মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল, ২০১৯ ০০:০০ টা

শিরোপা জয়ের সামর্থ্য আছে

রাখঢাক না করে অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা বলেই দিয়েছেন শিরোপা জয়ের সামর্থ্য আছে বাংলাদেশের। বিশ্বকাপের উদ্দেশ্যে দেশ ছাড়ার আগে গতকাল মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে শেষ সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেছেন নড়াইল এক্সপ্রেস।

শিরোপা জয়ের সামর্থ্য আছে

অভিজ্ঞ দল প্রসঙ্গে...

অভিজ্ঞ ক্রিকেটার অনেক আছে বলে গত কয়েকবারের থেকে এবারের দলটাকে ব্যালেন্স বলা যায়। জুনিয়রদেরও অনেকেরই বিশ্বকাপ খেলার অভিজ্ঞতা আছে। অভিজ্ঞতা থাকলে ভালো টুর্নামেন্ট খেলা যাবে। অবশ্যই ইউনাইটেড থাকতে হবে।  একটা টুর্নামেন্টে ৯টা ম্যাচ খেলতে হবে। 

 

সেমিফাইনালের সম্ভাবনা...

অসম্ভব কোনো কিছুই  নয়। অবশ্যই সম্ভব।  তবে কঠিন অনেক কঠিন ।  এর আগে বিশ্বকাপ কাপ যে রকম ছিল গ্রুপ পর্বে ছিল একটা বড় দলকে হারাতে পারলে তাদের কামব্যাক করা কঠিন হয়ে যেত। এখানে ৯টা ম্যাচ। যারা প্রত্যাশা করছে সেমিফাইনাল খেলবে তাদের ঘুরে দাঁড়ানোর অনেক সুযোগ থাকবে।  আমাদেরকে ওই জায়গাটা খেয়াল রাখতে হবে।

 

নিজের শেষ বিশ্বকাপ কিনা?

এটাই আমার শেষ বিশ্বকাপ। আলাদা করে নিজেকে তৈরি করার কিছু নেই।  আমার কাছে মনে হয় না আলাদা করে তৈরি হয়ে ওখানে কিছু করতে পারব।  খেলোয়াড় হিসেবে আমাকে পারফর্ম করতে হবে।  অবশ্যই অধিনায়কত্বটা খুব গুরুত্বপূর্ণ হবে। আমার  যে দায়িত্বটা আছে সেগুলো চেষ্টা করবো পুরোপুরি ঠিক করার।

 

স্পোর্টিং উইকেট প্রসঙ্গে...

বিশ্বকাপে আইসিসির চাওয়া থাকে ফ্ল্যাট উইকেট এবং প্রচুর রানের। সেক্ষেত্রে অবশ্যই এখানে বড় রানের খেলা হবে। ইংল্যান্ডে এই সময়ে অনেক রান হয়। সব দলের বোলারদের জন্যই চ্যালেঞ্জ। রান করার সামর্থ্য যে আমাদের নেই তা বলব না। অতীতে হয়তো এরকম রেকর্ড খুব একটা নেই।  চেইজ করে জিতেছি বা এতো বড় রান করেছি।  শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে আমরা ৩২৯ করেছিলাম এবং তামিম ১০০ করেছিল।  এ রকম যদি ব্যাটিং করি তাহলে সম্ভব।

 

পেস বোলিং...

শেষবার আমরা বিশ্বকাপ খেলেছিলাম অস্ট্রেলিয়ায়। একদম সিমিলার কন্ডিশন এবারও। ফ্ল্যাট উইকেটও ছিল। তাদের চাওয়া ছিল ওরকমই। ওর ভিতরে ওখানে পেসাররা ভালো করেছিল। আমাদের এখানেও ভালো করার সামর্থ্য আছে। আমি সিওর, ওখানে যেকোনো দলের পেস বোলাররা যদি ভালো করে তাহলে ওখানে ভালো করার সুযোগ বেশি থাকবে। 

 

সব মিলে বোলিং...

আমাদের ভালো রিস্ট স্পিনার নেই। তবে সাকিব ওয়ার্ল্ড ক্লাস। মিরাজ খুব ভালো করছে।  মুস্তাফিজ, রুবেল, সাইফউদ্দিন, আমি আছি।  ইউনিট হিসেবে আমরা খারাপ না যে আমরা ওই চাপ হ্যান্ডেল করতে পারব না। আমাদের  সামর্থ্য সম্পর্কে আমরা জানি। আমাদের সেরা সামর্থ্য ব্যবহার করা গুরুত্বপূর্ণ।

 

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম...

