বৃহস্পতিবার, ২৯ জুন, ২০১৭ ০০:০০ টা

হারিয়ে গেছে ক্রীড়াঙ্গনের ঈদ উৎসব

ক্রীড়া প্রতিবেদক

ক্রীড়াঙ্গনে ঈদ উৎসব। কথাটি শুনে অনেকে হয়তো অবাক হয়ে যাবেন। কেননা পবিত্র ঈদুল ফিতরকে ঘিরে ক্রীড়াঙ্গনে ঈদ উৎসব হয়েছে তা গত ত্রিশ বছরেও দেখা যায়নি। অথচ এক সময়ে ক্রীড়াঙ্গনে জমজমাট ঈদ উৎসব হতো। ফুটবল, কাবাডি, অ্যাথলেটিকস স্টেডিয়াম আঙ্গিনায় লাঠি খেলার ছড়াছড়ি। ঐতিহাসিক পল্টন ময়দানে ঈদের পরের দিনই খেলা হতো। এখন যেমন ঈদের প্রধান জামাত হাইকোর্ট ময়দানে অনুষ্ঠিত হয়। আশির দশক পর্যন্ত পল্টন ময়দানে (বর্তমান হকি স্টেডিয়ামে) অনুষ্ঠিত হতো। সত্তর দশকে ঈদের জামাত পড়াতেন বর্ষিয়ান রাজনীতিবিদ মওলানা আবদুর রশিদ তর্কবাগিশ। পাকিস্তান আমলে পল্টন ময়দানে ঈদের জামাতের আগে ভোর বেলায় তোপধ্বনি করে ঢাকাবাসীর পক্ষে ঈদকে স্বাগতম জানাতেন খ্যাতনামা ক্রীড়া সংগঠক মুশতাক। তিনি ১৯৭১ সালে আজাদ বয়েজ ক্লাবে পাক সেনাদের হাতে নির্মমভাবে নিহত হন। ১৯৭৬ সালের ঘটনা। ঈদের পরের দিনই তত্কালীন ঢাকা স্টেডিয়ামে প্রীতি ফুটবল ম্যাচ। চ্যাম্পিয়ন ঢাকা মোহামেডান অংশ নিয়েছিল বাছাই একাদশের বিপক্ষে। ঈদের পরের দিন হলেও ম্যাচ দেখতে পুরো গ্যালারি ভরে গিয়েছিল। ম্যাচটি ১-১ গোলে ড্র হয়। ওই সময় ব্রাদার্স ইউনিয়নে খেলা স্ট্রাইকার মোহসিনের গোলে এগিয়ে যায় বাছাই একাদশ। মোহামেডানের পক্ষে ম্যাচে সমতা ফেরান কে? নাম শুনলে অনেকেই অবাক হয়ে যাবেন। গোলরক্ষক শহিদুর রহমান শান্টু তোতার ক্রসে চমত্কার হেডে গোল করেন। প্রশ্ন উঠতে পারে গোলরক্ষক আবার হেডে গোল করেন কিভাবে? হ্যাঁ, দ্বিতীয়ার্ধে শান্টু হাতের গ্লাভস খুলে স্ট্রাইকার পজিশনে খেলেন। আর তারই গোলে ম্যাচ ১-১ গোলে ড্র হয়।

প্রীতি ম্যাচে সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার পান মোহামেডানের ডিফেন্ডার বাটু ও বাছাই একাদশের মোহসিন। পুরস্কার হিসেবে দুজনকে ফ্রি টিকিটে থাইল্যান্ড পাঠানো হয়। ফুটবল কেন আউটার স্টেডিয়ামে কাবাডি ও লাঠি খেলাতেও উপচেপড়া দর্শকের ভিড় হতো। এখন যা অবিশ্বাস্যই মনে হবে। ক্রীড়াঙ্গনে যে ঈদ উৎসব হতো তা বর্তমান প্রজন্মের ক্রীড়ামোদীদের বিশ্বাস করানো মুশকিল হবে।

সর্বশেষ খবর