বুধবার, ৬ ডিসেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা
কুমিল্লাকে হারাল খুলনা

তামিমের পাশে কোচ সালাউদ্দীন

ক্রীড়া প্রতিবেদক

তামিমের পাশে কোচ সালাউদ্দীন

কুমিল্লার উইকেট পতনের পর উৎসবে মেতেছেন মাহমুদুল্লাহরা। বিপিএলে খুলনার এ জয় দুয়ে থাকার আশা জাগিয়ে রেখেছে —রোহেত রাজীব

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে মাঠের খবরের চেয়ে যেন বাইরের খবরই বেশি মুখরোচক হচ্ছে। উইকেটে কেন রান হচ্ছে না? এই প্রশ্নের উত্তর দিয়ে বিসিবির শোকজ পেয়েছেন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের অধিনায়ক তামিম ইকবাল।

শনিবার কুমিল্লার বিরুদ্ধে প্রথমে ব্যাট করে গেইল-ম্যাককালামদের দল রংপুর করেছিল মাত্র ৯৭ রান। আর ছোট টার্গেটে পৌঁছাতেই শেষ ওভার পর্যন্ত খেলতে হয়েছিল কুমিল্লাকে। মরা উইকেটে ব্যাটিং করতে হিমশিম খেতে হয়েছিল ব্যাটসম্যানদের। তাই ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে এসে তামিম বলেছিলেন, ‘আমার কাছে যে ব্যাপারটা খারাপ লাগছে, এত দর্শক এসেছে, আর এত দর্শক এসে যদি ৯৭ রান আর ৯৭ রান শেষ ওভারে গিয়ে তাড়া করে জয়- দর্শকরা এসে যদি এই ম্যাচ দেখে তাহলে তো খুব হতাশাজনক ব্যাপার। ক্রিকেট বোর্ড বলেন, কিংবা খেলোয়াড়রা- সবাই চায় বিপিএল পরের ধাপে যাক। পরের ধাপে যাওয়ার জন্য উইকেটটা ঠিক থাকতে হবে। এমন জঘণ্য উইকেটে যদি ক্রিকেট খেলা হয় আমি হারতে পারতাম। হারলেও আমি এই কথাই বলতাম। কী কারণে ওরা এমন উইকেট প্রস্তুত করছে আমার কোনো ধারণা নাই।’

এরপরই তামিমকে শোকজ করে বিসিবি। তবে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের অধিনায়কের পাশে রয়েছেন কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দীন। তিনি বলেন, তামিম সত্য কথাই বলেছেন, ‘তামিম যেটা বলেছে একেবারে ঠিক বলেছে। উইকেটটা আসলেই ভালো ছিল না। আমি তামিমকে সব সময়ই ডিফেন্ড করব। যে উইকেটে খেলা হয়েছে সেটা টি-২০র জন্য কোনো উইকেট ছিল না। এখন সত্য কথা বলে যদি কোনো বিপদ হয় তাহলে তো কিছু বলার নেই। তবুও বলব তামিম সঠিক কথাই বলেছে।’

 মিরপুরের উইকেট নিয়ে আক্ষেপ করেছেন সালাউদ্দিন নিজেও, ‘উইকেটটা আসলেই ভালো না। এটা টি-২০র জন্য ভালো উইকেট কখনোই বলব না। উইকেটে দুই ধরনের বাউন্স থাকে। লো হতে পারে। তবে এক ধরনের বাউন্স থাকলে সুবিধা। ব্যাটসম্যানদের জন্য বা যাদের খেলা দেখছি তাদের জন্য অনেক অসুবিধা। এই উইকেট আরও ভালো হলে ভালো। এবারতো উইকেট পর্যাপ্ত বিশ্রামও পাচ্ছে। দুদিন পর পরই একদিন রেস্ট। ভালো উইকেট আমরা আশা করতেই পারি।’ গতকাল খুলনা টাইটানসের কাছে ১৪ রানে হেরে গেছে তামিম-সালাউদ্দীনের কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। প্রথমে ব্যাট করে টাইটানস ৬ উইকেটে ১৭৪ রান করে। লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৬০ রান করে কুমিল্লা। এই হারের পরও পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে রয়েছে ভিক্টোরিয়ান্স। ১৫ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে উঠে গেছে টাইটানস। তবে কুমিল্লার হারে দ্বিতীয় স্থানে ওঠার স্বপ্ন শেষ হয়ে গেছে রংপুর রাইডার্সের। ঢাকার সামনে সুযোগ রয়েছে। আজ যদি সাকিবরা রংপুরকে হারায় তবে টাইটানসকে টপকে আবারও দ্বিতীয় স্থানে উঠে যাবে।

গতকাল হেরেও কোনো ক্ষতি হয়নি কুমিল্লার। তবে এই ম্যাচে অনেক ইতিবাচক দিক দেখছেন কোচ সালাউদ্দীন, ‘অনেক ইতিবাচক দিক আছে। ভালো বোলিং হয়েছে। রকিবুলের খেলা ভালো লেগেছে। তারপরও মনে করি আমাদের ব্যাটসম্যানরা আরেকটু দায়িত্ব নিয়ে খেললে ম্যাচটা আমরা জিততেও পারতাম।’

এই ম্যাচের হারার জন্য বোলিংকেই দায়ী করেছেন সালাউদ্দীন। তিনি বলেন, ‘আমরা ভালো জায়গায় বোলিং করি নাই। জানতাম শেষ দিকে কোথায় বোলিং করতে হবে। মনে হয় মাঠে নেমে ছেলেরা ভুলে গেছে! তারপরও বলব আল আমিন পুরো টুর্নামেন্টে ভালো বোলিং করেছে। একটা ম্যাচ খারাপ হতেই পারে। আমার মনে হয় সে ভালোভাবে কামব্যাক করবে।’

প্রথমে ব্যাটিং করে খুলনা বেশি রান করলেও চেজ করা অসম্ভব ছিল না। সালাউদ্দীন বলেন, ‘টুর্নামেন্ট যত সামনে এগোবে এ রকম রান তাড়া করতেই হবে। এটা একটা ভালো দিক যে ব্যাটিংয়ে এই ম্যাচে যে ভুলগুলো করেছি তা সামনের ম্যাচে শুধরে নিতে হবে। সে লক্ষ্যটাই আমাদের থাকবে। এখনো সেমিফাইনাল, ফাইনাল খেলতে হবে। যদি এই রান তাড়া করতে না পারি তার মানে আমাদের ব্যাটিং ব্যর্থতা। আজকের উইকেটটা আগের দিনের চেয়ে ভালো ছিল। তবুও কিছু বল উল্টাপাল্টা হয়েছে। রানটা আমাদের তাড়া করা উচিত ছিল।’ কোয়ালিফায়ারে কোন দলকে পেলে খুশি- ঢাকা না খুলনা? সালাউদ্দিন বলেন, ‘আমার কোনো ফিলিংস নাই। টপে আছি বলে আলাদা ফিলিংস থাকবে তা নয়। টপে থাকি বা শীর্ষ চারে থাকি আলাদা কোনো ফিলিংস নেই। আলাদা ফিলিংস আসতে পারে টুর্নামেন্টের শেষে। সুপার ফোরের প্রতিপক্ষ সবাই শক্তিশালী। কাউকে আলাদাভাবে দেখার সুযোগ নেই।’

সংক্ষিপ্ত স্কোর

খুলনা টাইটানস : ১৭৪/৬ (২০ ওভার), কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স : ১৬০/৭ (২০ ওভার)

চিটাগং ভাইকিংস : ১৯৪/২ (২০ ওভার), রাজশাহী কিং : ১৪৯/৯ (২০ ওভার)

সর্বশেষ খবর