সোমবার, ৩ জুলাই, ২০১৭ ০০:০০ টা

হকির নির্বাচনে ঐক্যের আভাস

এশিয়া কাপকে গুরুত্ব দিয়ে সরকারের প্রভাবশালী মহলও তাই চাচ্ছে। বিসিবি সভাপতি পাপনকেই সমঝোতার দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে

ক্রীড়া প্রতিবেদক

হকির নির্বাচনে ঐক্যের আভাস

নির্বাচনী তফসিল এখনো ঘোষণা হয়নি। তবু হকি ফেডারেশনের নির্বাচন ঘিরে উত্তেজনা শুরু হয়ে গেছে। আগস্টে নির্বাচন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। একাধিক পদে নির্বাচন, তবে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু সাধারণ সম্পাদককে ঘিরে। এখন পর্যন্ত খাজা রহমত উল্লাহ্ ও রশীদ শিকদারের এই পদে প্রার্থী হওয়ার উজ্জ্বল সম্ভাবনা রয়েছে। দুজন স্বীকারও করছেন সাধারণ সম্পাদক পদে লড়াই করবেন। ভোট চাইতে তারা কাউন্সিলরের কাছেও যাচ্ছেন। সাজেদ আদেলও সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী হতে পারেন। পোস্টারও ছাপিয়েছেন তিনি। অবশ্য যত আলোচনা রহমত উল্লাহ্ ও রশীদকে ঘিরে। নির্বাচনে দুটো প্যানেলও হতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ ফেডারেশন হওয়ায় হকির নির্বাচনকে ঘিরে হট্টগোলের আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। গত নির্বাচনেও দুটি প্যানেল ছিল। এক প্যানেলে খাজা রহমত উল্লাহ্ ও আরেক প্যানেলে শহীদুল্লাহ্ আল মুনীর সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী হন। শেষ পর্যন্ত মুনীরের প্যানেল নির্বাচন বয়কট করায় রহমত উল্লাহ্ বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতে যান। ক্রীড়াঙ্গনে নির্বাচন বয়কটের ঘটনা আগেও ঘটেছিল। কিন্তু গতবার বয়কটকারীরা যে কাণ্ড ঘটায় তাতে দেশের হকিতে অনিশ্চয়তা নেমে এসেছিল। কোনো অবস্থায় তারা রহমত উল্লাহেক সাধারণ সম্পাদক মেনে নিতে পারেননি। মোহামেডানের মতো ঐতিহ্যবাহী ক্লাবসহ পাঁচ ক্লাব ঘোষণা দেয় রহমত উল্লাহ্ সাধারণ সম্পাদক থাকলে হকির কোনো কর্মসূচিতে অংশ নেবে না। করেছেও তাই, দেশের ঘরোয়া আসরের প্রধান আকর্ষণ প্রিমিয়ার লিগও বয়কট করে। তবে তাদের ছাড়া লিগ ঠিকই মাঠে গড়ে।

অন্ধকারে ঢেকে যায় হকি। পরের মৌসুমেও পাঁচ ক্লাব তাদের সিদ্ধান্তের প্রতি অটল থাকে। এমনকি হকির আরেক জনপ্রিয় ক্লাব ঊষাও লিগ বয়কটের সিদ্ধান্ত নেয়। ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বীরেন শিকদার, উপমন্ত্রী আরিফ খান জয় একাধিকবার বয়কট করা ক্লাবের সঙ্গে বৈঠক করেন। সমাধানের পথ খুঁজে পাওয়া যায়নি। শেষ পর্যন্ত ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের হস্তক্ষেপে সমস্যার সমাধান হয়। রহমত উল্লাহেক সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে সহ-সভাপতি করা হয়। দেশের হকির কিংবদন্তি আবদুস সাদেক অপরাগতা প্রকাশ করলেও সরকারের উচ্চ মহলের অনুরোধে তিনি সাধারণ সম্পাদক হন। পরে বয়কটকারীরাও মাঠে ফিরে।

এর আগে খন্দকার জামিল উদ্দিন সাধারণ সম্পাদক হওয়ায় হকিতে হট্টগোল বাধে। তবে কোনো ক্লাব লিগ বয়কট করেনি। অতীতের কথা চিন্তা করেই শঙ্কা জেগেছে এবারও হকির নির্বাচন ঘিরে বিভেদ সৃষ্টি হয় কিনা? ৩২ বছর পর অক্টোবরে ঢাকায় এশিয়া কাপের মতো বড় আসর বসবে। নির্বাচন যে সুষ্ঠু হবে এনিয়ে সংশয় নেই। কিন্তু যারা হারবে পরবর্তীতে যে তারা হট্টগোল করবেন না এই নিশ্চয়তা কী দেওয়া যায়? হট্টগোল বাধলে তখন এশিয়া কাপ আয়োজনের সমস্যাই হবে। এশিয়ান হকি ফেডারেশন নিশ্চয় তখন চুপ থাকবে না। শঙ্কা যখন আছে তখন হকির নিবেদিত সংগঠকরা চাচ্ছেন দুই প্যানেলে না গিয়ে গ্রহণযোগ্য একটি ঐক্যমতের কমিটির গঠন করতে। এশিয়া কাপকে গুরুত্ব দিয়ে সরকারের প্রভাবশালী মহলও তাই চাচ্ছে। জানা গেছে, বিসিবি সভাপতি পাপনকেই সমঝোতার দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে। খুব শিগগিরই তিনি এ নিয়ে হকির কর্মকর্তাদের সঙ্গে বসবেন। বিষয়টি নিয়ে সাধারণ সম্পাদক আবদুস সাদেক বলেন, ‘সমঝোতার ভিত্তিতে কমিটি গঠন হলে খুশি হব। দুটো প্যানেল হওয়া মানেই বিভেদের শঙ্কা থাকবে। সমঝোতার কমিটি হলে এশিয়া কাপে সবাই মিলে মিশে কাজ করবেন। জানি না শেষ পর্যন্ত কি হয়। খাজা রহমত উল্লাহ্ বলেন, যদি নির্বাচনকে ঘিরে কোনো বৈঠক হয় আমাকে ডাকলে অবশ্যই যাব। হকির স্বার্থে যে সিদ্ধান্ত হোক আমি মেনে নেব। আমার মন পরিষ্কার। অতীতে নিশ্চয় ক্রীড়ামোদীরা তা প্রমাণ পেয়েছেন। রশীদ শিকদার বলেন, ‘নির্বাচন নিয়ে সমঝোতার বৈঠকের কথা আমার জানা নেই। হয়তো পরাজয় নিশ্চিত ভেবে কেউ বিভ্রান্তির সৃষ্টি করছেন। সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী হব এটাই আমার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত। তবে কোনো বৈঠকে ডাক পেলে অবশ্যই যাব। মুরুব্বীরা ডাকলে তো যেতেই হবে।’

সর্বশেষ খবর