সোমবার, ২২ জানুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা

বিজয়ের চ্যালেঞ্জ বড় ইনিংস

মেজবাহ্-উল-হক

বিজয়ের চ্যালেঞ্জ বড় ইনিংস

সংবাদ সম্মেলনে এনামুল হক বিজয়

তিন বছর পর দলে ফিরেছেন এনামুল হক বিজয়। তারপরও তার ব্যাটিংয়ে কোনো জড়তা নেই। খেলছেন ভয়ডরহীন। পাওয়ার প্লে-র সুবিধা নিতে একজন ওপেনারকে যেভাবে ব্যাটিং করা উচিত সেভাবেই আগ্রাসী মেজাজে ব্যাট করেন বিজয়। দীর্ঘ বিরতির পর খেলা প্রথম ম্যাচে তার স্ট্রাইকরেট ছিল ১৩৫.৭১। দ্বিতীয় ম্যাচে তার স্ট্রাইকরেট ৯৪.৯৫। প্রথম ম্যাচে জিম্বাবুয়ের বিরুদ্ধে আউট হয়েছেন মাত্র ১৯ রানে, পরের ম্যাচে করেছেন ৩৫। ইনিংস দুটি ছোট ছোট হলেও তাতে মেশানো ছিল আত্মবিশ্বাস। বিজয় যার পরিবর্তে দলে ঢুকেছেন সেই সৌম্য সরকার দল থেকে বাদ পড়েছেন আত্মবিশ্বাসের ঘাটতির কারণেই। তবে শুধু আত্মবিশ্বাস দিয়ে তো আর জাতীয় দলে টিকে থাকা যায় না। তাই এবার বিজয়ের চ্যালেঞ্জ বড় ইনিংস খেলা।

মিডিয়াকে এই ওপেনার বলেন, ‘আমার কাছে মনে হয় বড় ইনিংস খেলা একটা অভ্যাসের ব্যাপার। তামিম ভাইকে দেখলে বুঝতে পারি। তিনি ২০১৫ সাল থেকে যেভাবে বড় ইনিংস খেলে যাচ্ছেন, আমার মনে হয় জুনিয়র ব্যাটসম্যান হিসেবে এটা আমার জন্য শিক্ষণীয় ব্যাপার। আমার মনে হয় বড় ইনিংস খেলা সম্ভব। যদি একটু বুদ্ধি খাটিয়ে সিনিয়রদের সঙ্গে কথা বলে, আর যদি ভাগ্য সঙ্গ দেয় আশা করি বড় ইনিংস খেলতে পারব। এটা তেমন কঠিন হবে না, কারণ প্রিমিয়ার লিগে আল্লাহর রহমতে ৬০০ রান করেছি। স্ট্রাইকরেট ৯০-এর উপরে ছিল। সেঞ্চুরিও ছিল। এখন ইচ্ছা আছে, চেষ্টা আছে, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটেও ওই ফর্ম টেনে আনার।’ প্রথম দুই ম্যাচে সেট হওয়ার পরও বড় ইনিংস খেলতে পারেননি বিজয়। তাই এখন তার ভাবনা একটাই, বড় ইনিংস খেলা, ‘ছোটবেলা থেকে যখন রান করি তা বড় করার চেষ্টা করি। এ জন্য আল্লাহর রহমতে আমার ইনিংসগুলো বড় হয়। আমি সেট হয়ে চেষ্টা করি বড় রান করার জন্য। দুদিন সেট হয়েছি কিন্তু বড় রান করতে পারিনি। চেষ্টা করব বড় রান করার জন্য।’ দলে প্রধান কোচ না থাকায় ক্রিকেটাররা স্বাধীনভাবে খেলার সুযোগ পাচ্ছেন। সবাই নিজের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করছেন। জাতীয় দলে এমন স্বাধীনতা বেশ উপভোগ করছেন বিজয়, ‘টিম ম্যানেজমেন্ট থেকে আমাকে ফ্রিডম দেওয়া হয়েছে আমাকে আমার মতো করে খেলতে। দল যেভাবে চাচ্ছে চেষ্টা করছি সেভাবেই খেলার জন্য। আসলে স্বাধীনতা পেলে তো অবশ্যই ভালো লাগে। নিজের সার্মথ্যটা আরও দেখানো যায়- কতটুকু পারা সম্ভব, কতটুকু পারি।’

প্রথম দুই ম্যাচে বড় ইনিংস খেলতে না পারলেও বিজয়ের খেলা দেখে খুশি টিম ম্যানেজমেন্ট। ক্যাপ্টেন মাশরাফি নিজেই বিজয়ের প্রশংসা করেছেন। ওপেনিংয়ে তামিম ইকবালের সঙ্গী হিসেবে আগ্রাসী কাউকেই চাচ্ছিল দল। বিজয় তার দুই ইনিংসেই সে ইঙ্গিত দিল। দলের পছন্দ মতো খেলতে পেরে নিজেও খুশি এই ওপেনার, ‘দল যেভাবে চেয়েছে, সেভাবেই খেলছি। সবাই খুব সাপোর্ট করছে। সিনিয়র প্লেয়াররা সহযোগিতা করছেন। তামিম ভাই থেকে শুরু করে মুশফিক ভাই, রিয়াদ ভাই, সাকিব ভাই, মাশরাফি ভাই সবাই খুব সাপোর্ট করছেন। সবাই ইতিবাচক আছে। এ জিনিসটা খুবই ভালো লাগার বিষয়। আসলে সব সময় চেয়েছি দল যেভাবে চায় সেভাবে নিজেকে উজাড় করে খেলতে। আমার কাছে মনে হয় টিম যেহেতু খুশি আছে তাই আমি নিজেও খুশি।’

পরিস্থিতি অনুযায়ী খেলাটাই গুরুত্বপূর্ণ। সে বিষয়টাও মাথায় আছে বিজয়ের। তবে এই ওপেনার অনুসরণ করেন তামিম ইকবালকে, ‘আমি একজন টপঅর্ডার ব্যাটসম্যান হিসেবে তামিম ভাইকে অনুসরণ করার চেষ্টা করছি। আমার কাছে মনে হয় বড় রান তাড়াতাড়িই আসবে। যদি ছোট ছোট বিষয় ঠিক করা যায়। মাত্র দুইটা ইনিংস খেললাম। আশা করি বড় ইনিংস।’

প্রথম দুই ম্যাচেই ত্রি-দেশীয় সিরিজের দুই প্রতিপক্ষ জিম্বাবুয়ে ও শ্রীলঙ্কাকে উড়িয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ। দুই ম্যাচ হাতে রেখেই ফাইনালে টাইগাররা। তারপরেও নির্ভার নন, ক্রিকেটাররা। বিজয়ের মতো সবার মাঝেই আরও ভালো করার তীব্র আকাঙ্ক্ষা।

সর্বশেষ খবর