শুক্রবার, ২৫ মে, ২০১৮ ০০:০০ টা
তারকাদের যত কথা

মেসি-নেইমারকে ঘিরেই যত স্বপ্ন

ক্রীড়া ডেস্ক

মেসি-নেইমারকে ঘিরেই যত স্বপ্ন

জার্মানি কিংবদন্তি বেকেন বাওয়ার

একটা ব্যাপার লক্ষণীয় যে খেলোয়াড়রা আগের মতো পারফরম্যান্স শো করতে পারে না। অথচ এক সময় বিশ্বকাপই ছিল যোগ্যতা প্রমাণের উপযুক্ত জায়গা। পেলে, গার্ড মুলার, ক্রুইফ, ইয়াসির, ম্যারাডোনা, ব্যাজিও, স্যামুস, প্লাতিনি, রোনাল্ডো বা জিদানরা বিশ্বকাপে ম্যাজিক প্রদর্শন করে তারকার খ্যাতি পেয়েছিলেন। কথাগুলো বেশ আক্ষেপের সঙ্গে বলছিলেন কিংবদন্তি ফুটবলার ফ্রাঞ্চ বেকেন বাওয়ার। বিশ্বকাপ ইতিহাসে যদি সেরা ১০ জনের নাম বাছাই করা হয় তাহলে বেকেন বাওয়ারের নাম আসবেই। ১৯৭৪ সালে তৎকালীন পশ্চিম জার্মানি বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন হয় তারই নেতৃত্বে। ১৯৯০ সালে সেই হারানো ট্রফি জার্মানি উদ্ধার করে বেকেন বাওয়ারের প্রশিক্ষণে। বিশ্বকাপে জার্মান এই কিংবদন্তির নামটি সোনার অক্ষরে লেখা থাকবে। কখনো খেলোয়াড়, কখনো কোচ বা সংগঠক হিসেবে ফুটবলে দীর্ঘদিন নিজেকে জড়িয়ে রাখলেও এখন নীরব ভূমিকা পালন করছেন। তাতে কি স্বপ্নের বিশ্বকাপ যখন মাঠে নামার অপেক্ষা রয়েছে তখন বেকেন বাওয়ারতো আর চুপ হয়ে বসে থাকতে পারেন না। রাশিয়া বিশ্বকাপে কোন দেশ চ্যাম্পিয়ন হতে পারে এনিয়ে ফুটবলপ্রেমীদের মধ্যে তর্ক-বিতর্কের ঝড় বয়ে যাচ্ছে। বসে নেই ফুটবলার বা বিশ্লেষকরা। চুলচেরা বিশ্লেষণ করছেন তারা। বেকেন বাওয়ার বলেন, আগে বুঝতে কষ্ট হতো না বিশ্বকাপে কারা ফেবারিট বা কাদের ট্রফি জয়ের সম্ভাবনা রয়েছে। এবারের ফেবারিট হিসেবে অনেকে ব্রাজিল, জার্মানি, আর্জেন্টিনা ও ফ্রান্সকে প্রাধান্য দিচ্ছেন। সম্ভাবনা  দেখছে স্পেন, ইংল্যান্ড বা বেলজিয়ামকেও নিয়ে। কারও কারও ভাবনা এবার আফ্রিকার প্রতিনিধি মিসরও জ্বলে উঠতে পারে। আসলে এসব বলার জন্য বলা। বাস্তবতা হচ্ছে যারা ভালো খেলবে তারাই বিশ্বকাপ জয় করবে। এখানে ভালো খেলা নিয়েই যত প্রশ্ন।

বেকেন বাওয়ার বলেন, ‘ম্যারাডোনাকে নিয়ে অনেক বিতর্ক রয়েছে। তিনি যে গ্রেট ফুটবলার এই নিয়ে কারও সংশয় থাকার কথা নয়। যে কটা বিশ্বকাপ খেলেছেন নিজেকে উজার করে দিয়েছেন। গোটা দুনিয়াতো তাকে চিনেছে বিশ্বকাপ দিয়েই। এ রকম উদাহরণ অনেক দেওয়া যায়।’ বেকেন বাওয়ার বলেন, ‘ফুটবল ঘিরে এখন একটাই তর্ক চলছে মেসি না রোনালদো সেরা খেলোয়াড়। কয়েক বছর ধরে দুই ফুটবলারের নাম যেভাবে উচ্চারিত হচ্ছে কখনো আর কারও বেলায় হয়নি। আসলে মেসি ও রোনালদো অনেক উঁচুমানের খেলোয়াড়। আমিও তাদের ভক্ত। এখন দুজনই সেরা। ইউরোপিয়ান বা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ খেলেই তারা মহাতারকা বনে গেছেন। সেই তুলনায় বিশ্বকাপে তাদের অবদান ঠুনকোই বলা যায়। মেসি বার্সেলোনায় আর রোনালদো রিয়াল মাদ্রিদে বছরের পর বছর নিজেদের উজার করে খেলছেন। ১৪ জুন বিশ্বকাপ শুরু, অথচ ২৬ মে উয়েফা কাপ ফাইনালে লিভারপুল ও রিয়াল মাদ্রিদ খেলবে। দুই দলেরই বেশ ক’জন খেলোয়াড় বিশ্বকাপে নানা দেশে খেলবেন। এখন আমার প্রশ্ন এই ক্লান্ত শরীর নিয়ে বিশ্বকাপে কোনো খেলোয়াড়ের কাছে ম্যাজিক দেখানোর পারফরম্যান্স আশা করতে পারি? আসলে বিশ্বকাপে মাঠে নামার আগেই তারকা ফুটবলাররা ক্লান্ত হয়ে পড়েন। মেসিকে ঘিরে আর্জেন্টিনা বিশ্বকাপ খেলার স্বপ্ন দেখছে। গতবার বিশ্বকাপে গোল্ডেন বুটও জিতেছেন। ওর মতো গুণী খেলোয়াড়ের কাছে অনেক কিছুই আশা করা যায়। কিন্তু যে ক্লান্ত শরীর নিয়ে মেসি বিশ্বকাপে নামবে তাতে সে কতটা জ্বলে উঠবে সেটা দেখার বিষয়। ব্রাজিলের অবস্থা একই। নেইমারকে ঘিরে ওদের যত স্বপ্ন। যদিও দলের সঙ্গে অনুশীলন করছে। কিন্তু ইনজুরি নিয়ে বিশ্বকাপে সুবিধা করতে পারবে কিনা প্রশ্নই থেকে যাচ্ছে। সব দম শেষ হয়ে যাচ্ছে লিগ খেলেই। বিশ্বকাপে কী আর দিতে পারবে। তারকারা ফ্লপ থাকলে বিশ্বকাপের আকর্ষণ থাকে না। জানি না এ অবস্থায় রাশিয়া বিশ্বকাপ কতটা জমবে?

সর্বশেষ খবর