রবিবার, ১২ নভেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

নতুন কোচের সন্ধানে বিসিবি

ক্রীড়া প্রতিবেদক

পরিসংখ্যান বলছে বাংলাদেশের সবচেয়ে সফল কোচ চন্ডিকা হাতুরাসিংহে। গর্ডন গ্রিনিজ, ট্রেভর চ্যাপেল, ডেভ হোয়াটমোর, স্টুয়ার্ট ল’দের ছাপিয়ে সেরা কোচও। শ্রীলঙ্কার সাবেক এ ক্রিকেটার সাড়ে তিন বছর কোচ ছিলেন বাংলাদেশের। তার কোচিংয়ে বিশ্বকাপ ক্রিকেটের কোয়ার্টার ফাইনাল, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সেমিফাইনাল খেলেছে। ওয়ানডে সিরিজ জিতেছে ভারত, দক্ষিণ আফ্রিকা, পাকিস্তানের বিপক্ষে। টেস্টে হারিয়েছে শ্রীলঙ্কা, ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়াকে। এমন সাফল্য যার কোচিংয়ে, তার শ্রেষ্ঠত্ব মেনে নেওয়াই যায়! কিন্তু তারপরও কিছু ব্যক্তিগত আচরণে সমালোচনার তীক্ষ্ন্ন তরবারিতে প্রতি মুহূর্তেই এফোড়-ওফোড় হয়েছেন তিনি। সাফল্য, সমালোচনা-সব মিলিয়ে সাড়ে তিন বছর দাপটের সঙ্গে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের কোচ ছিলেন। কিন্তু হঠাৎ সবাইকে বিস্মিত করে পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দেন বিসিবিতে। যদিও তার পদত্যাগপত্র এখনো গ্রহণ করেনি বোর্ড। অবশ্য তাকে ফেরানোর চেষ্টা করছে। যদি হাতুরাসিংহে শেষ পর্যন্ত না ফেরেন, তাহলে নতুন কোচের নিয়োগ দিতে বিসিবি সময় নিবে এবং নতুন কোচ হতে পারে উপমহাদেশের। গতকাল বিসিবি পরিচালক ও মিডিয়া চেয়ারম্যান জালাল ইউনুস এমনটাই জানিয়েছেন। শুধু তাই নয়, আগামী জানুয়ারিতে ঘরের মাটিতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে এবং তিন জাতির টুর্নামেন্টে অন্তর্বর্তীকালীন কোচ হিসেবে দেশের কাউকে নিয়োগ দেওয়ারও আভাস দিয়েছেন। দুজনের নাম বাতাসে ভেসে বেড়াচ্ছে। বাংলাদেশের অভিষেক টেস্টের সেঞ্চুরিয়ান আমিনুল ইসলাম বুলবুল ও বিসিবি পরিচালক ও সাবেক টেস্ট অধিনায়ক খালেদ মাহমুদের নাম। লড়াইয়ে এগিয়ে খালেদ মাহমুদ।

হাতুরাসিংহে হঠাৎ সরে দাঁড়ানোয় খুশি হয়েছেন অনেকে। আবার নাখোশও হয়েছেন। অপার ক্ষমতার অধিকারী হওয়া সত্ত্বেও দায়িত্ব ছেড়ে দেওয়ায় একটু বিস্মিত হয়েছে বিসিবি। সিদ্ধান্তটি পুনর্বিবেচনা করতে বিসিবি সিইও নিজামুদ্দিন চৌধুরী সুজন তার সঙ্গে কথা বলেছেন বললেন জালাল ইউনুস, ‘বিসিবি সিইও তার সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। হয়তো পুনর্বিবেচনার জন্য বলা হয়েছে। এখন সে তার সিদ্ধান্তে অটল থাকবেন কি না, তিনিই জানেন।’ শোনা যাচ্ছে তিনি শ্রীলঙ্কান ক্রিকেট দলের দায়িত্ব নিতেই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সর্বশেষ খবর হচ্ছে, ক্রিকেট শ্রীলঙ্কার সভাপতি সুমাথিপালা জানিয়েছেন, ক্রিকেট শ্রীলঙ্কা এখনো তার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়নি। এটা ভেবেই হয়তো বিসিবি তাকে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার জন্য বলেছে।

হাতুরাসিংহে যদি কোনো কারণে না আসেন, তাহলে আগামী জানুয়ারিতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজ ও জিম্বাবুয়েকে নিয়ে তিন জাতির টুর্নামেন্টে অন্তর্বর্তীকালীন কোচ হিসেবে বাংলাদেশের কাউকেই নিয়োগ দেওয়া হবে বলে জানান বিসিবি পরিচালক, ‘যদি হাতুরাসিংহে পুনর্বিবেচনা না করেন, তাহলে নতুন কোচ নিয়োগের বিষয়ে আমরা সময় নিব। এক্ষেত্রে আসন্ন সিরিজে আমরা অন্তবর্তীকালীন কোচ হিসেবে দেশের কাউকে নিয়োগ দিব।’ দেশের কাউকে নিয়োগের কথা বললেও স্পষ্ট করে কিছু বলেননি তিনি। তবে বিসিবি পরিচালক খালেদ মাহমুদ এক সময় জাতীয় দলের সহকারী কোচ ছিলেন। তখন কোচ ছিলেন অস্ট্রেলিয়ার জেমি সিডন্স। এজন্য একটু খোঁজখবরও নিচ্ছে। অবশ্য নতুন কোচ নিয়োগের ক্ষেত্রে উপমহাদেশকেই প্রাধান্য দিবে বিসিবি, তেমনই বললেন জালাল ইউনুস, ‘আমাদের ক্রিকেট সাংস্কৃতির সঙ্গে মিলে যায়, এমন কোচই আমরা নিয়োগ দিতে চাইবো। সেক্ষেত্রে আমাদের পছন্দ উপমাহদেশের কোনো কোচ।’

মুদাস্সর নজর থেকে শুরু করে চন্ডিকা হাতুরাসিংহে, সবাই বিদেশি। এদের মধ্যে সবচেয়ে সফল হাতুরাসিংহে। তার চুক্তির মেয়াদ ২০১৯ সালের বিশ্বকাপ পর্যন্ত। যদি কোনো কারণে তিনি না থাকেন, তখন উপমহাদেশের কোচই দেখা যাবে, প্রায় নিশ্চিত। এক্ষেত্রে অনিল কুম্বলে, রাহুল দ্রাবিড়, আকিব জাভেদ, ওয়াকার ইউনসুদের মতো সেলিব্রেটি কোচ দেখা গেলে অবাক হওয়ার কিছু নেই।

 

সর্বশেষ খবর