বৃহস্পতিবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

শিরোপার স্বপ্ন দেখছে যুবারা

ক্রীড়া প্রতিবেদক

শিরোপার স্বপ্ন দেখছে যুবারা

কোথায় ছিল এ ফুটবল? ছোটরা কি সব পাল্টে দিচ্ছে? অনূর্ধ্ব-১৮ সাফ ফুটবলে বাংলাদেশ দুই ম্যাচ জেতার পর এমন কথা ক্রীড়ামোদীদের মুখে মুখে। শুধু জয় বললে ভুল হবে, যুবারা যে নৈপুণ্য প্রদর্শন করছে এককথায় তা অসাধারণ। এখন শিরোপার স্বপ্ন দেখতেই পারে বাংলাদেশ। থিম্পুতে অনুষ্ঠিত এবারের আসরের প্রথম ম্যাচেই ইতিহাস গড়ে ফেলেছে জাফররা। প্রথমার্ধে ৩ গোলে পিছিয়ে থেকে ভারতকে হারাবে কেউ কি ভেবেছিল? সাকিব-মুশফিকরা টাইগারের খ্যাতি পেয়েছেন। কিন্তু ভারতের বিপক্ষে যুবারা যেন সিংহ রূপ ধারণ করেছিল। দ্বিতীয়ার্ধে ভারতকে পাত্তাই দেয়নি। মনে হচ্ছিল পাড়ার কোনো দলের সঙ্গে খেলছে রক্সির শিষ্যরা। ৪-৩ গোলে অবিশ্বাস্য জয়ে মিশনের শুভ সূচনা করে বাংলাদেশ।

এমন জয়ে স্বাভাবিকভাবে বাংলাদেশের আত্মবিশ্বাস তুঙ্গে ছিল। গতকাল প্রতিপক্ষ হয়ে মাঠে নামে মালদ্বীপ। যারা কিনা প্রথম ম্যাচে ভুটানের কাছে হেরে যায়। তবুও সতর্ক ছিল জাফররা। কোচ মাহবুব রহমান রক্সি আগের দিন বলেছিলেন, ‘মালদ্বীপকে খাটো করে দেখার উপায় নেই। ওরাও ম্যাচ জেতার সামর্থ্য রাখে।’ আসলে দেখেশুনে খেলায় পুরো ম্যাচই ছিল বাংলাদেশের নিয়ন্ত্রণে। কিন্তু জাফরদের নৈপুণ্য দেখে মনেই হচ্ছিল না ফুটবলে বাংলাদেশের অসহায়ত্বের কথা।

যে মালদ্বীপের কাছে জাতীয় দল পাত্তাই পায় না, সেখানে তো ভয় পাওয়ার যথেষ্ট কারণ ছিল। কিছুদিন আগেও প্রীতি ম্যাচে মালদ্বীপের কাছে বিধ্বস্ত হয়েছিলেন মামুনুলরা। অথচ কাল জাফর-সৈকতদের খেলা দেখে আশির দশকের কথা মনে পড়ে যাচ্ছিল। যে সময় জাতীয় দল নয়, মালদ্বীপ গোলের বন্যায় ভেসে যেত মোহামেডান বা আবাহনীর কাছে। এশিয়ান ক্লাব ফুটবলে এমনও অবস্থা হয়েছিল যে, ম্যাচের আগে মালদ্বীপের কর্মকর্তারা অনুরোধ রাখতেন কম গোল দেওয়ার জন্য। ৯ বা ৭ গোল মালদ্বীপকে দেওয়া ছিল তখন স্বাভাবিক ঘটনা। কাল অবশ্য ২-০ গোলে জিতেছে অনূর্ধ্ব-১৮ দল। কিন্তু যুবাদের নৈপুণ্য দেখে আশির দশকের স্মৃতি চোখের সামনে ভাসছিল।

শুরু থেকে বাংলাদেশ ছিল আক্রমণমুখী। রক্ষণভাগও যেন চীনের প্রাচীরের মতো দাঁড়িয়েছিল। সৈকত গোল করলে উৎসবে মেতে ওঠে বাংলাদেশ শিবির। এরপর আক্রমণ আর আক্রমণ। ভুটানের কাছে হারলেও মালদ্বীপই তুলনামূলক ভালো খেলেছিল। কিন্তু কাল বাংলাদেশের সামনে তাদের খুঁজেই পাওয়া যাচ্ছিল না। প্রথমার্ধের ইনজুরি টাইমে ব্যবধান দ্বিগুণ করে ভারত জয়ের নায়ক জাফর ইকবাল। কী অসাধারণ খেলা তার। অথচ পেশাদার লিগে তাকে কিনা সাইডলাইনে বসে থাকতে হচ্ছে।

২ গোলে এগিয়ে থেকেও রিলাক্সে যায়নি বাংলাদেশ। আগের ম্যাচে ৩ গোলে এগিয়ে থেকেও ভারত হেরে গেছে। মালদ্বীপ যদি বাংলাদেশের মতো রূপকথার কাহিনী লিখে ফেলে? কীসের ভয়? দ্বিতীয়ার্ধেও সেই একই রূপ। আক্রমণের পর আক্রমণ। সুযোগ নষ্ট করায় ব্যবধান আর বাড়ানো যায়নি। দুই ম্যাচে ৬ পয়েন্ট বাংলাদেশের। নেপালকে কাল হারিয়ে ভুটানেরও সমান পয়েন্ট। তবে গোলপার্থক্যে জাফররা এগিয়ে। ২৫ সেপ্টেম্বর নেপাল ও ২৭ সেপ্টেম্বর ভুটান— এ দুই ম্যাচ জিতলেই ট্রফি বাংলাদেশের।

সর্বশেষ খবর