বেজে উঠল বাঁশির সুর। শুরু হলো হাত তালি। পাশাপাশি আদিম যোদ্ধাদের ‘হু হু হু’ আওয়াজ। পরিবেশটা প্রাচীন যুগের কথাই মনে করিয়ে দেয়। হাতে তলোয়ার আর বল্লম হাতে এভাবেই যুদ্ধে নামতো ভাইকিংরা। ‘হু হু হু’ শব্দ তাদের কানে ফুঁকে দিত যুদ্ধের মন্ত্র। শরীরে এনে দিত বাড়তি উন্মাদনা। ভাইকিংদের সেই যুদ্ধ মন্ত্র জঁপেছিল আইসল্যান্ডের সমর্থকরা। গত ইউরো কাপে তাদের দলকে অদ্ভূত
সুন্দর আয়োজনে সমর্থন দিয়ে উয়েফার কাছ থেকে বিশেষ পুরস্কারও আদায় করেছিল আইসল্যান্ডের সমর্থকরা। পরবর্তীতে আইসল্যান্ড সমর্থকদের এই ‘ভাইকিং চ্যান্ট’ ইউরোপিয়ান ক্লাব ফুটবলেও দেখা যায়। মস্কোর রাস্তায়ও এখন ‘ভাইকিং চ্যান্ট’ শোনা যাচ্ছে। রুশ বিপ্লবের তীর্থভূমি হিসেবে পরিচিত মস্কোর রেড স্কয়ার। পাশেই আছে ঐতিহাসিক বলশই থিয়েটার, বিপ্লবী চত্বর, নাম না জানা অসংখ্য সৈনিকদের স্মৃতিস্তম্ভ। রেড স্কয়ারের পাশেই লেনিনের মৃতদেহ মমি করে রাখা। রেড স্কয়ারের পুরনো ঐতিহ্যে এখন যোগ হয়েছে নতুন মাত্রা। পুলিশের কড়াকড়ি বেড়েছে। বেরিকেড দেওয়ায় বন্ধ হয়ে গেছে অনেক প্রবেশপথ। সেখানে কসকরা পাহাড়া দিচ্ছে। বেরিকেড ভেঙে এগুতে গেলে ভদ্রতার সঙ্গে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। আরেকটু বাড়াবাড়ি করলেই নিপাট ভদ্রলোকের রূপ ছেড়ে বেরিয়ে আসে তারা। এখানে জোর করে করার কিছু নেই। নিয়মটা মানতেই হবে। এমনকি প্রেসিডেন্ট পুতিনকেও।
গত কয়েকদিনে রাশিয়ানদের ফোক মিউজিক শোনার ক্ষেত্রে নিশ্চয়ই সমস্যা হচ্ছে রেড স্কয়ার এলাকায়। এখানে সন্ধ্যা হয় ৯ টায়। এরপরও অনেকটা সময় ফুটবল ফ্যানদের ভাইকিং চ্যান্ট শোনা যায় রেড স্কয়ার চত্বরে। তাদের সঙ্গে যোগ হয় মস্কো দেখতে আসা পর্যটকরাও। আইসল্যান্ড সমর্থকরা অবশ্য রেড স্কয়ারের দিকে খুব একটা আসছে না। ওরা এখন স্পার্টাক মস্কোতেই ব্যস্ত। ১৬ জুন ওই স্টেডিয়ামেই তাদের দেখা হবে আর্জেন্টিনার সঙ্গে। ভাইকিং চ্যান্ট শুনে, শুনে অভ্যস্ত হয়ে উঠছে মস্কোবাসী। হয়ত রাশিয়ার ম্যাচে ওদের কণ্ঠেও শোনা যাবে এমনই চিৎকার। আইসল্যান্ড প্রথমবার ইউরো কাপ খেলতে গিয়েই সবার মন জয় করেছিল। বিশ্বকাপে খেলতে নামার আগেই এখানে তারা জয় পাতাকা উড়িয়েছে। এবার মাঠে লড়াইয়ে কেমন করে তাই দেখার বিষয়!