বৃহস্পতিবার, ২০ জুলাই, ২০১৭ ০০:০০ টা

শেখাটাই বড় প্রাপ্তি

ক্রীড়া প্রতিবেদক

শেখাটাই বড় প্রাপ্তি

লিটন কুমার দাস

অস্ট্রেলিয়া সফরে বিসিবি হাইপারফরম্যান্স (এইচপি) দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন লিটন কুমার দাস। নিজে দুর্দান্ত পারফর্ম করেছেন, দলও দারুণ খেলেছে। অস্ট্রেলিয়ার নর্দান টেরিটরি দলকে হোয়াইটওয়াশ করে দেশে ফিরেছে এইচপি দল। পাঁচ ওয়ানডে এবং একটি তিন দিনের ম্যাচ জিতেছে লিটনের দল। তবে জয়ের চেয়েও বড় হচ্ছে, এই সফরে অনেক কিছু শিখেছেন ক্রিকেটাররা। লিটন দাস বলেন, ‘আমি গিয়েছিলাম কিছু শেখার জন্য। ওখানকার আবহাওয়া কেমন, উইকেট কেমন! উইকেট দেখে রিড করতে পারি কিনা! — এগুলোতেই মেইন ফোকাস ছিল। সবার কম-বেশি এটাই লক্ষ্য ছিল। তবে যখন ম্যাচ খেলছিলাম সবারই চেষ্টা ছিল জেতার জন্য। আমরা জিতেছি। কিন্তু ব্যক্তিগতভাবে যখন চিন্তা করবেন দেখবেন বিসিবি ওখানে একজন খেলোয়াড়কে পাঠিয়েছে কন্ডিশন বোঝার জন্য।’ এই সফরের অভিজ্ঞতা থেকে লিটন দাস বলেন, ‘ওখানকার উইকেট আর আমাদের উইকেট অনেক ভিন্ন। এটা খেললে বোঝা যায়। আমাদের এখানে কন্ডিশনে ঘাম বেশি হয়। ১০ মিনিট খেললেও প্রচুর পরিমাণে শরীর ঘামে। কিন্তু ওখানে ওটা হয় না। আবার ওখানে প্রচুর পরিমাণে বাতাস থাকে। এটা অনেক সময় পক্ষে থাকে আবার বিপক্ষেও চলে যায়। এ বিষয়গুলোর সঙ্গে খাপখাইয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছি।’

অস্ট্রেলিয়া সফরে এইচপি দলের কোচ হিসেবে ছিলেন সাইমন হেলমট। শিষ্যদের খেলায় দারুণ খুশি তিনি। প্রশংসা করতে গিয়ে কয়েকজন ক্রিকেটারের নাম আলাদা করে উল্লেখ করেছেন কোচ। তাদের মধ্যে একজন লিটন দাস। কিন্তু এইচপি দলের অধিনায়ক নিজেই নিজের পারফরম্যান্সে আহামরি খুশি নন। ভালো ব্যাটিং করলেও লিটন মনে করেন, তার আরও ভালো করার সুযোগ ছিল। তার দাবি, ‘আমার ব্যাটিংয়ে আরেকটু ভালো করার জায়গা ছিল। কিন্তু ভালো করতে পারিনি। ফর্ম সবসময় থাকে না। কন্ডিশন আমাদের অনুকূলে ছিল না। প্রথম দিন যাওয়ার পরই আমাদের একটা অন্যরকম ফিল আসছে। কারণ এখানকার আবহাওয়া একটু ভিন্ন। প্রথম ম্যাচটি আমরা অনেক কষ্ট করে জিতেছি।’

লিটনকে নিজের ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি ক্যাপ্টেন্সি নিয়েও ভাবতে হয়েছে। তবে অধিনায়কত্বের দায়িত্ব বেশ উপভোগ করেছেন লিটন, ‘খুব ভালো অভিজ্ঞতা হয়েছে। খেলোয়াড় হিসেবে সবসময় খেলি। এবার একটা বাড়তি দায়িত্ব ছিল, ক্যাপ্টেন্সি হ্যান্ডেল করা। এ জিনিসটায় পছন্দেরও একটা ব্যাপার থাকে। ক্যাপ্টেন্সিতে মজার একটি বিষয়। আমি এবার এটাকে উপভোগ করার চেষ্টা করেছি।’

একে তো অস্ট্রেলিয়ার আবহাওয়ার সঙ্গে মানিয়ে নিতে সময় লাগে। তার ওপর এইচপি দলকে খেলতে হয়েছে টানা ম্যাচ। এরপরও দলটি সফল। তবে কষ্টও হয়েছে। লিটন বলেন, ‘সাধারণত আপনি যখন বড় কোনো টুর্নামেন্ট কিংবা সিরিজ খেলতে যান তখন প্রস্তুতির জন্য অনেক সময় পাওয়া যায়। জার্নি করার পর বিরতি থাকে। প্রস্তুতির জন্য সময় থাকে। কিন্তু আমরা এবার ওরকম কিছু পাইনি। তা ছাড়া আমরা ১৬ ঘণ্টা একটা ট্রানজিটে ছিলাম। সেখানে বেশি পানি খাওয়া হয়নি। ডি-হাইড্রেশন (পানিশূন্যতা) হয়েছিল কম-বেশি সবার। ওখানে যাওয়ার পর প্রথমেই হার্ড সেশন অনুশীলন হয়েছে। এর পরের দিন খেলা খুব কঠিন। এ ছাড়া আমরা খুব টানা ক্রিকেট খেলেছি। তিন দিন খেলেছি, মাঝে এক দিন বিরতি।’

প্রতিপক্ষ নর্দান টেরিটরি দল সম্পর্কে লিটন দাসের মূল্যায়ন, ‘দল সব মিলিয়ে ভালোই ছিল। তবে ওদের চুক্তিভুক্ত খেলোয়াড়রা ছিল না। আমাদের স্ট্যান্ডার্ড অনেক হাই ছিল। আমাদের প্রায় সবাই অনেক দিন ধরে খেলছি বড় পর্যায়ে। তবে নর্দান টেরিটরি ও সাউথ অস্ট্রেলিয়ার কিছু ভালো খেলোয়াড় ছিল দলে। আমাদের সঙ্গে অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেটেও খেলেছে।’

সামনে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে দুই ম্যাচে টেস্ট সিরিজ। সর্বশেষ টেস্টে লিটন দাস আহামরি কিছু করে দেখাতে পারেননি। তবে ঘরোয়া লিগে দুর্দান্ত ব্যাটিং করছেন এই উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান। এইচপি দলেও দারুণ পারফর্ম করেছেন। তবে জাতীয় দল নিয়ে কিছু ভাবছেন না লিটন, ‘জাতীয় দল নিয়ে আমার মাথায় এখন কোনো কিছু নেই।’

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর