মঙ্গলবার, ১০ এপ্রিল, ২০১৮ ০০:০০ টা

বলে মাশরাফি ব্যাটে শান্ত

মেজবাহ্-উল-হক

বলে মাশরাফি ব্যাটে শান্ত

বয়স যত বাড়ছে, পারফরম্যান্সের ক্ষুধাও বেড়ে চলেছে। যে ৩৫ বছর বয়সে একজন পেসার অবসর নেওয়ার চিন্তা করেন বা অবসর নেন, সেই বয়সেই কিনা তিনি সেরা। পারফরম্যান্সের আলোয় প্রতিনিয়ত উজ্জ্বল থেকে উজ্জ্বলতর হচ্ছেন। কথা হচ্ছে বাংলাদেশ জাতীয় ওয়ানডে দলের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজাকে নিয়ে। এবারের ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে সর্বোচ্চ ৩৯ উইকেট শিকার করেছেন ম্যাশ।

কপাল বলে মাশরাফির! যখন যে দলে খেলেন, সেখানেই সাফল্যের বন্যা বইয়ে দেন। বিপিএলে সর্বশেষ রংপুর রাইডার্সে খেলেছেন এবং চ্যাম্পিয়ন করেছেন উত্তরাঞ্চলের দলটিকে। এবার তার ছোঁয়ায় ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে শিরোপা পুনরুদ্ধার করল আবাহনী। তবে একটা পার্থক্যও আছে- রংপুরকে মাশরাফি শিরোপা জিতিয়েছেন অধিনায়ক হিসেবে। আবাহনীর সেরা পারফর্মার। তিনি যে কতটা দুর্দান্ত ছিলেন সেরা বোঝা যাবে সেরা পাঁচ উইকেট শিকারি বোলারের তালিকা দেখলেই। যৌথভাবে দ্বিতীয় স্থানে থাকা তিন বোলার ফরহাদ রেজা, মোহাম্মদ শহীদ ও আসিফ হাসান নিয়েছেন ২৯টি করে উইকেট। আর তাদের চেয়ে ১০টি উইকেট বেশি শিকার করেছেন মাশরাফি। ‘নড়াইল এক্সপ্রেস’ বোলিং করেন অনেক কষ্ট করে। সূক্ষ্মভাবে লক্ষ্য করলে দেখা যায়, বোলিং করার আগে বার বার ‘নি-ক্যাপ’ ঠিক করছেন। মাশরাফির পায়ে সাত-সাতবার অস্ত্রোপচার করেছেন অস্ট্রেলিয়ান চিকিৎসক ডেভিড ইয়ন। ডাক্তার তো বার বার বলেছেন, আর খেলতে পারবেন না! কিন্তু অস্ত্রোপচার করার পরই আবার ম্যাশ মাঠে ফিরেছেন স্বমহিমায়।

আবাহনীর জার্সিতে ম্যাশ যেমন বোলিংয়ে দুরন্ত পারফর্মার, তেমনি ব্যাট হাতে অসাধারণ নৈপুণ্য দেখিয়েছেন দুই ওপেনার নাজমুল হোসেন শান্ত ও এনামুল হক বিজয়। সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের তালিকার সবার ওপরে দুজনের নাম।

নাজমুল হোসেন শান্ত ৫৭.৬১ গড়ে করেছেন ৭৪৯ রান। চারটি সেঞ্চুরিও রয়েছে তার। হাফ সেঞ্চুরি দুটি। ১৫০ রানের অপরাজিত একটি ইনিংসও রয়েছে। আরেক ওপেনার বিজয়ের সঙ্গে শান্তর প্রতিদ্বন্দ্বিতা ভালোই হয়েছে। প্রতিনিয়ত একে অপরকে ছাড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন। তবে শেষ পর্যন্ত দ্বিতীয় স্থানে থাকতে হয়েছে বিজয়কে। দুজনের রানের পার্থক্য মাত্র ৫! বিজয় ৪৯.৬০ গড়ে করেছেন ৭৪৪ রান। দুই সেঞ্চুরি এবং চারটি হাফ সেঞ্চুরি। এবারের লিগে ব্যাটসম্যানদের জয়জয়কার। সাতশর ওপরে রান করেছেন চার ব্যাটসম্যান। শান্ত-বিজয় ছাড়াও এই তালিকায় রয়েছেন লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের অধিনায়ক নাঈম ইসলাম ও প্রাইম দোলেশ্বরের ফজলে মাহমুদ।

নাঈম ৫৫.৩৮ গড়ে করেছেন ৭২০ রান। একটি সেঞ্চুরি সঙ্গে ৬টি হাফ সেঞ্চুরি। ফজলে মাহমুদের ঝুলিতে ৭০৮ রান। গড় ৪৭.২০। দুই সেঞ্চুরির সঙ্গে তিনটি হাফ সেঞ্চুরি।

তবে এবারের আসরে দুর্দান্ত ব্যাটিং করেছেন মোহাম্মদ আশরাফুল। কলাবাগান ক্রীড়া চক্রের হয়ে তিনি করেছেন ৬৬৫ রান। গড় ৬৬.৫০। সেঞ্চুরি করেছেন পাঁচটি এবং একটি হাফ সেঞ্চুরি। আশরাফুলের দুর্ভাগ্য যে তার দল সুপার লিগে উঠতে ব্যর্থ হয়েছে। তা না হলে হয়তো সর্বোচ্চ স্কোরারও হতে পারতেন তিনি। বোলিংয়ে সেরা পাঁচে মাশরাফি ছাড়া বাকি বোলার হচ্ছেন— আসিফ হাসান, মোহাম্মদ শহীদ, ফরহাদ রেজা ও কাজী অনীক। আশরাফুলের মতো দুর্ভাগ্য অনীকও। কেননা তার দল মোহামেডান স্পোর্টিং এবার সুপার লিগেই উঠতে পারেনি। তারপরও মাত্র ১১ ম্যাচ খেলেই নিয়েছেন ২৮ উইকেট। মোহামেডান সুপার লিগে উঠলে আরও ৫ ম্যাচ বেশি খেলার সুযোগ পেতেন তিনি। এবারের লিগে দ্বিতীয় সেরা বোলিং ফিগারও অনীকের। মাশরাফির সেরা বোলিং ফিগার ৬/৪৪, আর অনীকের ৬/৪৯।

সর্বশেষ খবর