বৃহস্পতিবার, ২৮ ডিসেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

বাংলাদেশের যত প্রাপ্তি

ক্রীড়া প্রতিবেদক

বাংলাদেশের যত প্রাপ্তি

ক্রিকেটে টেস্টে অস্ট্রেলিয়াকে হারানো ও চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে সেমিফাইনালে খেলাটা বাংলাদেশের বড় প্রাপ্তি বলা যায়। ফুটবলে পুরুষ জাতীয় দলের হাহাকার চললেও যুবারা অনূর্ধ্ব-১৮ সাফ ও এএফসি কাপ বাছাই পর্বে দৃঢ়তার পরিচয় দিয়েছে। দুটো টুর্নামেন্টে পারফরম্যান্স ছিল চোখে পড়ার মতো। অন্ধকারে থাকা ফুটবলে আশার আলো জেগে উঠে। তবে সবকিছু ছাপিয়ে যায় অনূর্ধ্ব ১৫ সাফ ফুটবলে বাংলাদেশের শিরোপা জয়। ছোটদের হলেও মেয়েদের এ সাফল্য দেশজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি করে। মূল সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে বাংলাদেশ মহিলা দল রানার্সআপ হয়েছে।

ক্রিকেট ও ফুটবলে সাফল্য এলেও জনপ্রিয় আরেক খেলা হকি সেভাবে জ্বলে উঠতে পারেনি। ২০১৭ সালে হকির আলোচিত ঘটনা ছিল ঢাকায় ৩২ বছর পর এশিয়া কাপের আয়োজন। ১৯৮৫ সালে তৎকালীন ঢাকা স্টেডিয়ামে ঘাসের মাঠে টুর্নামেন্ট হয়েছিল। এবার হকির নিজস্ব ভেন্যু মওলানা ভাসানী স্টেডিয়ামে এশিয়া কাপের আসর বসে। ফ্লাড লাইটেও গুরুত্বপূর্ণ খেলা অনুষ্ঠিত হয়। ইতিহাসে প্রথম বাংলাদেশে রাতের বেলায় হকি আয়োজন হয়। যদিও ১৯৮৫ সালের মতো সাড়া পড়েনি। কিন্তু আয়োজন ছিল চমৎকার। অংশগ্রহণ প্রতিটি দেশই হকি ফেডারেশনের ব্যবস্থাপনায় সন্তোষ প্রকাশ করে। তবে ঘরের মাঠে পারফরম্যান্স চোখে পড়ার মতো ছিল না। চীনকে হারিয়ে ৬ষ্ঠ স্থান দখল করে। এতে অবশ্য এশিয়া কাপে খেলার সুযোগ পেয়েছে বাংলাদেশ।

ক্রিকেট ফুটবল হকি এখনো বাংলাদেশের প্রধান তিন খেলা। কিন্তু ক্রিকেট ছাড়া প্রতি বছরেই বড় কোনো সাফল্য আসছে না। মেয়েরা সাফ না জিতলে এবারও অন্ধকারে পড়ে থাকত ফুটবল। হকিতে এশিয়া কাপের সফল আয়োজন করলেও ঘরোয়া আসরে ছিল শূন্যতা। বছর শেষ হচ্ছে অথচ প্রিমিয়ার লিগে দেখা নেই। কবে হবে তাও অনিশ্চিত। সম্ভাবনা থাকার পরও বার বার এই খেলা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে বিশেষ এক মহলের ইন্ধনে।

দৃষ্টি ফেরানো যাক অন্য ইভেন্টে। আগের বছর এসএ গেমসে সাঁতারে মাহফুজা খাতুন দুই সোনা ও ভারোত্তোলনে মাবিয়া আক্তার সীমান্ত সোনা জিতে বাংলাদেশের মান বাঁচাল। শুটিং ইভেন্ট থেকেও একটি সোনা এসেছি। গত বছর বড় কোনো গেমস অনুষ্ঠিত হয়নি। তবে বেশকটি আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা হলেও বাংলাদেশের প্রাপ্তি শূন্যই বলা যায়। সাঁতার, অ্যাথলেটিক্স হিটেই আউট বাংলাদেশের প্রতিযোগিরা। ইসলামিক সলিডারিটি গেমসে ১০ মিটার এয়ার রাইফেলে মিশ্র দ্বৈত সোনা জিতেছিলেন আবদুল্লাহ হেল বাকি ও আতকিয়া হাসান। ছেলেদের ব্যক্তিগত ১০ মিটার এয়ার রাইফেলে রুপা জিতেছিলেন রাব্বি হাসান। এই আসরে কুস্তিতে তামা জেতেন শিরিন সুলতানা। শুটিংয়ে এশিয়ান এয়ার গান চ্যাম্পিয়নশিপে রুপা জেতেন অর্নব সারাব।

এই বছর যাই ঘটুক না কেন নতুন বছরে কমনওয়েলথ ও এশিয়ান গেমস। বড় দুই গেমসে বাংলাদেশ কোন কোন ইভেন্টে অংশ নেবে তা এখনো ঠিক হয়নি। অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের বক্তব্য হচ্ছে যোগ্যতা যাচাই করে ক্রীড়াবিদ পাঠানো হবে। ভালো কথা যে ইভেন্টে অংশ নিক হিটেই যেন আউট না হয় সেই ধরনের প্রস্তুতি কী আছে? বছরের শেষের দিকে যুব গেমসের আয়োজন করে প্রশংসিত হচ্ছে। নিঃসন্দেহে এটি ভালো উদ্যোগ। উপজেলা পর্যায়ে এই গেমস ব্যাপক সাড়া পড়েছে। বিভাগীয় পর চূড়ান্ত পর্ব হবে ঢাকায়।  নতুন প্রতিভার সন্ধানও মিলবে। কিন্তু এরাতো আর এশিয়ান বা কমনওয়েলথ গেমসে অংশ নেবে না।

যে ইভেন্টে যাদের সম্ভাবনা আছে তাদের নিয়ে প্রস্তুতিটা তো শুরু করা যায়। কমনওয়েলথ গেমসে ১৯৯০ ও ২০০২ সালে সোনা এসেছিল। ভালোভাবে প্রস্তুতি নিতে পারলে আবারও পদক জেতা সম্ভব। অ্যাথলেটিক বা সাঁতারে পদক আশা করাটা বোকামি হবে। কিন্তু পারফরম্যান্স যেন হাস্যকর না হয় সেই চেষ্টাতো করতে হবে।

 

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর