মঙ্গলবার, ৮ মে, ২০১৮ ০০:০০ টা

হারেনি রিয়াল বার্সার কেউই

রাশেদুর রহমান

হারেনি রিয়াল বার্সার কেউই

এল ক্ল্যাসিকোর লড়াইয়ে বার্সেলোনা ও রিয়াল মাদ্রিদের জয় পায়নি কোনো দলই। দুই বিশ্বসেরা ফুটবলার মেসি ও রোনালদো ফুটবল দ্বৈরথ উপভোগ করছেন ফুটবলপ্রেমীরা —এএফপি

একটি এল ক্ল্যাসিকো, অনেক ইতিহাসের জন্ম। পুরনো রেকর্ড বইয়ের পাতায় নতুন আঁচড়। বেশ কিছু খণ্ড যুদ্ধ। শাসরুদ্ধকর উত্তেজনা। প্রচণ্ড চাপে থাকা রেফারির ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে তোপ দাগানো। ম্যাচ নিয়ন্ত্রণে কার্ডের পর কার্ড প্রদর্শনী। লড়াই শুরুর দিন কয়েক আগে থেকেই উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়। যার রেশটা রয়ে যায় ময়দানি লড়াইয়ের পরও। যে ম্যাচে খেলোয়াড়ি আচরণের সর্বোচ্চ বহিঃপ্রকাশ ঘটে। মারদাঙ্গা মনোভাব। হাতাহাতি। নিজের ভুল বুঝতে পেরে ক্ষমা চাওয়া। আরও কত কী! গত রবিবার এমনই এক এল ক্ল্যাসিকোর সাক্ষী হলো ন্যু ক্যাম্প। অথচ আগেই লা লিগার শিরোপা বিতর্ক শেষ হওয়ায় এল ক্ল্যাসিকোর উত্তাপ নিয়ে অনেকেই ছিলেন সন্দিহান। তাদের ভুল ভেঙে দিলেন মেসি-রোনালদোরা। এল ক্ল্যাসিকোর পরতে পরতে ছড়িয়ে দিলেন উত্তেজনা। এল ক্ল্যাসিকোর লড়াই শেষ হয়েছে ২-২ গোলে। একটি লাল ও ৮টি হলুদ কার্ডে লড়াইটা শেষ করেছেন রেফারি সুয়ারেজের গোলে এগিয়ে যাওয়া বার্সার সঙ্গে রিয়ালকে সমতায় ফেরান রোনালদো। এল ক্ল্যাসিকোতে

রিয়ালের জার্সিতে সর্বোচ্চ ১৮ গোলের (ডি স্টেফানো) রেকর্ড স্পর্শ করেন পর্তুগিজ তারকা। দ্বিতীয়ার্ধে ১০ জনের দল বার্সাকে ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে দেন আর্জেন্টাইন জাদুকর মেসি। এই গোলেই দারুণ রেকর্ডটা গড়েন তিনি। ন্যু ক্যাম্পে লা লিগার এল ক্ল্যাসিকোয় সর্বোচ্চ (৭টি) গোল এখন তার। আগের রেকর্ডটি ছিল জেন্টোর (৬টি)। বেলের গোলে এই ব্যবধান ঘুচে যায় রিয়ালের। ম্যাচটা স্বস্তিকর ড্রতে শেষ করে বার্সা-রিয়াল। পরাজিত হতে হয়নি বলেই যেন দুই দল খুশি!

একটি লাল ও আটটি হলুদ কার্ড। মেসি, সুয়ারেজ, বেলে, রামোস, রাকিটিচদের মতো তারকা ফুটবলাররাও রেহাই পাননি রেফারির রোষানল থেকে। রিয়াল তারকা মার্সেলোকে ফাউল করায় বার্সা ডিফেন্ডার রবের্তোকে প্রথমার্ধেই দেখানো হলো লাল কার্ড। এরপরই ১০ জনের দল নিয়ে এল ক্ল্যাসিকোটা শেষ করতে হয় বার্সাকে। ভালভার্দের ডিফেন্সিভ চিন্তাটা আরও বিকশিত হয় এই লাল কার্ডের পর। তবে মেসি করে যান তার কাজ। কখনো ডিফেন্সে শক্তি বাড়িয়েছেন তিনি। কখনো মধ্যমাঠ থেকে বল টেনে নিয়ে গেছেন রিয়ালের ডি বক্সে। রিয়াল গোলরক্ষক কেইলর নাভাস বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিতে ব্যর্থ হলে মেসির গোলে ম্যাচটা জিততে পারতো বার্সা। তবে গোলের সুযোগ নষ্ট করেছে রিয়াল মাদ্রিদও। গোলমুখে ১৭টা শট নিয়ে গোল করেছে কেবল ২টা। বার্সাও ১১টা শট নিয়েছে। ম্যাচের অর্ধেকটা সময় ১০ জনের দল নিয়ে রিয়ালকে রুখে দেওয়াটাই যেন বার্সার জন্য বিজয়ের। ম্যাচ শেষে ন্যু ক্যাম্পে মেসি-সুয়ারেজদের উৎসব তারই ইঙ্গিত বহন করে। তবে সবচেয়ে বড় বিষয়, লা লিগায় টানা ৪২টা ম্যাচ অপরাজিত থাকা। মৌসুমে এখনো কোনো ম্যাচে পরাজয়ের তিক্ত স্বাদ না পাওয়া। এই তৃপ্তিও কী কম! তাছাড়া দীর্ঘদিনের সতীর্থ ইনিয়েস্তার শেষ এল ক্ল্যাসিকোতে হারতে হয়নি বলেও কম খুশি নন মেসিরা।

সর্বশেষ খবর