স্পেন এক ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। ১৯৭৫ সালে সামরিক স্বৈরশাসক ফ্রান্সিসকো ফ্রাঙ্কোর পতনের মধ্য দিয়ে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল স্পেনে। এরপর থেকে বাস্ক গেরিলাদের মুক্তিযুদ্ধ আর অর্থনৈতিক নানা সমস্যার মধ্যেও মোটামুটি শান্তিতেই ছিল স্পেন। তবে সময় বদলে গেছে। বেশ কয়েক বছর ধরেই স্বাধীনতা চেয়ে আসছে কাতালুনিয়া। এবার তারা স্বাধীনতার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে গণভোটের আয়োজন করেছে। আজ সেই গণভোট। স্প্যানিশ সরকার এই গণভোটের বিরুদ্ধে সবকিছুই করেছে। এমনকি ভোটকেন্দ্রগুলোও দখল করে নিয়েছিল তারা। কিন্তু এএফপির খবর, স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তি গতকাল আবারও পুনর্দখল নিয়েছে ভোটকেন্দ্রগুলোর। এর অর্থ গণভোট ঠিকই অনুষ্ঠিত হচ্ছে। কিন্তু প্রশ্ন হলো, কাতালুনিয়া স্বাধীন হলে বার্সেলোনা খেলবে কোথায়? এই ধরনের প্রশ্ন এর আগেও উঠেছিল। লা লিগার কর্তারা তখন জানিয়েছিলেন, কাতালুনিয়া স্বাধীন হলে বর্তমান যে বিধান তাতে বার্সেলোনা আর লিগ খেলতে পারবে না। তবে তারা একটা সম্ভাবনার কথাও জানিয়েছিলেন। লা লিগার বিধান পরিবর্তন করে বার্সেলোনাকে খেলতে দেওয়ার বিষয়টাও চিন্তা করা যায়। এখন অবশ্য নতুন সুর লা লিগা প্রেসিডেন্ট জাভিয়েরের কণ্ঠে। তিনি বলেছেন, কাতালুনিয়া স্বাধীন হলে স্প্যানিশ লিগে বার্সেলোনা খেলতে পারবে না। এদিকে কাতালুনিয়ার ক্রীড়ামন্ত্রীর বক্তব্য দিয়ে বিভিন্ন ইংলিশ পত্রিকায় খবর বেরিয়েছে, বার্সেলোনা খেলতে পারে ইতালিয়ান সিরিএ, ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ কিংবা ফ্রেঞ্চ লিগ ওয়ানে। ক্রীড়ামন্ত্রী জেরার্ড ফিগেরাস বলেছেন, ‘আমরা স্বাধীন হলে লা লিগার কাতালান ক্লাবগুলোকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে তারা কোথায় খেলবে। স্প্যানিশ লিগেই খেলবে নাকি প্রতিবেশি ইতালি, ফ্রান্স অথবা প্রিমিয়ার লিগে খেলবে।’ উয়েফার অবশ্য এমন কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। কিন্তু বার্সেলোনা স্প্যানিশ লিগ ছাড়লে ক্ষতি হবে লা লিগারই। বার্সেলোনা-রিয়াল মাদ্রিদের এল ক্ল্যাসিকো লড়াই কেবল স্পেনেই নয়, ফুটবল দুনিয়ায় সবচেয়ে জনপ্রিয় ম্যাচ হিসেবে স্বীকৃত। শত বছরের পুরনো এই লড়াই টিকে থাকবে কি না বলা কঠিন।
এদিকে বার্সেলোনা সরাসরি স্বাধীনতার স্বপক্ষে কোনো বক্তব্য না দিলেও আড়ালে-আবডালে ঠিকই পক্ষে প্রচারণা চালাচ্ছে। জেরার্ড পিকে আন্দ্রেস ইনিয়েস্তারা বিভিন্ন বক্তব্যের মধ্য দিয়ে নিজেদের সমর্থন জানিয়েছেন স্বাধীনতার পক্ষে। আজকের গণভোটে কী হবে বলা মুশকিল। একদিকে মারিয়ানো সরকার এই গণভোটকে অবৈধ ঘোষণা দিয়েছে। অন্যদিকে রিয়াল মাদ্রিদ তারকারা, রাফায়েল নাদাল এবং আরও অনেক বিখ্যাত ব্যক্তিরা কাতালুনিয়ার স্বাধীনতার বিরুদ্ধে প্রচারণা চালাচ্ছেন। দেখা যাক, এবার কী হয়! স্বাধীন হলে, বার্সেলোনাই বা কোথায় খেলে!