সোমবার, ২৬ নভেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

সাকিবদের নজর এখন মিরপুর

ক্রীড়া প্রতিবেদক

সাকিবদের নজর এখন মিরপুর

তাইজুলের বলে আমব্রিস শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে যখন মুশফিকের গ্লাভসবন্দী হন, তখনো চট্টগ্রাম টেস্টের বাকি আট সেসন! বন্দর নগরীতে সফরকারী ওয়েস্ট ইন্ডিজকে মাত্র সাত সেসনেই লজ্জা উপহার দিয়েছেন সাকিব গং। পাঁচ দিনের টেস্টে বাংলাদেশ ৬৪ রানের জয় পেয়েছে স্পিন চতুষ্ঠয় সাকিব-তাইজুল-মিরাজ-নাইম জাদুতে। চট্টগ্রামে অসাধারণ জয়ের আত্মবিশ্বাস নিয়ে গতকাল রাতে ঢাকায় পা রেখেছেন ৯ টাইগার। আজ সকালে আসবেন আরও চারজন এবং বাকিরা আসবেন ক্যারিবীয়দের সঙ্গে। মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট শুরু ৩০ নভেম্বর, শুক্রবার। টেস্ট জিতলেই জুলাইয়ে সিরিজ হারের প্রতিশোধ নিতে পারবে বাংলাদেশ। স্পিন ভেল্কিকে চট্টগ্রাম জয়ের পর সাকিব বাহিনীর নজরে এখন মিরপুর। চট্টগ্রামের উদ্ভাসিত সাফল্যের পর মিরপুরেও ঘূর্ণি উইকেট বানিয়ে ক্যারিবীয়দের বধের পরিকল্পনা টাইগারদের। এখন শুধুই অপেক্ষা। চট্টগ্রাম যতটা পয়মন্ত টাইগারদের, ঠিক ততটা নয় মিরপুর। তারপরও সর্বশেষ ৫ টেস্টের পারফরম্যান্স আত্মবিশ্বাস জোগাচ্ছে টাইগারদের। আত্মবিশ্বাসী করেছে অধিনায়ক সাকিবকে। মিরপুরে ১৮ টেস্টে বাংলাদেশের জয় সাকল্যে ৪টি, হার ১১ এবং ড্র ৩। কিন্তু পাঁচ টেস্টে জয় ৩, হার ও ড্র ১টি করে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সর্বশেষ টেস্টেটি বাংলাদেশ জয় পেয়েছে ২১৮ রানের পাহাড়সম ব্যবধানে। জয় উপহার দেন দুই স্পিনার তাইজুল ও মেহেদী মিরাজ। ‘দ্বীপরাষ্ট্র’ শ্রীলঙ্কার কাছে হেরে যায় ২১৫ রানে। অস্ট্রেলিয়াকে ২০ রানের হার উপহার দিয়েছিল বাংলাদেশ সাকিবের অলরাউন্ডিং পারফরম্যান্সে। ইংল্যান্ডকে হারিয়েছিল ১০৮ রানে। ইংলিশদের হারানোর নায়ক অফ স্পিনার মেহেদী মিরাজ। অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড ও জিম্বাবুয়েকে হারানোর আত্মবিশ্বাস নিয়েই মিরপুরে নামছে ক্যারিবীয়দের বধ করতে।

চট্টগ্রামে টেস্টের স্থায়িত্ব পৌনে তিন দিনের। প্রথম দিনের পুরোটা ব্যাট করেছিল বাংলাদেশ মুমিনুল হকের সেঞ্চুরিতে। প্রথম দিনের পারফরম্যান্সে মনে হয়নি পরের দুদিনে স্পিনারদের দাপটে ত্রাহিনকুল অবস্থা হবে ব্যাটসম্যানদের। তাই হয়েছে। স্পিনারদের ঘূর্ণিতে দ্বিতীয় দিন উইকেটের পতন হয়েছে ১৭টি এবং তৃতীয়দিন ১৫টি। দ্বিতীয়দিন শেষ সেসনে বাংলাদেশ হারায় ৫ উইকেট। তৃতীয়দিন প্রথম সেসনেই দুই দল হারায় ৯ উইকেট! অবিশ্বাস্য! দুই দলের ৪০ উইকেটের ৩৪টিই নিয়েছেন দুই দলের স্পিনারররা। বিশেষ করে ক্যারিবীয়দের ২০ উইকেটের সবগুলো ভাগ করে নিয়েছেন চার টাইগার স্পিনার। প্রথম ইনিংসে ১৭ বছর বয়সী অভিষিক্ত নাঈম হাসান ৬১ রানে ৫ উইকেট নিয়ে বিশ্বরেকর্ড গড়েন। সবচেয়ে কম বয়সী অফ স্পিনার হিসেবে অভিষেকে ৫ উইকেট নেওয়া নাঈম দ্বিতীয় ইনিংসে সাফল্য পাননি। কিন্তু উজ্জ্বল ছিলেন অধিনায়ক সাকিব, তাইজুল ও মিরাজ।

আঙ্গুলের ইনজুরিতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজ খেলেননি সাকিব। চট্টগ্রামে খেলতে নেমেই বাজিমাত। প্রথম ইনিংসে ৩টি এবং দ্বিতীয় ইনিংসে ২ উইকেট। দলের অসাধারণ জয়ে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেওয়া সাকিব বাংলাদেশের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে টেস্টে ২০০ উইকেট নেওয়ার বিরল কৃতিত্ব দেখান। ৩ হাজার রান ও ২০০ উইকেট নেওয়ার রেকর্ডে তিনি পেছনে ফেলেছেন ইয়ান বোথাম, ইমরান খান, গ্যারি সোবার্স, কপিল দেব ও জ্যাক ক্যালিসের মতো ক্রিকেট কিংবদন্তিদের। জিম্বাবুয়েকে গুড়িয়ে দেওয়া তাইজুল প্রথম ইনিংসে সতীর্থদের সঙ্গে পেরে উঠেননি উইকেট শিকারের লড়াইয়ে। দ্বিতীয় ইনিংসে সঙ্গীদের সুযোগ না দিয়ে তুলে নেন ৬ ক্যারিবীয় উইকেট। দুই ইনিংসেই সমানতালে উইকেট শিকার করেছেন মেহেদী মিরাজ। চার স্পিনার দিয়ে ক্যারিবীয়দের বধ করলেও ব্যাটিং নিয়ে চিন্তিত টিম ম্যানেজমেন্ট। যদিও সেঞ্চুরি করেছেন মুমিনুল। কিন্তু ব্যর্থ ছিলেন ওপেনাররা। হয়তো সুস্থ হয়ে মিরপুর টেস্টে ফিরতে পারেন তামিম ইকবাল।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর