শিরোনাম
বৃহস্পতিবার, ২২ জুন, ২০১৭ ০০:০০ টা

জার্মান কোচের কাণ্ড

এশিয়া কাপ হকির প্রস্ত্তুতি

মেজর চাকলাদার (অব.)

জার্মান কোচের কাণ্ড

জার্মান কোচ অলিভার কার্টেজ

অলিভার কার্টেজ। জার্মান নাগরিক। কোচ হিসেবে নিয়োগ পান গত বছরের মাঝামাঝিতে। এশিয়া কাপ হকির ক্যাম্প শুরু হলেও হঠাৎ তিনি উধাও হয়ে গেলেন। উধাও এ জন্য উল্লেখ করা হল যে, তিনি বিদেশে চলে যাবার ১০/১২ দিন আগে থেকে মোবাইল বন্ধ রেখেছিলেন এবং কোচিংএ আসছিলেন না। এমতাবস্থায় হকি ফেডারেশন বাধ্য হয়েই তাকে অব্যাহতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। এরপরই জার্মান কোচ হঠাৎই আবার ঢাকাতে চলে আসেন এবং তার ব্যক্তিগত সমস্যা সমাধানের জন্যই ঢাকা ছেড়ে ছিলেন বলে সবাইকে জানান।

গত বছর ঢাকায় অনূর্ধ্ব-১৮ এশিয়া কাপে কার্টেজ প্রশিক্ষণ দেন। সেখানে হংকং, সিঙ্গাপুর, চাইনিজ তাইপে এই দলগুলোর বিরুদ্ধে জয়ী হওয়াতে তার মেধার খুব একটা পরীক্ষা হয়নি। বয়সভিত্তিক খেলা। এই অনূর্ধ্ব ১৮ বয়সের খেলাতে আমরা রানার্সআপ হই। চ্যাম্পিয়ন হয় ভারত। তবে বয়সভিত্তিক খেলাতে আমরা সব সময়ই যথেষ্ট ভালো।

মার্চ মাসে ওয়ার্ল্ড হকি লিগে আমরা পাঁচ নম্বর হই। এখানেই আমাদের সব চাইতে বড় পরীক্ষা ছিল এবং অলিভার কার্টেজ তার যোগ্যতাকে সন্দেহের মধ্যেই ফেলে দেয়। আমাদের দেশের কোচ হারুন, ধারাবাহিক ভাবেই একজন সফল কোচ। বাংলাদেশ হকি দল তার কোচিংএ এ রকম সফলতা বহুবার দেখিয়েছে। অলিভার কার্টেজ দল নির্বাচনেও হস্তক্ষেপ করার ঔদ্ধত্য দেখিয়েছেন এবং সিলেকশন কমিটি এড়িয়ে নিজের পছন্দের খেলোয়াড়ের লিষ্টও তৈরি করে তা ফেডারেশনে জমা করেছেন বলে জানা যায়। ভারতে থাকার সময় তিনি পিটারের অধীনে ছিলেন এবং তার সঙ্গেও সমস্যা করেছেন। ওমান এবং তুরস্কে হকি কোচিংএ  তিনি সমস্যা করেছেন বলে জানা যায়।

জাতীয় দলের অধিনায়ক জিমিকে এবার এশিয়া কাপের ক্যাম্প থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে শৃঙ্খলা ভঙ্গের কারণে। তাহলে জার্মান কোচকে বহিষ্কার করা হবে না কোন যুক্তিতে। ফেডারেশন সঠিক সিদ্ধান্তই নেয় তাকে অব্যাহতি দিয়ে। শোনা যাচ্ছে অলিভারকেই এশিয়া কাপের কোচ করতে উঠে পড়ে লেগেছে একটি মহল। জানি না এটা কতটুকু সত্য। কিন্তু যে কোচ ফেডারেশনের কমান্ড মানেন না তাকে দায়িত্ব দিলে কি দল উপকৃত হবে। বরং সমালোচিত হবে ফেডারেশন। কঠোরতা থেকে সরে এসে আবেগতাড়িত হবার কোনো প্রয়োজন নেই। শৃঙ্খলা ভাঙ্গলে তিনি যেই হোক না কেন শাস্তি পেতেই হবে। অলিভারকে নিয়ে আবেগে না জড়িয়ে ফেডারেশন সঠিক সিদ্ধান্তই নিয়েছে। এখন সিদ্ধান্ত বদল করলে দেশের হকির উপকারের চেয়ে অপকারই হবে বেশি।

লেখক : জাতীয় হকি দলের সাবেক অধিনায়ক এবং জাতীয় পুরস্কার প্রাপ্ত ক্রীড়াবিদ।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর