রবিবার, ১৫ অক্টোবর, ২০১৭ ০০:০০ টা

ওয়ানডেতে ঘুরে দাঁড়ানোর প্রত্যয়

ক্রীড়া প্রতিবেদক

ওয়ানডেতে ঘুরে দাঁড়ানোর প্রত্যয়

মাশরাফি - ডু-প্লেসিস

বিশ্বে কিম্বার্লির পরিচয় ‘হীরার খনি’ হিসেবে! কিন্তু বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের কাছে দক্ষিণ আফ্রিকার এই কিম্বার্লি এক দুঃস্বপ্নের শহর। ২০০২ সালে এখানে ওয়ানডেতে মাত্র ১৫১ রানে অলআউট হয়ে গিয়েছিল বাংলাদেশ। এই ভেন্যুতে মাত্র একটি ম্যাচই খেলেছিল টাইগাররা।

যদিও খালেদ মাসুদ পাইলটের ওই দলের কোনো ক্রিকেটারই এই দলে নেই। তবে সেই দুঃস্মৃতিটা ঠিকই যেন তাড়া করে ফিরছে ক্রিকেটারদের! পচেফস্ট্রুম ও ব্লুমফন্টেইন টেস্টে ভরাডুবির পর কিম্বার্লিতে তাই সতর্ক হয়েই খেলতে নামবেন মাশরাফিরা।

দক্ষিণ আফ্রিকার উইকেটে অনেক রান হয়। তবে উপমহাদেশের ব্যাটসম্যানদের কাছে উইকেট যেন রীতিমতো রহস্যময়! উপমহাদেশের কোনো দলই সুবিধা করতে পারেন না প্রোটিয়াদের মাটিতে। তবে দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটসম্যানরা কিন্তু ঠিক সাচ্ছন্দ্যে ব্যাটিং করেন।

উপমহাদেশের মাটিতে খেলতে আসলে প্রোটিয়ারা যেমন সমস্যায় পড়েন, তেমনি তাদের মাটিতে খেলতে গিয়ে ভীষণ সমস্যায় পড়তে হয় উপমহাদেশের ক্রিকেটারদেরও। তাই রান সংগ্রাম করতে হবে মাশরাফিদেরও। টেস্ট সিরিজে বাজে খেলার কারণে ওয়ানডে সিরিজটা ব্যাকফুটে থেকেই শুরু করতে হচ্ছে বাংলাদেশকে। চ্যালেঞ্জ নিতে হবে টাইগারদের। দক্ষিণ আফ্রিকার চ্যালেঞ্জ নিতে প্রস্তুত বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান।

‘দক্ষিণ আফ্রিকা সব শেষ সিরিজে বাংলাদেশে গিয়ে হেরেছে। তাই তাদের এখানে আমাদের খেলতে সমস্যা হবে এটাই স্বাভাবিক। তবে আমরা চ্যালেঞ্জ নিতে প্রস্তুত।’ বলেছেন সাকিব। টেস্ট সিরিজের বাংলাদেশ ও ওয়ানডে সিরিজের বাংলাদেশের মধ্যে অনেক তফাৎ। দক্ষিণ আফ্রিকা সেটা খুব ভালো করেই জানে। সব শেষ ওয়ানডে সিরিজে বাংলাদেশের কাছে ২-১ ব্যবধানে হেরেছে তারা। তারপরেও ঘরে মাঠে বলেই আজ ফুরফুরে ম্যাচে রয়েছেন প্রোটিয়ারা। সাকিব আল হাসান দলের সঙ্গে যুক্ত হওয়ায় টাইগারদের আত্মবিশ্বাস অনেক বেড়ে গেছে। তা ছাড়া অধিনায়ক মাশরাফিও হয়তো দলকে দারুণভাবে বুস্টআপ করেছেন। সাকিব তো সরাসরি বলে দিয়েছেন, তারা ম্যাচের ফল নিয়ে কোনো চিন্তা করছেন না। কেন না ফল নিয়ে চিন্তা করলে বাড়তি চাপ থাকে, সেক্ষেত্রে নেতিবাচক কিছু ঘটার সম্ভাবনা অনেক বেশি। কিন্তু ফলের কথা চিন্তা না করে নিজেদের সামর্থ্য অনুযায়ী খেলতে পারলে বাংলাদেশে বিশ্বের যেকোনো দলকেই হারাতে পারবেন বলে মনে করেন সাকিব। আজকের ম্যাচে তামিম ইকবাল খেলবে কিনা নিশ্চিত নয়। তবে খেলার সম্ভাবনাই বেশি। আগের দিনের অনুশীলনে ব্যাটিং করেছেন ড্যাসিং ওপেনার। তবে তামিম খেলতে না পারলে সুযোগ পেয়ে যাবেন ইমরুল কায়েস। সৌম্য সরকারের সঙ্গে ওপেন করবেন তিনি। লিটন কুমার দাস ও মুমিনুল হকের মধ্যে একজন খেলবেন। শেষ টেস্টে একটা হাফ সেঞ্চুরি করেছেন। সেই সঙ্গে উইকেটকিপিংয়ের কথা চিন্তা করলে লিটনের খেলার সম্ভাবনাই বেশি। এছাড়া সাইফুদ্দিন ও তাসকিনের মধ্যে যেকোনো একজনকে খেলানো হবে। একাদশে নাসিরের সুযোগ পাওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। ব্যাটিং অর্ডারে চারে মুশফিকুর রহিম, পাঁচে সাকিব, ছয়ে মাহমুদুল্লাহ এবং সাতে সাব্বির রহমান। ওয়ানডেতে চারজন পেসার নেওয়ার সম্ভাবনা খুবই বেশি। সেক্ষেত্রে মাশরাফির সঙ্গে মুস্তাফিজুর রহমান ও রুবেল হোসেন তো রয়েছেনই। তবে উইকেট দেখে চার পেসার খেলানোর সিদ্ধান্ত থেকে সরেও আসতে পারেননি মাশরাফি। সেক্ষেত্রে রুবেলের জায়গায় দেখা যেতে পারে নাসির হোসেনকে।

আজই ওয়ানডেতে হাজার রান হয়ে যেতে পারেন বাংলাদেশের দুই ব্যাটসম্যান সৌম্য ও সাব্বিরের। ১০০০ রান থেকে সৌম্য ৪১ রান দূরে, সাব্বির দরকার ৯০ রান। তবে এই ম্যাচটি প্রতিপক্ষের মারকুটে ব্যাটসম্যান ডেভিড মিলারের জন্য স্মরণীয়। আজকের এই ম্যাচটি প্রোটিয়া ব্যাটসম্যানের ১০০তম ম্যাচ। তাই শততম ম্যাচে ‘ভয়ঙ্কর’ কিছু দেখানোর জন্যই হয়তো মাঠে নামবেন মিলার।

টেস্ট সিরিজে দক্ষিণ আফ্রিকা অসাধারণ খেললেও উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান কুইন্টন ডি ককের জন্য ছিল বিরক্তিকর। টেস্টে ব্যাটিং করার সুযোগ পাননি এই প্রোটিয়া তারকা ব্যাটসম্যান। তাই ওয়ানডে সিরিজে রান করার জন্য মুখিয়ে রয়েছেন তিনি। কিম্বার্লির ডায়মন্ড ওভাল মাঠের উইকেট পচেফস্ট্রুম ও ব্লুমফন্টেইনের উইকেটের চেয়েও ব্যাটিং সহায়ক। এখানে প্রথমে ব্যাট করলে করতে হবে তিন শতাধিক রান। আর পড়ে ব্যাটিং করলে ৩০০ কিংবা ৩২০ রান তাড়া করার মানসিক প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে হবে।

সর্বশেষ খবর