রবিবার, ২৮ মে, ২০১৭ ০০:০০ টা

বৃথা গেল তামিমের সেঞ্চুরি

প্রস্তুতি ম্যাচে বাংলাদেশের হার

রাশেদুর রহমান

বৃথা গেল তামিমের সেঞ্চুরি

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আগে বার্মিংহামের এজবাস্টনে পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচে ১০২ রানের নান্দনিক ইনিংস খেলেন ড্যাসিং ওপেনার তামিম ইকবাল —ক্রিকইনফো

তামিম ইকবাল, ইমরুল কায়েসরা পেরেছেন। কিন্তু ব্যর্থ হয়েছেন মাশরাফি, তাসকিন, সাকিবরা। ব্যাট হাতে সেঞ্চুরি করেছেন তামিম, হাফসেঞ্চুরি করেছেন ইমরুল। দুজনের ব্যাটিংয়ে পর্বতসমান স্কোর ৩৪১ রান করে বাংলাদেশ। কিন্তু মাশরাফি, তাসকিন, সাকিবদের ব্যর্থতায় বার্মিংহামের এজব্যাস্টনে জিতে মাঠ ছাড়তে পারল না টাইগাররা। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির প্রস্তুতি ম্যাচে ৩ বল আগেই পাকিস্তানের কাছে হেরে গেছে ২ উইকেটে। শেষ ওভারে জয়ের জন্য পাকিস্তানের দরকার ছিল ১৩ রান। ৯ নম্বরে ব্যাট করতে নেমে ফাহিম আশরাফ এক ছক্কা ও এক চারে মাশরাফির ওভারে তুলে নেন জয়ের প্রয়োজনীয় রান। ফলে ৩৪২ রানের টার্গেট দিয়েও হেরে গেছে বাংলাদেশ।

আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড ও নিউজিল্যান্ড। কিছু দিন আগে ত্রিদেশীয় সিরিজে নিউজিল্যান্ডকে হারিয়েছে বাংলাদেশ। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে এই দলটাকে হারাতেই পারেন টাইগাররা। ইংল্যান্ড আর অস্ট্রেলিয়াকেও হারানোর অভিজ্ঞতা রয়েছে বাংলাদেশের। তবে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির মতো টুর্নামেন্টে বিশ্বসেরা দলগুলোকে হারানোর জন্য নিজেদের সেরা প্রস্তুতিটাই প্রয়োজন ছিল। গতকাল পাকিস্তানের বিপক্ষে ব্যাটিংয়ে ঠিক সেই কাজটাই করলেন তামিমরা। টস জিতে ব্যাটিং নিয়ে শুরু থেকেই পাকিস্তানের ওপর হামলে পড়েন তামিম-সৌম্য। তবে মাত্র ১৯ রান করে দলীয় ২৭ রানে সাজঘরে ফেরেন সৌম্য। অবশ্য রানের গতি কমেনি একটুও। ঝড় তোলেন তামিম ইকবাল। তিনি জুনায়েদ, হাসান আলি আর শাদাব খানদের বোলিংকে সাধারণ মানে নামিয়ে আনেন। মাত্র ৯৩ বলে ৯টি চার ও ৪টি ছক্কার মারে ১০২ রান সংগ্রহ করেন চট্টগ্রামের ছেলে তামিম ইকবাল। সেঞ্চুরির পর তামিম ইকবাল আউট হলেও রানের চাকা চলতে থাকে মুশফিক আর সাকিবের ব্যাটে। অবশ্য এর মধ্যে ইমরুল কায়েস ৬২ বলে ৬১ রান সংগ্রহ করে দলকে বড় স্কোরের পথে এগিয়ে দেন। তিনি ৮টি চার মেরেছেন এই সংগ্রহের পথে। মুশফিকুর রহিম ৪৬ রান করে আউট হন। দলের রান তখন ২৪৭। পরের কাজটা করেন সাকিব, মাহমুদুল্লাহ ও মোসাদ্দেক। সাকিব আল হাসান ২৭ বলে ২৩, মাহমুদুল্লাহ ২৪ বলে ২৯ ও মোসাদ্দেক ১৫ বলে ২৬ রান করেন। নির্ধারত ৫০ ওভারে বাংলাদেশ ৯ উইকেট হারিয়ে ৩৪১ রানের বিশাল সংগ্রহ গড়ে।

দলীয় একটা পারফরম্যান্স দেখালেন টাইগাররা। একজনের ওপর নির্ভর করে বড় স্কোর গড়েননি। এটাই সবচেয়ে ইতিবাচক দিক হয়ে উঠতে পারে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে। ওপেনার থেকে শুরু করে লোয়ার অর্ডার ব্যাটসম্যানেরা পর্যন্ত নিজেদের দায়িত্বটা ঠিকঠাক পালনের চেষ্টা করেছেন। এ কারণেই মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যানদের ব্যাট থেকে খুব বেশি রান না এলেও বড় স্কোর করতে পেরেছে বাংলাদেশ। এই ধারা চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ধরে রাখলে প্রতিপক্ষদের টপকে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছতে পারবে বাংলাদেশ, এই আশা এখন করাই যায়!

আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে নিজেদের প্রথম ম্যাচে ইংল্যান্ডের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। লন্ডনের ওভালেই হবে এই ম্যাচ। এর পরের ম্যাচটাও ওভালেই হবে অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচটা হবে কার্ডিফের সোফিয়া গার্ডেনসে। গতকালের ব্যাটিং দিয়ে ভক্তদের স্বপ্ন বাড়িয়ে দিয়েছেন টাইগাররা। এখন পর্যন্ত আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে তেমন কোনো সাফল্য দেখাতে পারেনি বাংলাদেশ। সর্বশেষ তারা এই টুর্নামেন্ট খেলেছে ২০০৬ সালে। এরপর ২০০৯ ও ২০১৩ সালে এ টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত হলেও বাইরে ছিলেন টাইগাররা। আবারও আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ফিরে ভালো কিছু করে দেখাতে পারবে কি বাংলাদেশ? ক্রিকেটে মাশরাফি বাহিনীর সাম্প্রতিক ফর্ম আশা বাড়িয়েছে ভক্তদের। দেখা যাক, সেই আশা এবার পূরণ হয় কিনা!

সংক্ষিপ্ত স্কোর

বাংলাদেশ : ৩৪১/৯, ৫০ ওভার (তামিম ১০২, সৌম্য ১৯, ইমরুল ৬১, মুশফিক ৪৬, সাকিব ২৩, মাহমুদুল্লাহ ২৯, মোসাদ্দেক ২৬)।

পাকিস্তান : ৩৪২/৮, ৪৯.৩ ওভার ( শেহজাদ ৪৪, হাফিজ, ৪৯, মালিক ৭২, ফাহিম ৬৪*।  মাশরাফি ১/৬৮, তাসকিন ১/৮০, শফিউল ১/৪৬, সৌম্য ০/২৫, সাকিব ১/৪১, মোসাদ্দেক ১/২৯, সানজামুল ০/১৭, মেহেদী ২/৩০)। ফল : পাকিস্তান ২ উইকেটে জয়ী

সর্বশেষ খবর