শনিবার, ৪ আগস্ট, ২০১৮ ০০:০০ টা

জাকার্তায় জামালদের সম্ভাবনা

ক্রীড়া প্রতিবেদক

জাকার্তায় জামালদের সম্ভাবনা

কাতারে প্রস্তুতি শেষে জামাল ভুইয়া, জাফর ইকবালরা এখন দক্ষিণ কোরিয়ায়। জাকার্তা এশিয়ান গেমসের শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশ। কন্ডিশনিং ক্যাম্পের পাশাপাশি বেশ কয়েকটি প্রস্তুতি ম্যাচও খেলবে সেখানে। এরপর ১১ আগস্ট সিউল থেকে সরাসরি জামালরা উড়ে যাবেন জাকার্তা। সেখানে ফুটবল ডিসিপ্লিনের প্রিলিমিনারি রাউন্ডে অংশ নেবেন। প্রতিপক্ষ এশিয়ান ফুটবলের তিন পরাশক্তি উজবেকিস্তান, কাতার ও থাইল্যান্ড। গেমসের আনুষ্ঠানিক পর্দা উঠবে ১৮ আগস্ট। অথচ ফুটবল শুরু ১৪ আগস্ট এবং সেদিনই বাংলাদেশ প্রথম ম্যাচ খেলবে মধ্য এশিয়ার দেশ উজবেকিস্তানের বিপক্ষে। ১৯৭৮ ব্যাংকক এশিয়ান গেমস থেকে নিয়মিত অংশ নিচ্ছে বাংলাদেশ। ১৯৯৪ সালের হিরোশিমা ও ১৯৯৮ সালের ব্যাংকক বাদে প্রতিটি গেমসে অংশ নিয়ে বাছাইপর্ব উতরাতে পারেনি কখনই। এবার কি কঠিন হার্ডল টপকানোর কোনো সম্ভাবনা রয়েছে? নতুন কোচ জেমি ডে স্বপ্ন দেখছেন। তবে সেটা প্রতিপক্ষ দলগুলোর বিপক্ষে ভালো খেলার। মুখে না বললেও ফুটবল দলের মূল টার্গেট সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ।

এক সময়কার সম্ভাবনাময় ফুটবল নিয়ে এখন স্বপ্ন দেখতে ভয় পান সবাই। ফুটবলের অবস্থান নামতে নামতে এখন তলানিতে। এর চেয়ে নিচে নামার আর কোনো জায়গা নেই। সেই অবস্থা থেকে ঘুরে দাঁড়াতে চাইছে বাফুফে। ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন নিয়ে বাফুফে ফুটবল দলের দায়িত্ব তুলে দিয়েছে ইংলিশ ভদ্রলোক জেমি ডের হাতে। দায়িত্ব নিয়েই ডে উড়ে যান কাতার। সেখানে এক সপ্তাহের প্রস্তুতি নিয়ে ফিরে আসেন দেশে। মধ্যপ্রাচ্যের দেশটিতে অনুশীলনের ফাঁকে স্থানীয় একটি ক্লাবের বিপক্ষে ম্যাচ খেলেন জামালরা। কাতার থেকে দেশে ফিরে কয়েক দিনের বিশ্রাম নিয়ে ফের উড়ে যান কোরিয়া। সেখানেই এখন অবস্থান করছেন। কোরিয়া যাওয়ার ফুটবলারদের পারফরম্যান্স নিয়ে সন্তুষ্টি পোষণ করেছেন কোচ, ‘ফুটবলাররা নিজেদের প্রমাণে মরিয়া। আশা করি কোরিয়ার প্রস্তুতিটা কাজে লাগবে এশিয়ান গেমসে।’ কতটা কাজে লাগবে? ১৪ আগস্ট উজবেকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচ, ১৬ আগস্ট থাইল্যান্ড এবং ২০ আগস্ট গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচের প্রতিপক্ষ কাতার। তিন ফুটবল পরাশক্তির বিপক্ষে কতটা লড়াই করবে জেমি ডে-এর শিষ্যরা।

২০১৪ সালে ইনচন এশিয়ান গেমসে বাংলাদেশ আলো ছড়াতে পারেনি। তবে ম্যাচ জিতেছিল একটি। আফগানিস্তানকে হারিয়েছিল ১-০ গোলে। হংকংয়ের কাছে ১-২ গোলে এবং উজবেকিস্তানের কাছে হেরেছিল ০-৩ গোলে। অবশ্য ২০১০ সালে গুয়াংজু এশিয়ান গেমসেও লড়েছিল উজবেকদের বিপক্ষে। আট বছর আগের ওই ম্যাচের ফলও ছিল ৩-০। মধ্য এশিয়ার দেশটির বিপক্ষে এখন পর্যন্ত তিন ম্যাচ খেলে হেরেছে সবগুলোতে। গোল করতে পারেনি একটিও। উল্টো খেয়েছে ১৫টি। ১৬ আগস্ট প্রতিপক্ষ থাইল্যান্ড। এক সময় দেশটির বিপক্ষে লড়াই করত সমানে সমান। কিন্তু এখন লড়াই একপেশে। বাংলাদেশ এবার নিয়ে নবমবারের মতো এশিয়ান গেমসে অংশ নিচ্ছে। থাইল্যান্ডের বিপক্ষে গেমসে এই প্রথম খেলবে। দুই দেশ পরস্পরের বিপক্ষে খেলেছে এখন পর্যন্ত ১৪ ম্যাচ। বাংলাদেশের জয় সাকুল্যে ২ এবং হার ৯টি। গোল করেছে ১১টি এবং খেয়েছে ২৯টি। ২০ আগস্ট কাতারের বিপক্ষে ম্যাচ। ২০২২ সালের বিশ্বকাপ ফুটবলের আয়োজক দেশটির বিপক্ষে এশিয়ান গেমসে এবারই প্রথম লড়বে। যদিও আগের ৪ মুখোমুখিতে জয়ের রেকর্ড নেই। একটি ড্র এবং হার তিনটিতে। প্রতিপক্ষ তিন দলের মধ্যে কাতারই একটু দুর্বল প্রতিপক্ষ। কাতারের বিপক্ষেই স্বপ্ন দেখতে পারেন জামাল, জাফররা।

বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছে ২৩৯টি। জয় ৫৮, ড্র ৪৯ এবং হার ১৩২ ম্যাচে। গোল করেছে ২১৫টি এবং খেয়েছে ৪৭৪টি। এশিয়ান গেমসে অংশ নিচ্ছে ১৯৭৮ সাল থেকে। ১৯৯৪ সালের হিরোশিমা ও ১৯৯৮ ব্যাংকক এশিয়ান গেমস শুধু খেলেনি। বাকি সবগুলো আসরে অংশ নিয়ে ম্যাচ খেলেছে ২৩টি। জয় মাত্র তিন ম্যাচে। ১৯৮২ সালে দিল্লি এশিয়ানে মালয়েশিয়াকে ২-১ গোলে, ১৯৮৬ সালে সিউল এশিয়াডে নেপালকে ১-০ এবং ২০১৪ গুয়াংজু এশিয়াডে আফগানিস্তানকে হারিয়েছে ১-০ গোলে। এ ছাড়া বাকি সবগুলো ম্যাচেই ফল হার। এশিয়ান গেমসে এমন পারফরম্যান্সে প্রথম রাউন্ড টপকানোর স্বপ্ন একটু বেশিই।

 

সর্বশেষ খবর