বিশ্বকাপ ফাইনাল নাটকীয়তার চরম সীমা ছাড়িয়ে শেষ হওয়ার পর ক্রিস ওকস সান্ত্বনার হাত বুলিয়ে দিলেন কিউই ব্যাটসম্যান মার্টিন গাপটিলের মাথায়। ম্যান অব দ্য ফাইনাল বেন স্টোকস দুঃখ প্রকাশ করলেন কেন উইলিয়ামসনের কাছে। এমনি আরও কত কী যে ছুটে গেল নিউজিল্যান্ডের দিকে! বিশ্বকাপের ফাইনাল যে এমনও হতে পারে, তা কে ভেবেছিল! সেই শুরু থেকেই ফাইনাল মোটামুটি একপেশে হয়েছে। ১৯৮৭ আর ২০১১ সালে কিছুটা লড়াই হয়েছিল। তবুও সেখানে একটা নির্দিষ্ট দলের জয়, রান অথবা উইকেটে প্রকাশ করা গেছে। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ইংল্যান্ডের অতি নাটুকে জয়টাকে কোনোভাবেই এক কথায় প্রকাশ করা যাবে না। সুপার ওভারে জয় বলার সাধ্যও তো নেই! দুই ইনিংস পর নিউজিল্যান্ড ২৪১ ও ইংল্যান্ড ২৪১। সুপার ওভারের পর ইংল্যান্ড ১৫ ও নিউজিল্যান্ড ১৫। এই ম্যাচের বর্ণনায় কবি হয়তো মহাকাব্য রচনা করতে পারেন। সেখানে ইংল্যান্ডের চেয়ে নিউজিল্যান্ডের মহিমাই হয়তো বর্ণিত হবে অধিক হারে। ইতিহাস কেবল বিজয়ীর পক্ষেই লেখা হয়, এ কথা এই ম্যাচের ক্ষেত্রে অন্তত চলবে না। নিউজিল্যান্ডের কেন উইলিয়ামসন, রস টেলর, নিশাম, ফার্গুসন, ট্রেন্ট বোল্টসহ আরও যারা আছে তাদের নিয়ে বিশ্বকাপের আগেও খুব একটা আলোচনা হয়নি। ফেবারিটের তালিকায় ইংল্যান্ডের পাশাপাশি নাম ছিল অস্ট্রেলিয়া আর ভারতের। বলতে গেলে রেসের কালো ঘোড়া ছিল কিউইরা। সেই দলটাই এবারের বিশ্বকাপে ফাইনাল খেলল। গতবারের মতো। অবশ্য হারটা হলো প্রশ্নবিদ্ধ। কিন্তু কেন উইলিয়ামসনদের খেলোয়াড়ি মানসিকতার প্রশংসা করে শেষ করা যাবে না। প্রতিটা মুহূর্তে তারা লড়াই করেছে। প্রমাণ দিয়েছে, এটা সত্যিকার অর্থেই একটা খেলা। এখানে যুদ্ধজয়ের মতো ব্যাপার থাকলেও এটা যুদ্ধ নয়। এ কারণেই নিউজিল্যান্ড জয় করে নিয়েছে কোটি কোটি ক্রিকেটপ্রেমীর হৃদয়। এ কারণেই অনেকে দাবি তুলছে নম্র-ভদ্র দেশটার প্রতি বড় অন্যায় করেছে ক্রিকেট অভিভাবকরা। ফাইনালটা জিততে পারেনি নিউজিল্যান্ড। ট্রফিটা হাতে তুলতে পারেনি। কিন্তু আর সবই পেয়েছে। কেন উইলিয়ামসনকে টুর্নামেন্ট সেরার পুরস্কারে ভূষিত করে আইসিসিও যেন এক প্রকারের দুঃখ প্রকাশ করল।