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম আমাদের ভালো কিংবা খারাপ ক্রিকেট খেলতে কখনো হেল্প করবে না।  বিশেষভাবে আমাদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। আমার কাছে মনে হয় এটার দিকে নজর না রাখাই  বেটার হবে। এটা আবার যার যার ব্যক্তিগত বিষয়।   সোশ্যাল মিডিয়ায় তো আমি আছি। কিন্তু এটা আমাকে ইফেক্ট করে না।  আমি জানি সাকিবকেও করে না। অন্য কাউকে করতে পারে। যাকে করে  সেটা তার বুঝতে হবে। এটার জন্য টিম রুলস জারি করার কিছু নেই। এটা ব্যক্তিগত বিষয়।  যেহেতু সমস্যা তৈরি করে এটার থেকে দূরে থাকতে পারলে ভালো।  দুইটা মাস টোটাল মনোযোগ বিশ্বকাপকেন্দ্রিক থাকা ভালো হবে। আমাদের দল ও  দেশের ক্রিকেটের জন্য তাহলে ভালো হবে।

 

ত্রিদেশীয় সিরিজ...

আমরা প্রস্তুতির জন্য আয়ারল্যান্ডকে বেছে নিয়েছি।  সেখানকার উইকেট খুব গুরুত্বপূর্ণ। যেই উইকেটটা ইংল্যান্ডে থাকবে সেটা যেন পাই। আর সেখানে প্রত্যেকটা ম্যাচ জয় করা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আর বিশ্বকাপের জন্য আলাদা অ্যাডভান্টেজ হবে যদি আমরা এখান থেকে জিতে ওখানে যেতে পারি।

 

বিশ্বকাপ স্কোয়াড...

প্রথমত, যেই দলটা দিয়েছে, যেই দল দিবে  সেটাকেই সেরা দল বলতে হবে অধিনায়ক হিসেবে। আমরা সেরা দল নিয়েই যাচ্ছি। ১৫ জনের যখন  স্কোয়াড হয় তখন আনফরচুনেট কিছু থাকেই। হয়তো যাকে কেউ এক্সপেক্ট করছে না সেটা দলের জন্য ফরচুনেট হয়ে যায়। এটা এখানে এসে বলা কঠিন।

 

সেরা ফলাফল...

সেমিফাইনালে যদি যেতে পারি, অনেক বড় অর্জন হবে। কারণ এবারের ফরম্যাট সেই ৯২’র মতো, হুইচ ইজ ভেরি ডিফিকাল্ট। সেমিফাইনালে যাওয়া অনেক বড় অর্জন। আমরা অনেকবার  সেমিফাইনাল, কোয়ার্টার ফাইনালে গিয়ে হেরেছি। আগে  সেমিফাইনালটা যদি যাই, তাহলে বড় অর্জন হবে। তারপর ওই পার্টিকুলার দিনে ভালো খেলা গুরুত্বপূর্ণ।

 

গ্রুপ পর্বে ৯ ম্যাচ...

৯টা ম্যাচে, আমার মনে হয় প্রতিটা দলের খারাপ ভালো দিয়ে যাবে। এটা খুব ইম্পরট্যান্ট যে নেক্সট  ডে’তে কামব্যাক করা। যেটা যাবে সেটা তো আর ফিরে আসা সম্ভবও না। এটা নিয়ে আমরা আলোচনাও করেছি। বিশ্বকাপে এক মাসে ৯টা ম্যাচ  খেলতে হবে। এখানে প্রতিটা ম্যাচ আমাদের জন্য সমান যাবে না। যেটা ম্যাচ খারাপ যাবে পরের ম্যাচে যেন সেই রেশটা না থাকে। এই প্রস্তুতি নিয়ে কথা বলছি।

 

শিরোপা জয়ের সামর্থ্য...

বিশ্বকাপ জেতার সামর্থ্য আছে, আবার কিছু  নেতিবাচক ব্যাপারও আছে। হয়তবা শেষ এশিয়া কাপ জিতলে এই ধরনের টুর্নামেন্ট কীভাবে জিততে হয় এটার অভ্যাস হতো, এটার অভ্যাস থাকা খুব জরুরি। তিনবার এশিয়া কাপের ফাইনালে উঠে জিততে পারিনি। যে মানসিক চাপ থাকে তখন হয়ত একটা দুইটা উইকেট ধসে পড়েছে ওই চাপটা ধরতে পারব। বড় টুর্নামেন্ট জিতলে পরে এই চাপ  হেন্ডেল করা সহজ হয়। খুব কঠিন কিন্তু অসম্ভব বলব না।

 

সামর্থ্য নিয়ে ভাবনা...

সামর্থ্য নিয়ে আমার কোনো প্রশ্ন নাই। প্রশ্ন হলো আমরা ৩২০ বা ৩৩০ করতে পারি কি না; কিন্তু আমরা হয়তো খুব বেশিবার তা করে দেখাতে পারিনি। কিন্তু মানসিকভাবে যদি একটু শক্ত থাকি, তাহলে তা করে দেখানো সম্ভব বলে আমি মনে করি।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর