বুধবার, ৭ মার্চ, ২০১৮ ০০:০০ টা

রেডিয়ান্টের সামনে বদলে যাওয়া আবাহনী

ক্রীড়া প্রতিবেদক

রেডিয়ান্টের সামনে বদলে যাওয়া আবাহনী

সাইফ বিদায় নিয়েছে। কিন্তু পেশাদার লিগ চ্যাম্পিয়ন ঢাকা আবাহনী এএফসি কাপে কি করবে? আজই তারা বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে মালদ্বীপ চ্যাম্পিয়ন নিউ রেডিয়ান্টের মুখোমুখি হবে। ম্যাচটি শুরু হবে বিকাল সোয়া ৪টায়।  এক সময় মালদ্বীপ বা ক্লাবগুলোর বিপক্ষে লড়াই মানে গোল উৎসবে মেতে ওঠা। এখন যেমন এএফসি কাপ আগে এশিয়ান ক্লাপ কাপ ফুটবল। আজকের যারা আবাহনীর প্রতিপক্ষ সেই রেডিয়ান্টই এক সময় গোলের বন্যায় ভেসে যেত। এমনো অবস্থা হতো, মাঠে নামার আগে তারা কম গোল দেওয়ার অনুরোধ রাখত। জাতীয় দলের জয়টাও ছিল স্বাভাবিক ঘটনা।

মালদ্বীপের কাছে জাতীয় দল বা বাংলাদেশের মোহামেডান-আবাহনীর মতো ক্লাব হোঁচট খাবে তা ছিল অবিশ্বাস্য ঘটনা। কালের বিবর্তনে সেই দৃশ্য আরও আগেই পাল্টে গেছে। মালদ্বীপকে এখন হারানোটা বড় প্রাপ্তি হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই ঘরের মাঠে ঢাকা আবাহনী লড়লেও রেডিয়ান্টকে হারাবে তা নিশ্চয়তা দেওয়া যায় না। বরং শক্তির বিচারে মালদ্বীপের দলটিকে এগিয়ে রাখা যায়। দলে আছে আলী আশফাকের মতো ক্লাসিক্যাল ফুটবলার। আছে স্পেনের তিন তুখোড় ফুটবলার। গত সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে বাংলাদেশ শোচনীয়ভাবে হেরে যায় মালদ্বীপের কাছে। পরে প্রস্তুতি ম্যাচেও উড়ে যায়। আলী আশফাকের ম্যাজিক নৈপুণ্যের কাছেই বাংলাদেশ মাত হয়ে যায়।  আশফাককে এখন দক্ষিণ এশিয়ার সেরা ফুটবলার বলা হয়। দলে আরও বেশ ক’জন মালদ্বীপ জাতীয় দলের ফুটবলার রয়েছে। সুতরাং প্রতিপক্ষ হিসেবে নিউরেডিয়ান্টকে গোছানো দলই বলা যায়। ঘরোয়া ফুটবলে আবাহনীর শ্রেষ্ঠত্ব নিয়ে কারও সংশয় নেই। সর্বোচ্চ ছয়বার পেশাদার লিগে শিরোপা জেতার রেকর্ড রয়েছে। ১৯৭২ সালে অভিষেক হলেও ১৭ বার লিগ জিতে প্রমাণ করেছে ঘরোয়া ফুটবলে তারাই সেরা। সেই তুলনায় পূর্বে এশিয়ান ক্লাব কাপ বা এখন এএফসি কাপে আবাহনীর রেকর্ড ততটা সুখকর নয়। সেই তুলনায় তাদের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী মোহামেডানই এগিয়ে রয়েছে। এশিয়ান ক্লাব কাপ ফুটবলে তারা দুইবার চূড়ান্তপর্বে খেলেছে। ইরানের পিরুজী ক্লাবকে হারানো ছাড়াও কাতার আল সাদ, উত্তর কোরিয়া এপ্রিল টোয়েন্টি ফাইভের বিপক্ষে ড্র করারও কৃতিত্ব রয়েছে।

যাক অতীতে যাই হোক না কেন, এবার আবাহনী এএফসি কাপে চ্যালেঞ্জ জানাতে প্রস্তুত। অভিজ্ঞ কোচ সাইফুর বারী টিটু বলেছেন, আমাদের প্রস্তুতিটা ভালোই হয়েছে। ছেলেদের পারফরম্যান্স ভালোভাবে যাচাই করতে পেরেছি। প্রস্তুতি ম্যাচে জাতীয় দলকে ৪-০ গোলে হারানোয় উজ্জীবিত খেলোয়াড়রা। লোকালদের পাশাপাশি দলে রয়েছে চার নির্ভরযোগ্য বিদেশি ফুটবলার। প্রতিপক্ষ হিসেবে রেডিয়ান্ট অবশ্যই শক্তিশালী। দলে একাধিক ভালো মানের খেলোয়াড় রয়েছেন। তারপরও ঘরের মাঠে জিতে টুর্নামেন্টে এগিয়ে যেতে চায়। ছেলেরা ভালো খেলতে পারলে অবশ্যই জয় নিয়ে মাঠ ছাড়া সম্ভব। টিটু বলেন, ম্যাচ নিয়ে অনেক হিসাব -নিকাশ চলছে। চ্যালেঞ্জটা অবশ্যই কঠিন। তবে মাঠেই আমরা জবাব দিয়ে নিজেদের সামর্থ্য তুলে ধরতে চাই।

মিডফিল্ডার প্রাণতোষ বলেন, আবাহনীর প্রত্যেকটি প্রেসিডেন্ট কাপ ও গতবারের এএফসি কাপে ছিলাম। সেসব দলের খেলা ও মানসিকতার সঙ্গে এই দলের অনেক পার্থক্য। চার বিদেশি খেলানোর সুযোগ থাকলেও গতবার আমরা ঠিকঠাক নিতে পারেনি। এবার দলে কোনো ঘাটতি নেই। বলতে পারেন নিউ রেডিয়ান্টের সামনে বদলে যাওয়া এক আবাহনীকে দেখবেন। ফুটবলে এমনিতেই হাহাকার চলছে। ব্যর্থতা ছাড়া কিছুই নেই। এ অবস্থায় যদি নিউ রেডিয়ান্টের মতো শক্তিশালী দলকে আবাহনী হারাতে পারে তা হবে হতাশায় ঢাকা ফুটবলের জন্য বড় সুখবর।

সর্বশেষ খবর