বৃহস্পতিবার, ২০ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

শিরোপার অপেক্ষায় শেখ রাসেল

ক্রীড়া প্রতিবেদক

শিরোপার অপেক্ষায় শেখ রাসেল

সেমিফাইনালে ব্রাদার্সকে হারানোর নায়ক শেখ রাসেলের আজিজভকে (১০ নম্বর জার্সি) নিয়ে সতীর্থদের উল্লাস - বাংলাদেশ প্রতিদিন

শৈত্য প্রবাহে জবুথবু গোটা দেশ। শরীর হিম করা ঠাণ্ডায় কাঁবু শহরের প্রাণকেন্দ্রে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে থাকা বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামও। পশ্চিমাকাশে তখনো সূর্য অস্ত যায়নি। অথচ অন্ধকারের চাদরে ঢাকা পড়ে গেছে স্টেডিয়ামের নীল আকাশ। অন্ধকারকে আলোকিত করতে নির্ধারিত সময়ের বহু আগে জ্বলে উঠে চারদিক ঘিরে থাকা ফ্লাড লাইটগুলো। সেই আলোয় সোনালি রং ধারণ করে স্টেডিয়ামের সবুজ ঘাসের মাঠ। সেখানেই মনমাতানো ফুটবল খেলে শেখ রাসেল আলোয় আলোকিত করে তোলে নিজেদের। উজবেকিস্তান জাতীয় দলের স্ট্রাইকার আলিশার আজিজভের চোখধাঁধানো জোড়া গোলে স্বাধীনতা কাপ ফুটবলের ফাইনালে উঠেছে শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র। ২০১২-১৩ সালের ট্রেবলজয়ী শেখ রাসেল মৌসুমের দ্বিতীয় টুর্নামেন্টের ফাইনালে উঠতে প্রথম সেমিফাইনালে ২-০ গোলে হারিয়েছে ব্রাদার্স ইউনিয়নকে। শেখ রাসেল এবার নিয়ে তৃতীয়বারের মতো দেশের সবচেয়ে পুরনো টুর্নামেন্টটির ফাইনালে উঠল। এর আগে ২০১১ সালে রানার্স আপ এবং ২০১৩ সালে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল দলটি। আজ দ্বিতীয় সেমিফাইনালে মুখোমুখি হবে মৌসুমের প্রথম টুর্নামেন্ট ফেডারেশন কাপের দুই ফাইনালিস্ট ঢাকা আবাহনী ও বসুন্ধরা কিংস। জয়ী দল ২৪ ডিসেম্বর ফাইনালে মুখোমুখি হবে শেখ রাসেলের। 

মৌসুমের প্রথম টুর্নামেন্ট ফেডারেশন কাপের সেমিফাইনালেই থেমে গিয়েছিল শেখ রাসেল। তবে দলটির টার্গেট এবার শিরোপা। ফেডারেশন কাপে পারেনি। স্বাধীনতা কাপের ১০ম আসরের ফাইনালে উঠে এখন অপেক্ষায় শিরোপা উৎসবের। দলটি গ্র“প পর্বে স্কোরিং সমস্যায় ভুগছিল। ‘ডি’ গ্র“প থেকে রানার্সআপ হয়ে জায়গা নেয় কোয়ার্টার ফাইনালে। বসুন্ধরা কিংস ও শেখ জামালের সঙ্গে গোলশূন্য ড্র করে। কোয়ার্টার ফাইনালে অবশেষে গোলের দেখা পায় সাইফুল বারী টিটুর দলটি। ২-০ গোলে চট্টগ্রাম আবাহনীকে হারিয়ে ঠাঁই নেয় সেমিফাইনালে। গোপীবাগের দল ব্রাদার্স ইউনিয়নও কোয়ার্টার ফাইনালে জায়গা নেয় মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ও চট্ট. আবাহনীর সঙ্গে ড্র করে। কোয়ার্টার ফাইনালে দলটি টাইব্রেকারে হারায় গত আসরের চ্যাম্পিয়ন আরামবাগকে। নির্ধারিত সময়ের ম্যাচটি ৩-৩ গোলে ড্র ছিল। পরে টাইব্রেকারে ব্রাদার্স জয় পায় ৪-৩ গোলে। গতকাল স্বাধীনতা কাপের প্রথম সেমিফাইনালে দুই দলই আক্রমণাÍক ফুটবল খেলতে থাকে। আক্রমণ ও পাল্টা আক্রমণে শীতের বিকালে খেলাটি জমে উঠে। মন ভরে ছন্দোময় ফুটবল উপভোগ করেন মাঠে উপস্থিত হাতে গোনা কিছু দর্শক। দুই দলের আক্রমণ ও পাল্টা আক্রমণে খেলা যখন প্রথমার্ধের অন্তিম সময়ে, তখনই এগিয়ে যায় শেখ রাসেল। এগিয়ে নেন দলটির উবজেকিস্তান জাতীয় দলের পক্ষে খেলা আলিশার আজিজভ। রাফায়েল ওডোইনের কর্নার ব্রাদার্সের রক্ষণভাগের ফুটবলাররা ঠিকমতো ক্লিয়ার করতে ব্যর্থ হন। সেই সুযোগকে কাজে লাগান আজিজভ। সতীর্থের পা ছুঁয়ে আসা বলে বাঁ পায়ের ভলিতে উচ্ছ্বাসে মাতান শেখ রাসেলের সমর্থক, কর্মকর্তা ও ফুটবলারদের (১-০)। ওই গোলের কিছুক্ষণ পর বিরতির বাঁশি বাজান রেফারি। দ্বিতীয়ার্ধের খেলা শুরুর পর ফের বলের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয় শেখ রাসেল। ৫১ মিনিটে জয় নিশ্চিত করে ২০১২-১৩ মৌসুমে ট্রেবলজয়ী দলটি। ডান প্রান্ত থেকে অ্যালেক্স রাফায়েল দ্য সিলভার ক্রসে রাফায়েল ওডোইন ঠিকমতো মাথা ছোঁয়াতে পারেনি। বল চলে যায় মোহাম্মদ খালেকুরজামানের পায়ে। বল ধরে খালেকুরজামান আড়াআড়ি ক্রস করেন। শূন্যে ভেসে আসা বলে দারুণ এক শটে দলের জয় নিশ্চিত করার পাশাপাশি নিজের দ্বিতীয় গোলটি করেন আলিশার আজিজভ(২-০)। ওই গোলের পর অবশ্য টিটুর দল রক্ষণভাগ শক্ত করে ফেলেন। ফলে পাল্টা আক্রমণ করেও গোলের দেখা পায়নি ব্রাদার্স ইউনিয়ন।

সর্বশেষ খবর