? সাফল্য পেতে কী ধরনের ট্রেনিংয়ের দরকার তা কি সরকারের কাছে তুলে ধরা হয়েছে? অলিম্পিক এলেই যেন কর্মকর্তারা ঈদ উৎসবে মেতে ওঠেন। কারণ বিনা পয়সায় বিদেশ ভ্রমণের সুযোগ আর লাগেজ ভরে মার্কেটিং। এই হচ্ছে বাংলাদেশের অবস্থা। দেশের ক্রীড়াবিদরা আক্ষেপ করে বলেন, ‘নামকরা ক্রীড়াবিদরা দুই বছর আগে অনুশীলনে নেমে পড়েন। কিন্তু আমাদের কিছুই করার নেই।’ এ ক্ষেত্রে আবার অলিম্পিক কমিটির বক্তব্য হচ্ছে, ‘আমরাও চাই ক্রীড়াবিদরা দীর্ঘমেয়াদি ট্রেনিং নিয়ে অলিম্পিকে যাক।’ কিন্তু কীভাবে সম্ভব? আমাদের কোন ক্রীড়াবিদ অলিম্পিকে যাবে তা তো নিশ্চিত হতে পারি না। ওয়াইল্ড কার্ড এলে আমরা নিশ্চিত হব এটা শুধু বাংলাদেশ নয়, অনেক দেশেই হয়। অযথা দোষ দিয়ে লাভ নেই।