সোমবার, ১ মে, ২০১৭ ০০:০০ টা

নতুন মৌসুমে নতুন রূপে শেখ জামাল

ক্রীড়া প্রতিবেদক

নতুন মৌসুমে নতুন রূপে শেখ জামাল

বাফুফে কর্মকর্তার হাতে শেখ জামাল ধানমন্ডি ফুটবলারদের নাম জমা দিচ্ছেন ক্লাবের অফিসিয়ালরা

ফুটবলে বড় দলগুলোর দৃষ্টি ছিল তারকাদের দিকে। তাদের ছাড়া দলই চলতো না। তারকাদের চোখ জুড়ানো নৈপুণ্যে শিরোপা জেতাও সম্ভব হয়েছে। বিশেষ করে মোহামেডান-আবাহনীর সাফল্যের পেছনে তারকারাই মুখ্য ভূমিকা রেখেছে। মুক্তিযোদ্ধা, শেখ জামাল ও শেখ রাসেলের শিরোপা জয়েও দেশ পরিচিত ফুটবলাররা অবদান রাখেন। এখন আর সেই অবস্থা নেই। তারকাদের হতাশাজনক পারফরম্যান্সে বিশাল বাজেটে দল গড়েও সাফল্য আসছে না। জাতীয় দলের লাগাতার ব্যর্থতা তারকাদের ডিমান্ড কমিয়ে দিয়েছে। এ জন্য আসছে মৌসুমে বড় দলগুলো তরুণদেরই প্রাধান্য দিচ্ছে।

শেখ জামাল ধানমন্ডি দেশের অন্যতম সেরা ক্লাব। তিনবার পেশাদার লিগ ছাড়াও ফুটবলে অসংখ্য ট্রফি জেতার রেকর্ড রয়েছে তাদের। বিদেশের মাটিতেও প্রাপ্তি কম নয়। গতকাল তারা ঘরোয়া মৌসুমের দলবদলের কাজ সম্পন্ন করেছে। কিছুটা ব্যতিক্রম লক্ষ্য করা গেছে তাদের দলবদলে। বাফুফে ভবনে কোনো খেলোয়াড় আসেননি। দুই অফিসিয়াল মো. আবুল কালাম আজাদ ও শহিদুল ইসলাম তিনজন বিদেশিসহ ৩৪ জন খেলোয়াড়ের নাম জমা দিয়েছেন।

ইয়াসিন, কেস্ট ও দিদার ছাড়া দলে তেমন অভিজ্ঞ খেলোয়াড় নেই। তারকা বলতে যা বোঝায় তালিকার সেই মানের খেলোয়াড়ও নেই। তাহলে দল শিরোপা ফাইট দেবে কীভাবে? আসলে তারকা থাকলেই শিরোপা জেতা যাবে এর কোনো নিশ্চয়তা নেই। গত মৌসুমে বিভিন্ন দলে এক ঝাঁক তরুণ মাঠ কাঁপিয়েছেন। এমন পরিচিত খেলোয়াড়কে খুঁজে পাওয়া যাবে না যে বড় দলের উপকারে এসেছে। জাতীয় দলে ফ্লপ, ক্লাব ফুটবলেও হতাশাজনক পারফরম্যান্স। তাহলে এদের পেছনে লাখ লাখ টাকা ব্যয় করে লাভ কি? আস্থা বা ভরসা এখন তরুণদেরই ওপরই রাখা যায়। শেখ জামালের সভাপতির দায়িত্ব নিয়েছেন দেশের শীর্ষ শিল্প প্রতিষ্ঠান বসুন্ধরা গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান সাফওয়ান সোবহান। বয়সে তরুণ হলেও তাকে পেয়ে ক্লাব উজ্জীবিত। ক্লাবের সাবেক সভাপতি ও বর্তমান গভর্নিং বডির চেয়ারম্যান অভিজ্ঞ সাংগঠক মনজুর কাদের বলেন, ‘সাফওয়ান শুধু শেখ জামাল নয়, দেশের ফুটবল ও অন্য খেলাধুলায় বড় ভূমিকা রাখবেন।’ বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান অনেক আগে থেকেই দেশের আরেক জনপ্রিয় ক্লাব শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্রের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন। ঢাকার মাঠে এক সঙ্গে দুই ভাইয়ের মাঠে নামার অনেক উদাহরণ দেওয়া যাবে। কিন্তু দুই ভাই দেশের বড় দুই ক্লাবের দায়িত্বে। যা দেশের ক্রীড়াঙ্গনে নতুন ইতিহাসই বলা যায়।

তরুণ নেতৃত্ব আর দলে তরুণদের প্রাধান্য নতুন মৌসুমে নতুন রূপেই মাঠে নামবে শেখ জামাল ধানমন্ডি। যে মানের দল গড়া হয়েছে তাদের দিয়েই শেখ জামালের ট্রফি জেতা সম্ভব। মাসুম, মিতুল, নাইম, আবসার সোহেল, মানিক, জাবেদ, তারা, ওমরদের নিয়ে অনেক আগেই অনুশীলনে নেমে পড়েন কোচ জোসেফ আফুসি। জোসেফের মেধা নিয়ে কারও সংশয় নেই। তার প্রশিক্ষণে শেখ জামাল অনেক ট্রফি জিতেছে। সুতরাং তার যাচাই-বাছাই কেমন হতে পারে এ নিয়ে নতুন করে কিছুর বলার নেই। আফুসি নিজেই বলেছেন ‘ওরা অনুশীলনে আমার মন জয় করেছে। ফুটবলে মুল বিষয়টি বল কন্ট্রোল ও গতি যা সবই পেয়েছি তাদের ভিতর। তবে অনুশীলন ও মাঠের লড়াইতো এক নয়। মাঠে নিজেদের ঠিকমতো তুলে ধরতে পারলে অবশ্যই সাফল্য সম্ভব। গতবার তো এরাই বিভিন্ন দলে মাঠ মাতিয়েছেন। এবারতো শেখ জামালে সুন্দর পরিবেশ ও দক্ষ ম্যানেজমেন্ট পেয়েছে। আমার বিশ্বাস এবার শেখ জামাল থেকেই অনেকেই তারকাখ্যাতি পেয়ে যাবে। শিরোপার গ্যারান্টি কেউ দিতে পারবে না। তবে আমি আমার খেলোয়াড়দের ওপর আস্থা রেখেই বলছি এই দল নিয়েই সাফল্য অর্জন করা সম্ভব।’

যারা খেলবেন

মো. মিতুল হোসেন, এসএম সায়মুল ইসলাম মাসুম, মো. নাইম, মো. হোসাইন সুজন, মো. ইয়াসিন খান, কেস্ট কুমার বোস, দিদারুল হক, খান মো. তারা, মো. রফিকুর রহমান, মো. আনিসুর আলম, আরিফুল ইসলাম, মো. আলাউদ্দিন, মো. শ্যামল মিয়া, মো. শাকিল আহমেদ, জাহেদ পারভেজ চৌধুরী, মো. আলী হোসেন, জাকির হোসেন জিকু, রাকিব সরকার, মাসুদ উদ্দিন আহমেদ, আরিফ হাওলাদার, এমরান হোসেন রুবেল, মাজহারুল ইসলাম, সারোয়ার হোসেন নিপু, মেজবাউল হক মানিক, ওমর ফারুক বাবু, শফিউল ইসলাম তারেক, নুর রহমান, জাবেদ খান, সোহেল মিঞা, নুরুল আবসার ও এনামুল হক। বিদেশি : ওডোইন রাফায়েল, মমদো বাহ, সলোমন কিং।

সর্বশেষ খবর