শিরোনাম
সোমবার, ২ জানুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

চ্যালেঞ্জের বছর ফুটবলে

ঘরের মাঠে বঙ্গবন্ধু কাপ সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ

ক্রীড়া প্রতিবেদক

চ্যালেঞ্জের বছর ফুটবলে

ফুটবলে এই হতাশা কাটবে কি

২০১৬ সালে ফুটবলে কোনো চমক বা সাফল্য ছিল না। প্রাপ্তি বলতে এএফসি কাপ বাছাইপর্বে মেয়েদের গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে চূড়ান্তপর্বে উঠা। কিশোরী ফুটলাররা দারুণ পারফরম্যান্স প্রদর্শন করেছে। সত্যি বলতে কি পুরুষ ফুটবলার যেখানে ব্যর্থতায় হাবুডুবু খেয়েছে। সেখানে বিজয়ের নিশানা উড়িয়েছে মেয়েরাই। গত কয়েক বছর ধরেই পুরুষ ফুটবলে কোনো সুখবর নেই। কোনোভাবেই ঘুরে দাঁড়াতে পারছে না। তবে দেশের ফুটবল ইতিহাসে এবারের মতো বিপর্যয় আর কখনো ঘটেনি। ২০১৫ সালে বঙ্গবন্ধু গোল্ড কাপে রানার্স আপ হলেও গত বছর দুর্বল প্রতিপক্ষ থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশ ফাইনালেই উঠতে পারেনি। ব্যর্থতার জন্য তদন্ত কমিটিও গঠন হয়। শৃঙ্খলা ভাঙার অপরাধে অধিনায়ক মামুনুলসহ চার ফুটবলারকে বিভিন্ন মেয়াদে নিষিদ্ধ করা হয়। পরে অবশ্য মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই তা প্রত্যাহার করে নেয় বাফুফে।

শাস্তি, একাধিক কোচ বদল অনেক নাটকই হয়েছে। তবে সবকিছুকে হারিয়ে গেছে দুর্বল ভুটানের কাছে হার। মালদ্বীপের বিপক্ষেও প্রস্তুতি ম্যাচে গোলের বন্যায় ভেসে যায়। এ নিয়ে ততটা সমালোচনা হয়নি। কারণ মালদ্বীপের কাছে হারটা এখন আর অপ্রত্যাশিত নয়। কিন্তু ভুটান কোনো সময়ে পেরে উঠতে পারছিল না। ৯০ দশক পর্যন্ত তাদেরকে নিয়ে ছেলেখেলা খেলত বাংলাদেশ। এমনকি গত সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে গ্রুপপর্ব থেকে বিদায় নিলেও ভুটানকে ঠিকই ৩-০ গোলে পরাজিত করেছিল। সেই ভুটানই বাংলাদেশকে নিয়ে ছেলেখেলা খেলেছে! এশিয়ান কাপ প্রাক বাছাই পর্বে ঢাকায় গোল শূন্য ড্র করেছিল। থিম্মুতে অ্যাওয়ে ম্যাচে ১-৪ গোলে বিধ্বস্ত হয়েছে বাংলাদেশ। এই হারে গোটা দেশবাসী ক্ষুব্ধ। ফুটবলে এতটা করুণ দশা। এখন যেকোনো সাফল্য স্বপ্নে পরিণত হয়েছে। ব্যর্থতা ঝেড়ে ফেলে নতুন বছরে ফুটবলাররা দেশবাসীকে কোনো সুখবর এনে দিতে পারবে কি? ২০১৭ সালে বাংলাদেশের তেমন আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট নেই বললেই চলে। মার্চে বঙ্গবন্ধু গোল্ড কাপ ও ডিসেম্বরে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ। ফেব্রুয়ারিতে চট্টগ্রামে শেখ কামাল আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট। তা হবে ক্লাবভিত্তিক। সমালোচনা থামবে যদি নতুন বছরে বাংলাদেশ দুটো টুর্নামেন্টে শিরোপা জিততে পারে। বঙ্গবন্ধু কাপতো বাফুফের নিজস্ব টুর্নামেন্ট। সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ, সাউথ এশিয়ান ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের। দুটো টুর্নামেন্টই বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত হবে। ঘরের মাঠে দর্শক ও পরিবেশ সব কিছুই থাকবে বাংলাদেশের অনুকূলে। এরপরও কী পারবে বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধু গোল্ড কাপে কখনো চ্যাম্পিয়ন হতে পারেনি। সাফ চ্যাম্পিয়ন হয় একবারই, ২০০৩ সালে ঢাকায়। বড় চ্যালেঞ্জ নিয়ে ঘরের মাঠে নামতে হবে বাংলাদেশকে। দুই টুর্নামেন্টে শিরোপা মানে নিস্তেজ ফুটবলে প্রাণ ফেরা।

ফুটবলকে চাঙা করতে বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন চার বছরের ক্যালেন্ডার ঘোষণা করেছেন। অনেক কর্মসূচি দেওয়া হয়েছে। তিন মেয়াদে দেশের ফুটবলে অভিভাবকের দায়িত্ব পালন করছেন সালাউদ্দিন। উন্নয়নে অনেক প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। কিন্তু তার সিকি ভাগও পূরণ করতে পারেননি। ফুটবলে এমন অবস্থার জন্য মূলত বাফুফেকে দায়ী করা হয়েছে। চার বছরের ক্যালেন্ডার বাস্তবায়ন হবে কি সেটাই এখন প্রশ্ন। ২০১৭ সালে ক্যালেন্ডারের কর্মসূচি আলোর মুখ দেখে কিনা সেটাই এখন দেখার বিষয়।

অনেক অভিযোগ বাফুফের বিরুদ্ধে। নতুন বছরটা নিঃসন্দেহে চ্যালেঞ্জের। তবে বছরের শুরুতেই বড় ধরনের সাফল্য আসার সুযোগ এসেছে ফুটবলে। শিলিগুড়িতে অনুষ্ঠিত সাফ মহিলা ফুটবলে বাংলাদেশ গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে সেমিতে উঠেছে। আজ মালদ্বীপের বিপক্ষে ফাইনালে উঠার লড়াই। চ্যাম্পিয়ন হলে নতুন ইতিহাস গড়বে মেয়েরা।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর