শনিবার, ১৪ এপ্রিল, ২০১৮ ০০:০০ টা

তুষারের জোড়া সেঞ্চুরি

ক্রীড়া প্রতিবেদক

তুষারের জোড়া সেঞ্চুরি

বয়স ৩৪। অথচ এখনো ধরে রেখেছেন তারুণ্য। শুধু তাই নয়, ব্যাট হাতে তরুণ ক্রিকেটারদের হারিয়ে দিচ্ছেন অবলীলায়। মাত্র ৮ টেস্ট ও ৪১ ওয়ানডে খেলার অভিজ্ঞতাপূর্ণ তুষার ইমরান সেঞ্চুরি হাঁকানোকে বানিয়ে ফেলেছেন ডালভাত! দীর্ঘ পরিসরের বিসিএল কিংবা জাতীয় ক্রিকেটে ব্যাটিংয়ে নামলেই তিন অঙ্কের ম্যাজিক্যাল ইনিংসগুলো লিখছেন দারুণ সব স্ট্রোকে। চলমান বিসিএলের চতুর্থ রাউন্ডে দুই ইনিংসে সেঞ্চুরি করে নিজেকে নিয়ে গেছেন অনন্য উচ্চতায়। সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে চলমান বিসিএলের চার নম্বর রাউন্ডে দক্ষিণাঞ্চলের পক্ষে পূর্বাঞ্চলের বিপক্ষে উভয় ইনিংসে সেঞ্চুরি করেছেন। প্রথম ইনিংসে ১৩০ রানের পর দ্বিতীয় ইনিংসে করেছেন ১০৩ রান। বিসিএলে চার ম্যাচে এটা চার নম্বর সেঞ্চুরি এবং ক্যারিয়ারে টানা তৃতীয় সেঞ্চুরি। টানা তিন সেঞ্চুরি করে নাম লিখেছেন তামিম ইকবাল ও মিজানুর রহমানের পাশে। এ ছাড়া বাংলাদেশের প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ১২ নম্বর ক্রিকেটার হিসেবে করেছেন উভয় ইনিংসে সেঞ্চুরি। তুষার ইমরানের কীর্তিগাথা বিসিএলের চতুর্থ রাউন্ডে ড্র হয়েছে পূর্বাঞ্চল-দক্ষিণাঞ্চল এবং মধ্যাঞ্চল-উত্তরাঞ্চল ম্যাচ। জাতীয় দলের হয়ে খেলার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। নির্বাচক প্যানেল তার প্রতি আগ্রহও দেখাচ্ছে না। যদিও জাতীয় ক্রিকেট, বিসিএলে নিয়মিত রান করছেন। অবলীলায় করছেন সেঞ্চুরি। নির্বাচকদের নজরে নেই। তারপরও স্বপ্ন দেখছেন, ‘আমার বয়সে এখনো অনেকেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে খেলছেন। আমি এখনো স্বপ্ন দেখি জাতীয় দলে ফেরার। সিলেটে পূর্বাঞ্চলের বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে করেন ১৩০ রান। ২২১ বলে ১৫ চার ও এ ছক্কায় সাজানো তুষারের ইনিংসে ভর করে দক্ষিণাঞ্চলের প্রথম ইনিংসের সংগ্রহ ছিল ৪০৩। জবাবে পূর্বাঞ্চলের প্রথম ইনিংসে সংগ্রহ ছিল ৩০০। দ্বিতীয় ইনিংসে খেলতে নেমে ফের সেঞ্চুরি করেন তুষার। ১০৩ রানের ইনিংস খেলার পর অবসর হয়ে মাঠ ছাড়েন। মাঠ ছাড়ার আগে দেশের প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট ইতিহাসে নাম লিখে ফেলেন এখন পর্যন্ত প্রথম ও শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে ১০ হাজার রানের মাইলফলক গড়া তুষার। ১৫৬ ম্যাচে তুষারের রান ১০ হাজার ৪১৮। আশ্চর্য হলেও সত্যি, প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে আর কোনো ক্রিকেটারের ৯ হাজার রানও নেই। উভয় ইনিংসে সেঞ্চুরি করে সংখ্যাটিকে নিয়ে গেছেন ২৮। যা দেশের সর্বোচ্চ সেঞ্চুরি। দ্বিতীয় স্থানে থাকা নাঈম ইসলামের সেঞ্চুরি ২৩টি। বিসিএলের চার ম্যাচে চার সেঞ্চুরি করেছেন তুষার। যা দেশের ক্রিকেটের বিরল রেকর্ড। অবশ্য প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে টানা চার ম্যাচে চার সেঞ্চুরির রেকর্ড রয়েছে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের। প্রথম রাউন্ডে পূর্বাঞ্চলের বিপক্ষে ১০৫ রানের ইনিংস খেলে তুষার শুরু করেন বিসিএলে। দ্বিতীয় রাউন্ডে মধ্যাঞ্চলের বিপক্ষে খেলেন ৫৬ ও ১৬। তৃতীয় রাউন্ডে উত্তরাঞ্চলের বিপক্ষে ১৪৮ এবং সিলেটে চতুর্থ রাউন্ডে পূর্বাঞ্চলের বিপক্ষে করলেন ১৩০ ও ১০৩।

সিলেটে তুষারের দক্ষিণাঞ্চলের প্রথম ইনিংসে ৪০৩ রানের জবাবে পূর্বাঞ্চল প্রথম ইনিংসে করে ৩০০ রান। দ্বিতীয় ইনিংসে দক্ষিণাঞ্চল ৭ উইকেটে ৩১১ রান তুলে ইনিংস ঘোষণা করে দক্ষিণাঞ্চল। ৪১৫ রানের টার্গেটে খেলতে নেমে পূর্বাঞ্চল ম্যাচ শেষ করে ১ উইকেটে ২২৪ রান তুলে। জোড়া সেঞ্চুরি করেন লিটন দাস ও আফিফ হোসেন ধ্রুব। লিটন অপরাজিত ছিলেন ১১৩ রানে এবং আফিফ ১০০ রানে। বগুড়ায় সাদমান ইসলামের ১০৭ ও মার্শাল আইয়ুবের ১৩২ রানে ভর করে কেন্দ্রীয় অঞ্চলের সংগ্রহ ছিল ৫২৯ রান। জবাবে মুশফিকুর রহিমের ১১১ রানে ভর করে উত্তরাঞ্চলের সংগ্রহ ছিল ৩০০। ফলোঅনে পড়ে দ্বিতীয় ইনিংসে মিজানুর রহমানের সেঞ্চুরিতে ২ উইকেটে ২১৩ রান করলে ম্যাচ ড্র হয়।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর