শুক্রবার, ১৬ জুন, ২০১৭ ০০:০০ টা

হলো না স্বপ্নপূরণ

আসিফ ইকবাল

ছবির মতো সুন্দর শহর বার্মিংহাম। পর্যটকদের পছন্দের শহরও। সর্বকালের অন্যতম সেরা সাহিত্যিক সেক্সপিয়রের জন্মস্থান স্ট্যাটফোর্ডের দূরত্ব বার্মিংহামের সেন্টারপয়েন্ট থেকে মাত্র ১ ঘণ্টার রাস্তা। পর্যটকের শহর, ক্যাডবেরী চকলেটের শহর বার্মিংহাম কিন্তু ক্রিকেটেরও শহর। শহরটির একমাত্র ক্রিকেট ভেন্যু এজবাস্টন। ক্যারিবীয় ক্রিকেট যুবরাজ ব্রায়ান লারা ৫০১ রানের অমর এক ইনিংস খেলেছিলেন এখানে। এই ইনিংসটিই ক্রিকেটের পাতায় অমরত্ব দিয়েছে এজবাস্টনকে। সেই এজবাস্টনের দিকে গতকাল নজর ছিল গোটা বাংলাদেশের। ১৬ কোটি ক্রিকেটপ্রেমীর চোখ ছিল এজবাস্টনে বাংলাদেশ-ভারত সেমিফাইনাল ম্যাচের দিকে। এই মুহূর্তে ক্রিকেট বিশ্বের আকর্ষণীয় ম্যাচগুলোর তালিকার শীর্ষে থাকছে দুই প্রতিবেশীর লড়াই। দর্শক উত্তেজনায় সবচেয়ে চিত্তাকর্ষক ম্যাচগুলোর একটি দুই দলের ম্যাচ। গতকালের সেমিফাইনাল ছিল আবার দুই দলের ইতিহাস গড়ার হাতছানির ম্যাচ। যদি বাংলাদেশ জিতে যায়, তাহলে প্রথমবারের মতো আইসিসির কোনো টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলবেন মাশরাফিরা। লিখবেন ইতিহাস। যা হবে বাংলাদেশ ক্রিকেট ইতিহাসের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি। বিপরীতে ভারত ফাইনালে উঠলে, সেটাও হবে ইতিহাস লেখার হাতছানির ম্যাচ। কারণ আর কিছুই নয়, প্রথম দল হিসেবে টানা শিরোপা জিতবে। গতকাল এজবাস্টনকে এক সুতোয় বেঁধেছিলেন কবি গুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। ৭৬ বছর আগে ইহলোকের মায়া ত্যাগ করেছেন বিশ্বকবি। অথচ কাল এজবাস্টনে ছিলেন তিনি। ছিলেন বাংলাদেশ ও ভারতের প্রায় দেড়শ কোটি জনতার হৃদমন্দিরে। দুই দেশের জাতীয় সঙ্গীতের রচয়িতা কবি গুরু। যা বিশ্ব ইতিহাসে বিরল। বিশ্বকবির লেখা জাতীয় সঙ্গীত যখন গেয়েছেন মাশরাফি, সাকিব, তামিম, মুশফিক, মাহমুদুল্লাহ, মুস্তাফিজরা, তখন ক্রিকেটারদের সঙ্গী হয়েছেন গোটা দেশের ১৬ কোটি ক্রিকেটপ্রেমী। ১৯৮৬ সাল থেকে ওয়ানডে খেলছে বাংলাদেশ। ১৬ কোটি মানুষের প্রত্যাশা ছিল ভারতকে হারিয়ে বাংলাদেশ স্বপ্নের ফাইনালে যাবে। চ্যাম্পিয়নের ট্রফি নিয়ে দেশে ফিরবেন মাশরাফিরা। সেই স্বপ্ন আর পূরণ হলো না। ভারতের শক্তিশালী ব্যাটিং লাইনের কাছে শোচনীয় হার মেনেছে। টিভিতে যারা ধৈর্যসহকারে খেলা দেখছিলেন অনেকেই কেঁদেছেন। এমন সুযোগ আর কি পাওয়া যাবে। আসলে সেমিফাইনালে টাইগাররা টাইগার রূপ ধারণ করতে পারেনি। ব্যাটিং ও বোলিংয়ে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর