বুধবার, ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

শিরোপা এখনো নাগালে

ক্রীড়া প্রতিবেদক

শিরোপা এখনো নাগালে

অনেক সমীকরণের ম্যাচ আজ। তবুও জাফর ইকবালরা ভুটানকে হারিয়ে শিরোপার সম্ভাবনা টিকিয়ে রাখতে চায়। মাঠে নামার আগে অনূর্ধ্ব-১৮ দল অনুশীলন সেরে নিচ্ছে —বাফুফে

টুর্নামেন্টের শেষ ম্যাচ। অথচ চার দলেরই শিরোপা জয়ের সমান সম্ভাবনা রয়েছে। ফুটবল ইতিহাসে এমন ঘটনা পরিসংখ্যানেও খুঁজে পাওয়া যায়নি। অনূর্ধ্ব-১৮ সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে এই অবস্থা দাঁড়িয়েছে। আগেরবার ফাইনালে জয়ী হয়ে নেপাল শিরোপা জিতেছিল। এমন জটিলতা সৃষ্টি হয়নি। ভুটানের থিম্পুতে অনুষ্ঠিত এবারের আসরে শ্রীলঙ্কা নাম প্রত্যাহার করে নেওয়ায় পাঁচ দলকে সরাসরি লিগ খেলতে হচ্ছে। ফাইনাল ছিল না বলেই পয়েন্ট টেবিলে যারা শীর্ষে থাকবে তারাই চ্যাম্পিয়ন হবে। মালদ্বীপ টানা চার ম্যাচ হেরে টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নিয়েছে। কিন্তু বাকি চার দল বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল ও ভুটান সবাই দুটি করে ম্যাচ জিতেছে। হেরেছে ১টি করে। চার দলের পয়েন্ট ছয়। তবে গোল পার্থক্যে ভারত এগিয়ে। বাংলাদেশ দ্বিতীয়, নেপাল তৃতীয় ও ভুটান চতুর্থ স্থানে রয়েছে।

এমন অবস্থা হতো না যদি সোমবার বাংলাদেশ নেপালকে হারাত। তখন ভুটানের সঙ্গে ড্র করলেই চ্যাম্পিয়ন হয়ে যেত। নেপালের সঙ্গে ড্র করলেও ভুটানকে হারিয়ে বাংলাদেশের যুবারা শিরোপা জিততো। মালদ্বীপকে ভারত পরাজিত ও নেপাল জিতে যাওয়ায় চার দলের সমান ছয় পয়েন্ট হয়ে গেছে। সমান হলেও চ্যাম্পিয়ন হতে হবে একটি দলকেই। সেই হাসি হাসবে কে?

আজ টুর্নামেন্টের শেষ দিনে চার দলের খেলা রয়েছে। বিকাল ৪টায় প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশ মুখোমুখি হবে ভুটানের বিপক্ষে। সন্ধ্যা ৭টায় ভারত ও নেপালের লড়াই। নেপালের কাছে হেরে শিরোপার রাস্তাটা কঠিন করে ফেললেও বাংলাদেশের চ্যাম্পিয়নের পথ এখনো খোলা রয়েছে। যেমন বাংলাদেশ যদি ভুটানকে হারাতে পারে এবং ভারত-নেপালের ম্যাচ ড্র হলে সর্বোচ্চ ৯ পয়েন্ট নিয়েই শিরোপার হাসি হাসবে জাফর ইকবালরা। একই অবস্থা ভুটানেরও। তবে প্রথম ম্যাচ যদি ড্র হয়। পরের ম্যাচে যারাই জিতবে তারাই চ্যাম্পিয়ন হবে। অন্যদিকে আবার দুই ম্যাচ ড্র হলে গোল পার্থক্যে শিরোপা নির্ধারণ হবে। বাংলাদেশ আরও একটি পথ খোলা রয়েছে। বাংলাদেশ ও ভারত দুই দলই জিতে গেলে তখন আবার লিগে ভারতকে হারানোর সুবাদে বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন। অন্যদিকে আবার বাংলাদেশ ও নেপাল জিতলে তখন আবার নেপালই চ্যাম্পিয়ন হয়ে যাবে। ফিফার বাইলজে তাই আছে। সাউথ এশিয়ান ফুটবল ফেডারেশন এই নিয়ম অনুসরণ করছে কিনা তা পরিষ্কার নয়। কেননা উপমহাদেশীয় টুর্নামেন্টে ফেডারেশন আবার নতুন নিয়ম তৈরি করতে পারে। এই অধিকার ফিফা দিয়েছে।

কঠিন সমীকরণে পড়ে গেছে এবার সাউথ এশিয়ান ফুটবল ফেডারেশন। চার দলই পড়ে গেছে গ্যাঁড়াকলে। শিরোপার জন্য এমন অবস্থা আর কখনো সৃষ্টি হয়নি। বাংলাদেশের কোচ মাহবুব হোসেন রক্সি বলেছেন, ‘নিঃসন্দেহে কঠিন সমীকরণ। তবে এসব নিয়ে ভাবছি না। পরের ম্যাচে কি হবে তা নিয়ে ভাবছি না। লক্ষ্য আমাদের একটাই ভুটানকে হারানো। তা না হলে শিরোপার কোনো সম্ভাবনা থাকবে না। একে তো নিজেদের মাঠ তারপর আবার ভুটান যথেষ্ট শক্তিশালী। মালদ্বীপ ও নেপালের বিপক্ষে জয়ের পর ভারতের কাছে ৩-০ গোলে হারলেও শেষ ম্যাচে তারাও মরণ কামড় দেবে। জিতলে তাদেরও শিরোপা জয়ের সম্ভাবনা রয়েছে।

অনূর্ধ্ব-১৫ সাফ ফুটবলে বাংলাদেশ দুবার ভুটানকে সহজভাবে হারিয়েছে। সেই দলের বেশ কয়েকজন ফুটবলারও এই টুর্নামেন্টে আছে। সেক্ষেত্রে বড় ব্যবধানে তাদের হারানো কি সম্ভব। রক্সি বলেন, ‘এমন প্রতিশ্রুতি দেওয়াটা বোকামি। আগেই বলেছি ওদেরও শিরোপা জয়ের সম্ভাবনা রয়েছে। ম্যাচ জিততে তারাও জানপ্রাণ দিয়ে লড়বে। আমরা জয়ের জন্যই খেলব। শেষ পর্যন্ত কি হয় সেটাই এখন অপেক্ষা।

নেপালের বিপক্ষে হার প্রসঙ্গে রক্সি বলেন, ‘দুর্ভাগ্য আমাদের কমপক্ষে চারটি সহজ গোলের সুযোগ হাতছাড়া করেছি। যে দুটো গোল খেয়েছি তা ডিফেন্ডারদের অসতর্কতার কারণে। দ্বিতীয়ার্ধে বিশ্বনাথ লাল কার্ড দেখায় আমাদের শক্তি কমে যায়। যাক যা ঘটে গেছে তা আর চিন্তা করে লাভ নেই। এখন যতটুকু সম্ভাবনা আছে সেটাই কাজে লাগাতে চাই। আগে ভুটানকে হারাতেই হবে। তারপর ভারত-নেপাল ম্যাচে কি ঘটে অপেক্ষায় থাকবে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর