মঙ্গলবার, ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

স্বপ্ন নিয়ে ফিরল কিশোররা

ক্রীড়া প্রতিবেদক

স্বপ্ন নিয়ে ফিরল কিশোররা

কাতারকে হারানোর পর বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৬ দলের বাঁধভাঙা উল্লাস —ইন্টারনেট

স্বপ্নের সময় পার করছে বাংলাদেশের ফুটবল। জাতীয় দল না পারলেও যুব দলগুলো ফের স্বপ্ন দেখাচ্ছে দেশের কোটি কোটি ফুটবলপ্রেমীদের। শুধু তাই নয়, অনূর্ধ্ব-১৬, অনূর্ধ্ব-১৮ এবং অনূর্ধ্ব-১৬ মহিলা ফুটবল দল ফের দেশের ক্রীড়াপ্রেমীদের মাঠমুখী করবে কোনো সন্দেহ নেই। বাংলাদেশের ফুটবল ফিরে পাবে সেই স্বর্ণ সময়, এটা এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা। মধ্যপ্রাচ্যের দেশ কাতারের রাজধানী দোহায় স্বপ্নের সময় কাটিয়ে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৬ ফুটবল নতুন স্বপ্ন নিয়ে ফিরেছে দেশে। দেশের ফেরার আগে দেশের ফুটবল ইতিহাসে লিখেছে সোনালি হরফে ইতিহাস। অনূর্ধ্ব-১৬ এএফসি চ্যাম্পিয়নশিপের ‘ই’ গ্রুপের বাছাইপর্বে পরশু রাতে ২-০ গোলে হারিয়েছে কাতারকে। এই প্রথম যে কোনো লেবেলে হারালো দেশটিকে। তেল সমৃদ্ধ দেশটি ২০২২ সালের বিশ্বকাপ ফুটবল আয়োজন করবে এবং স্বাগতিকরা সুযোগে খেলবে বিশ্বকাপ। গতকাল ঢাকায় ফিরে দলের কোচ আনোয়ার পারভেজ বলেন, ‘চ্যাম্পিয়নশিপে দুর্দান্ত ফুটবল খেলেছে বাংলাদেশ। কাতারের বিপক্ষে অসাধারণ খেলেছেন সবাই।’ 

চ্যাম্পিয়নশিপে বাংলাদেশ অংশ নিয়েছিল আন্ডারডগ হিসেবে। গ্রুপের বাকি তিন দলের সবগুলোই এশিয়ান ফুটবলের পরাশক্তি। স্বাগতিক কাতার, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও ইয়েমেন। রাজনৈতিক মতভেদ থাকায় কাতারে খেলতেই আসেনি আরব আমিরাত। তাই প্রথম ম্যাচে প্রতিপক্ষ হিসেবে পায়নি আমিরাতকে। দ্বিতীয় ম্যাচে খেলতে নামে ফেবারিট ইয়েমেনের বিপক্ষে। ২-০ গোলে হারলেও লড়াই করে সমানে সমানে। ইয়েমেনই হারায় কাতারকে ৬-১ গোলে। ফলে পরশু রাতে দোহায় বাংলাদেশ অপেক্ষাকৃত চাপমুক্তভাবে খেলতে নামে। যদিও র‍্যাঙ্কিংয়ের বিচারে বাংলাদেশের সঙ্গে দেশটির ব্যবধান ১১১। বিশ্ব ফুটবল র‍্যাঙ্কিংয়ে কাতারের অবস্থান ৮৫ এবং বাংলাদেশ ১৯৬। এমন ব্যবধান যেখানে, সেখানে লড়াই একপেশে হওয়াই স্বাভাবিক। অথচ কাতারকে পাত্তাই দেয়নি। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত দলটির রক্ষণভাগকে বিপর্যস্ত করে রেখেছিলেন দীপক রায়, ফয়সাল আহমেদ ফাহিমরা। গোলের সংখ্যা চার কিংবা পাঁচ হলে অবাক হওয়ার কিছু ছিল না। স্বাগতিক গোলরক্ষকের দৃঢ়তায় গোল দুইয়ের বেশি হয়নি। এক পেশে লড়াই হলেও গোল পেতে বেঙ্গল টাইগার জুনিয়র দলকে অপেক্ষা করতে হয়েছে ৭০ মিনিট পর্যন্ত। ৬০ মিনিটে মেরাজ মোল্লার দুরন্ত শট সামান্যের জন্য বারপোষ্টের উপর দিয়ে যায়। ৭০ মিনিটে প্রথম গোল পায় দল। বাঁ প্রান্ত থেকে কর্নারে ভেসে আসা বলে বেশ অনেকটা লাফিয়ে দারুণ হেডে দলকে আনন্দে ভাসান দীপক (১-০)। ৮১ মিনিটে জয় নিশ্চিত করে নেয় বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৬। মধ্যমাঠ থেকে বাড়ানো বল ধরে কাতারের রক্ষণভাগ চিড়ে এগিয়ে যান ফয়সাল, এরপর বক্সের মাথা থেকে বাঁ পায়ের মাটি কামড়ানো শটে বোকা বানান প্রতিপক্ষের গোলরক্ষককে। বল আড়াআড়ি নিজের ঠিকানা জালে জায়গা করে নেয় (২-০)। এরপর আর গোলের সুযোগ পায়নি বাংলাদেশ। শেষ পর্যন্ত দুই গোলের জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৬। এই জয়ে বাংলাদেশের পয়েন্ট ২ ম্যাচে ৩। সমান ম্যাচে ৬ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে চূড়ান্তপর্বে জায়গা করে নেয় ইয়েমেন। ১০ গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন দল ছাড়াও সেরা পাঁচ রানার্সআপ সুযোগ পাবে চূড়ান্তপর্বে খেলার। স্বাগতিক হিসেবে মালয়েশিয়া সরাসরি খেলবে। চূড়ান্তপর্ব অনুষ্ঠিত হবে ২০১৮ সালে। অবশ্য মালয়েশিয়া নিজ গ্রুপে চ্যাম্পিয়ন বা রানার্সআপ হলে সেরা ষষ্ঠ রানার্সআপ দলও যাবে মূলপর্বে।

সর্বশেষ খবর